পদ্মায় স্রোত বেড়ে যাওয়ায় ফেরি চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে জানিয়ে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, স্রোত না কমা পর্যন্ত শিমুলিয়া-বাংলাবাজার রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ থাকবে।
বুধবার সচিবালয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত না হলে আগামী ১০ দিনের মধ্যে চ্যানেলে পানি প্রবাহ কমে আসতে পারে। তখন ফেরি চালু করা যাবে।”
মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ও মাদারীপুরের বাংলাবাজারের মধ্যে এই ফেরি পথ ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণের জেলাগুলোর সরাসরি সড়ক যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ যোগসূত্র।
এই নৌপথ বন্ধ থাকলে ঘুরপথে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ও রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাট হয়ে ফেরি পারাপার হতে হয়।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতিতে ফেরিতে শিমুলিয়া থেকে বাংলাবাজার যাওয়ায় অসুবিধা নেই, কিন্তু ফেরাটা খুব সমস্যা। ঝুঁকিটা আমরা নিতে চাচ্ছি না।”
তিনি বলেন, আগে স্রোতের মধ্যে যখন ফেরিগুলো চলত, তখন পদ্মা সেতুর স্প্যানগুলো ছিল না।
“এখন একটি নির্দিষ্ট ‘পকেটের মধ্য দিয়ে’ ফেরিগুলো চালাতে হয়, কারণ সব স্প্যান বসে গেছে, পদ্মা সেতুর কাজ প্রায় শেষ। এমন অবস্থায় যখন স্রোতের ঘূর্ণী শুরু হয়, তখন ফেরি নিয়ন্ত্রণ করাটা কঠিন হয়ে যায়।”
গত জুলাই মাস থেকে এই নৌপথে চলাচলের সময় অন্তত চারবার পদ্মা সেতুর পিয়ারে গিয়ে ধাক্কা খেয়েছে ফেরি। সেসব ঘটনায় ফেরির মাস্টার ও সুকানিদের বরখাস্ত করা হয়েছে, তদন্তে তাদের ‘অবহেলাকেই’ দায়ী করা হয়েছে।
বার বার এমন ঘটনা ‘পরিকল্পিত’ কি না, সে প্রশ্নও তুলছেন সরকারের কেউ কেউ। নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী নিজেও অগাস্টের শেষে ‘গভীর ষড়যন্ত্র’হচ্ছে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেন।
বুধবার তিনি এ বিষয়ে সাংবাদিকদের বলেন, “পদ্মা সেতু এমন একটি ‘সেনসেটিভ’ জায়গায় চলে গেছে যে, বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষ সব থেকে আপন স্থাপনা মনে করে পদ্মা সেতুকে।”
পদ্মা সেতুতে বার বার ফেরির ধাক্কার কারণেই কর্তৃপক্ষ দুর্ঘটনা এড়াতে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখে।
ফেরি বন্ধ থাকায় মানুষের দুর্ভোগ ও কষ্ট হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, “পাটুরিয়া ও দৌলতদিয়া দিয়ে যেতে হচ্ছে। পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া, আলুবাজার-হরিণা, আরিচা-কাজিরহাট রুটে ফেরি সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।”
ঢাকায় ভারতের ডেপুটি হাই কমিশনার বিনয় জর্জ এদিন নৌ প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে তার দপ্তরে সাক্ষাত করেন।
বৈঠকে বিভিন্ন স্থলবন্দর এবং চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহার, সেগুলোর সুযোগ সুবিধা বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা হয় বলে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।