বাবর আজম ও হাসিবুল্লাহ খানের জুটিতে ভালো শুরুর পর পথ হারিয়ে ফেলল পাকিস্তান। বোলারদের সম্মিলিত চেষ্টায় তাদেরকে অল্পতে আটকে রাখল অস্ট্রেলিয়া। পরে রান তাড়ায় তাণ্ডব চালালেন মার্কাস স্টয়নিস। তার বিস্ফোরক ইনিংসে বিশাল জয় পেল স্বাগতিকরা।
হোবার্টে তিন ম্যাচ সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে অস্ট্রেলিয়ার জয় ৭ উইকেটে। স্টয়নিস ঝড়ে প্রতিপক্ষের ১১৭ রান তারা পেরিয়ে যায় স্রেফ ১১.২ ওভারে।টি-টোয়েন্টিতে কোনো সিরিজে এই প্রথম পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করতে পারল অস্ট্রেলিয়া। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজটি অবশ্য তারা হেরেছিল ২-১ ব্যবধানে।
অস্ট্রেলিয়ার জার্সিতে পঞ্চম টি-টোয়েন্টি ফিফটি করে স্টয়নিস দলের জয় সঙ্গে নিয়ে মাঠ ছাড়েন। পাঁচটি করে ছক্কা ও চারে ২৭ বলে ৬১ রানের খুনে ইনিংস খেলে জিতে নেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার।অবদান কম নয় ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে ২১ রানে ৩ উইকেট নেওয়া অ্যারন হার্ডি ও ১১ রান দিয়ে দুই শিকার ধরা অ্যাডাম জ্যাম্পারও।
এই ম্যাচে দুই উইকেট নেওয়া পেসার স্পেন্সার জনসন তিন ম্যাচে মোট ৮ উইকেট নিয়ে জেতেন সিরিজ সেরার পুরস্কার। দ্বিপাক্ষিক টি-টোয়েন্টি সিরিজে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে যৌথভাবে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি তিনি; আগে এই কীর্তি আছে অ্যাশটন অ্যাগার (দুইবার), জশ হেইজেলউড (দুইবার), মিচেল মার্শ, কেন রিচার্ডসন ও শন অ্যাবটের।
এই ম্যাচে নতুন অধিনায়ক মোহাম্মদ রিজওয়ানকে বিশ্রাম দেয় পাকিস্তান। সালমান আলি আগার নেতৃত্বে টস জিতে ব্যাটিং নিয়ে শুরুতে সাহিবজাদা ফারহানকে হারায় দলটি। সেই ধাক্কা কাটিয়ে ওঠে তারা বাবর ও হাসিবুল্লাহর ব্যাটে।এই দুইজনের নৈপুণ্যে পাওয়ার প্লেতে ৫৮ রান তোলে পাকিস্তান, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম ৬ ওভারে যা তাদের সর্বোচ্চ।হাসিবুল্লাহকে ফিরিয়ে জমে যাওয়া ৪৪ রানের জুটি আক্রমণে এসেই ভেঙে দেন জ্যাম্পা। এরপর টপাটপ পড়তে থাকে উইকেট। ৪টি চারে ২৮ বলে ৪১ রান করা বাবরও লেগ স্পিনার জ্যাম্পার শিকার।
এই ইনিংসেই আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে বেশি রানের তালিকায় ভিরাট কোহলিকে (চার হাজার ১৮৮) ছাড়িয়ে দুইয়ে এখন বাবর (চার হাজার ১৯০)। শীর্ষে আছেন রোহিত শার্মা, তার রান চার হাজার ২৩১। তালিকায় শীর্ষে ওঠাও বাবরের জন্য এখন কেবলই সময়ের ব্যাপার। কারণ কোহলি ও রোহিত এই সংস্করণ থেকে বিদায় নিয়েছেন।
বাবর ছাড়া পাকিস্তানের ইনিংসে ২৫ রানও করতে পারেননি আর কেউ। দুই অঙ্কই ছুঁতে পেরেছেন সব মিলিয়ে চার জন।লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা ভালো হয়নি অস্ট্রেলিয়ারও, তৃতীয় ওভারে হারায় তারা ম্যাথু শর্টকে। ৪টি চারে ১৮ রান করা জেইক ফ্রেজার-ম্যাকগার্ককে ফিরিয়ে অভিষেকে উইকেটের স্বাদ পান জাহানবাদ খান।দ্রুত ২ উইকেট হারানো দলকে এরপর টানেন জশ ইংলিস ও স্টয়নিস। শুরুতে একটু রয়েসয়ে খেলা স্টয়নিস প্রথম ১৪ বলে করেন ১৬ রান। নবম ওভারে হারিস রউফের ওপর ঝড় বইয়ে দেন তিনি। দুটি করে চার-ছক্কায় ওই ওভার থেকে আসে ২২ রান। দুই ছক্কার একটিতে বল গ্যালারির ছাদে ফেলেন স্টয়নিস।
৪টি চারে ২৭ রান করা ইংলিসকে ফিরিয়ে ৫৬ রানের জুটি ভাঙেন আব্বাস আফ্রিদি। এরপর টিম ডেভিডকে নিয়ে বাকি পথ পাড়ি দেন স্টয়নিস।শাহিন শাহ আফ্রিদির করা একাদশ ওভারে দুই ছক্কা ও এক চার মারেন স্টয়নিস, দ্বিতীয় ছক্কায় ২৩ বলে পা রাখেন ফিফটিতে। ওই ওভারে ডেভিড মারেন একটি ছক্কা। আব্বাসকে ছক্কায় স্টয়নিস ওড়ানোর পর, ওভারের তৃতীয় বলটি বিমারের ফলে ‘নো বল’ হওয়ায় জিতে যায় অস্ট্রেলিয়া।