ঠিকমতো হিজাব ও শালীন পোশাক না পরার কারণে ইরানের ইসলামিক আজাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে। এর প্রতিবাদে ওই তরুণী নিজের শরীরের কাপড় খুলে প্রকাশ্যে সবার সামনে হেঁটে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
বার্তা সংস্থা এএফপি রোববার (৩ নভেম্বর) জানিয়েছে, গতকাল একাই এমন অভিনব প্রতিবাদ জানান ওই তরুণী। এরপরই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, তিনি শুধুমাত্র তার অন্তর্বাস পরে আছেন। প্রথমে একটি কংক্রিটের স্তম্ভের ওপর তাকে বসে থাকতে দেখা যায়। ওই সময় তিনি বেশ নির্বিকার ছিলেন। এরপর তিনি হাঁটা শুরু করেন।
ইরানের বাইরে থেকে পরিচালিত একাধিক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ওই তরুণীকে আধাসামরিক বাহিনী বাসিজেরদ সদস্যরা হয়রানি করেন। তারা তার হিজাব এবং কাপড় ছিঁড়ে ফেলেন। এর প্রতিবাদে তিনি শরীরের সব পোশাক খুলে ফেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে এসে বসেন। এরপর হাঁটতে হাঁটতে রাস্তা পার হন।
ইরানের আইন অনুযায়ী সব নারীকে মাথায় স্কার্ফ এবং ঢিলেঢালা পোশাক পরতে হয়।
ভিডিওটি পাশের একটি ভবন থেকে কেউ একজন ধারণ করেন। ওই সময় অনেককে হাসতে দেখা যায়। আরেকটি ভিডিওতে দেখা গেছে, সাদা পোশাকের কিছু লোক জোরপূর্বক তাকে একটি গাড়িতে তুলে নিয়ে যাচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে তারা গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য। গ্রেপ্তারের পর তরুণীকে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
ইরানের রক্ষণশীল সংবাদমাধ্যম ফার্স নিউজ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছে। তারা শিক্ষার্থীর একটি ছবি প্রকাশ করেছে। কিন্তু এটি ঘোলা করে দেওয়া হয়েছে।
ফার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “ওই শিক্ষার্থী অশালীন পোশাক পরে ক্লাসে এসেছিলেন। গার্ডরা তাকে ড্রেস কোড মানার আহ্বান জানানোর পর তিনি তার পোশাক খুলে ফেলেন।”
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে সংবাদমাধ্যমটি আরও জানিয়েছে, নিরাপত্তারক্ষীরা ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে শান্তভাবে কথা বলেছেন। তার হিজাব ও পোশাক ছিঁড়ে ফেলার যে অভিযোগ উঠেছে সেটি সত্য নয় বলে দাবি করেছে ফার্স নিউজ।
২০২২ সালে মাহসা আমিনী নামের এক তরুণী হিজাব পরা নিয়ে নৈতিকতা পুলিশের হেফাজতে নিহত হন। এরপর এ নিয়ে ইরানে ব্যাপক বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। ওই বিক্ষোভে পাঁচ শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়।
সূত্র: এএফপি