রাষ্ট্র দ্রোহিতার অভিযোগে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেপ্তার এবং ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিবেশী দুই দেশে পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়েছে। এরই মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়িতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের বিরোধিতা করে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিরোধী পোস্টার সাঁটানো হয়েছে। সেই পোস্টারে লেখা রয়েছে- ‘এই ছবিতে থুতু ফেলুন এবং আমার মুখে জুতো মারুন।’
এ বিষয়ে স্থানীয় এক যুবক বলেন, ‘বাংলাদেশে সংখ্যা লঘুদের ওপর নির্যাতন চলছে। ইউনূস সরকার তাদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশে ভারতের পতাকা অবমাননা করা হয়েছে। এ অবস্থায় বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়েছে এমন কাজ করছি।’
এর আগে সোমবার দুপুরে ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। এ সময় বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা টেনে হিঁচড়ে ছিঁড়ে ফেলা হয়।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের ছড়ানো গুজবের জেরে বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে এ হামলা চালানো হয় বলে কলকাতা টোয়েন্টি ফোর সেভেনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হিন্দুত্ববাদীরা এ হামলা চালিয়েছে।
এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বিবৃতিতে বলা হয়, আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশন প্রাঙ্গণে ভাঙচুরের ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। কোনো অবস্থাতেই কূটনৈতিক এবং কনস্যুলার সম্পত্তি লক্ষ্যবস্তু করা উচিত নয়।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, এমন অবস্থায় নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশন এবং ভারতে অবস্থিত বাংলাদেশের অন্যান্য ডেপুটি/সহকারী হাইকমিশনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার জন্য সরকার ব্যবস্থা নিচ্ছে।
এদিকে ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা এবং দেশের কয়েকটি সীমান্তে ভারতীয় উগ্রবাদীদের হামলার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। মিছিলের নেতৃত্ব দিয়েছেন হিন্দু ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীরা।
সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে তারা হল থেকে মিছিল নিয়ে রাজু ভাস্কর্যে গিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশে যোগ দেন। এ সময় তারা ‘ভারতীয় আগ্রাসন রুখে দাও জনতা’, ‘জেগেছে রে জেগেছে, জগন্নাথ হল জেগেছে’, ‘সীমান্তে হামলা জগন্নাথ হল মানবে না’ প্রভৃতি স্লোগান দেন।
তখন রাজু ভাস্কর্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীবৃন্দ ব্যানারে আগরতলায় সহকারী হাইকমিশনে হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল পরবর্তী সমাবেশ চলছিল। শিক্ষার্থীরা জগন্নাথ হলের সহপাঠীদের স্বাগত জানান।
এ সময় জগন্নাথ হলের ছাত্র জয় পাল বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশী এটা আমাদের পরিচয়৷ ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে আমরা সবাই বাংলাদেশী। বিভিন্ন সময় বাংলাদেশকে নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। সকলের একটাই পরিচয় সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে আমরা এক। যেভাবে ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনে হামলা হয়েছে, প্রত্যেক নাগরিকদের এতে প্রতিবাদ জানাতে হবে। বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আমরা একতাবদ্ধ থাকব।