মানব পাচারকারী চক্রের চোখ ফাঁকি দিয়ে সুকৌশলে ভারত থেকে পালিয়ে আসা সেই স্ত্রীর মামলায় টিকটকার স্বামী সোহেল মিয়াকে (২৭) গ্রেফতার করেছে র্যাব।
মঙ্গলবার (২৪ মে) সকাল ১০টার দিকে মৌলভীবাজার জেলা সদর এলাকা থেকে র্যাব-৯ এর ক্রাইম প্রিভেনশন কোম্পানি-১ হবিগঞ্জ ক্যাম্পের একটি দল তাকে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতার সোহেল হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার বেতারপুর গ্রামের কিবরিয়া মিয়ার ছেলে।
র্যাব-৯ এর হবিগঞ্জ ক্যাম্পের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মোহাম্মদ নাহিদ হাসান মঙ্গলবার দুপুরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান।
মোহাম্মদ নাহিদ হাসান জানান, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও টিকটকের মাধ্যমে সোহেল মিয়ার (২৭) সঙ্গে প্রায় তিন বছর আগে পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার এক তরুণীর (২২) পরিচয় হয়। সেই পরিচয়ের সুবাদে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সোহেল এই সুযোগে সাতক্ষীরার সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতের একটি শহরে নিয়ে যায় ওই তরুণীকে। সেখানে তাকে অসামাজিক কাজে বাধ্য করা হয়। সেখানে প্রায় আট মাস কাটানোর পর ওই তরুণী একজনের সহযোগিতায় পালিয়ে পাবনায় নিজেদের বাড়িতে চলে আসেন। কিছুদিন পর সোহেলও ভারত থেকে ওই তরুণীর বাড়িতে চলে আসে। পরে বিভিন্ন প্রলোভনে মেয়েটিকে এবছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি বিয়ে করে।
পরে সোহেল তাকে নিজেদের হবিগঞ্জের বাড়িতে নিয়ে আসেন। সেখানে কিছুদিন অবস্থানের পর আবারও পাচারকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে গত ১৩ মে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম ইউনিয়নে পাচারকারী চক্রের সদস্যদের হাতে তুলে দেন। ওই তরুণী বুঝতে পারেন স্বামী সোহেল তাকে এবার পাচারকারীদের নিকট বিক্রি করে দিয়েছে। পরবর্তীতে ওই তরুণী ভারত থেকে সুকৌশলে পালিয়ে গত ১৫ মে বাংলাদেশে চলে আসেন।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী তরুণী ২১ মে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম থানায় মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে সোহেলকে প্রধান আসামি করে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ওই রাতেই পুলিশ অভিযান চালিয়ে পাচারকারী চক্রের সদস্য এক নারীসহ তিনজনকে গ্রেফতার করে। পরের দিন ২২ মে গ্রেফতারদের কোর্টে সোপর্দ করলে বিজ্ঞ আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর না করে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। ওই দিন পুলিশের তত্ত্বাবধানে মেয়েটির লালমনিরহাট সিভিল সার্জন অফিসে ডাক্তারি পরীক্ষা শেষে পাটগ্রাম থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরে ২৩ মে তাকে পাঠানো হয় তার গ্রামের বাড়ি পাবনায় পাঠানো হয়।
এ মামলার সূত্র ধরেই মঙ্গলবার র্যাব মেয়েটির স্বামী টিকটক সোহেল মিয়াকে গ্রেফতার করে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে লেফটেন্যান্ট মোহাম্মদ নাহিদ হাসান বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মামলার প্রধান আসামি সোহেল তার কৃতকর্মের বিষয়টি স্বীকার করেন। আসামি সোহেলকে পাটগ্রাম থানায় হস্তান্তর করার প্রক্রিয়া চলছে।
পিএসএন/এমঅাই