কয়লা সংকটে একমাস বন্ধ থাকার পর বুধবার পুনরায় উৎপাদন শুরু হয় বাগেরহাটের রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে। তবে বর্তমানে যে পরিমাণ কয়লা মজুদ আছে এবং আমদানির পাইপলাইনে রয়েছে তা দিয়ে আগামী এপ্রিল পর্যন্ত কেন্দ্রটিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাবে। এরমধ্যে এলসি (ঋণপত্র খোলা) নিয়ে জটিলতার অবসান না হলে কয়লা আমদানি সম্ভব হবে না। এতে এপ্রিলের পর ফের কেন্দ্রটির উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
বৃহস্পতিবার রামপাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রকল্প অফিসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব তথ্য জানান প্রকল্প পরিচালক সুভাস চন্দ্র পান্ডে।
কয়লা খালাসের জেটির সক্ষমতা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রকল্প পরিচালক বলেন, জেটির সক্ষমতা নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। এখন জেটি থেকে দৈনিক আনলোড করার সক্ষমতা রয়েছে ১২ হাজার টন, কিন্তু একটি ইউনিটে কয়লার প্রয়োজন হচ্ছে চার থেকে সাড়ে চার হাজার টন। জুনে দ্বিতীয় ইউনিট চালু হলে দুই ইউনিটে দৈনিক কয়লার প্রয়োজন হবে ৯ হাজার টন।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে কয়লার দাম বেড়ে যাওয়ায় বিদ্যুৎকেন্দ্রটি থেকে বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ পড়ছে প্রতি ইউনিট ১৩ থেকে ১৪ টাকা। কয়লার দাম কমে আসলে উৎপাদন খরচও কমে আসবে। প্রকল্প পরিচালক জানান, বিদ্যুৎকেন্দ্রের সামগ্রিক কাজের অগ্রগতি ৮৩ শতাংশ।
বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ বিনিয়োগে এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের দুই ইউনিটের বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বাগেরহাটের রামপালে নির্মিত হয়েছে। কেন্দ্রটির ৬৬০ মেগাওয়াটের প্রথম ইউনিট গত ১৫ আগস্ট পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু করে। গত ১৭ ডিসেম্বর রাত থেকে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়। এলসি জটিলতায় আমদানি ব্যাহত হওয়ায় কয়লা সংকটে গত ১৪ জানুয়ারি সকাল ৯টার দিকে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। কেন্দ্রটিতে কয়লা মজুদের সক্ষমতা রয়েছে তিন মাসের।
কেন্দ্রটির পরিচালনা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানির (বিআইএফপিসিএল) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত ৯ ফেব্র“য়ারি একটি জাহাজ ৩০ হাজার মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে বিদ্যুৎকেন্দ্রের জেটিতে ভিড়েছে। আগামী ১৮ ফেব্র“য়ারি ৫৫ হাজার মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে আরেকটি জাহাজ এসে পৌঁছানোর কথা রয়েছে। কয়লা আসার পর বুধবার রাত ১১টায় পুনরায় উৎপাদন শুরু হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে কেন্দ্রটি থেকে প্রায় ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ গ্রিডে সরবরাহ করা হয়। পর্যায়ক্রমে উৎপাদন আরও বাড়বে।