পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ এভারেস্টের হিমবাহ মানবসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে গলে যাচ্ছে। যতটা সময় নিয়ে হিমবাহ তৈরি হয়, তার চেয়ে ৮০ গুণ দ্রুততার সঙ্গে এটি গলছে। এর মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু এলাকাতেও পৌঁছে গেছে বলে একটি নতুন গবেষণায় উঠে এসেছে।
ওই গবেষণাপত্রের বরাতে সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এভারেস্ট চূড়ায় এভাবে হিমবাহ গলে যাওয়া বড় ধরনের বিপর্যয়ের সংকেত। বিশ্বের ১৬০ কোটি মানুষের খাবার পানি, সেচের পানি, জলবিদ্যুত উৎপাদনের স্রোত- সব ওই হিমবাহ গলা পানি থেকেই আসে।
গবেষণায় বলা হয়েছে, এভারেস্টের হিমবাহ তুষার দ্বারা সুরক্ষিত থাকে। এই হিমবাহ গঠিত হতে লাগে কয়েক দশক। কিন্তু বরফ আলগা হয়ে পড়ায় সেই হিমবাহ প্রতিবছর গলছে দ্রুত হারে। এভারেস্টে হিমবাহ গঠিত হতে কমবেশি ২ হাজার বছর লাগে। কিন্তু সেটা গলতে লাগছে ২৫ বছর।
গবেষণায় নেতৃত্বদানকারী ইউনিভার্সিটি অব মেইনের ক্লাইমেট চেঞ্জ ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক পল মায়েস্কি বলেন, এভারেস্টের সর্বোচ্চ হিমবাহটি এর ভারসাম্য রক্ষায় রক্ষাকর্তা হিসেবে কাজ করে। এখন দেখা যাচ্ছে, পৃথিবীর ছাদেও মনুষ্যসৃষ্ট উষ্ণতার প্রভাব পড়েছে।
গবেষণাটি ২৬ হাজার ৩০০ ফুটের বেশি উঁচু হিমবাহের ওপর ভিত্তি করে করা হয়েছে। গবেষণায় তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে সারা বিশ্বের জনজীবনের ওপর প্রভাবের বিষয়টি নতুন করে আলোকপাত করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ১৯৯০-এর দশক থেকে পৃথিবীর সর্বোচ্চ হিমবাহের ওপর মানবসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সুস্পষ্টভাবে পরিলক্ষিত হয়েছে। এর ফলে তুষারধসের ঝুঁকি বেড়ে গেছে। প্রতিবছর প্রায় ৮০০ পর্বতারোহীর এভারেস্টে ওঠার বিষয়টিকে বিপদের মুখে ঠেলে দিয়েছে।
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে পৃথিবীর অন্যান্য উঁচু পর্বতের হিমবাহের অবস্থা কী হতে পারে বা হচ্ছে, সেই বিষয়টিকে ইঙ্গিত করছে মাউন্ট এভারেস্টের হিমবাহের ওই গবেষণার ফল।
পি এস/এন আই