ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প পশ্চিমা সামরিক জোট নেটো থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নিলে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউরোপকে ধ্বংস করে দিতে পারেন।
মার্কিন পডকাস্টার লেক্স ফ্রাইডম্যানকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জেলেনস্কি এই সতর্কবার্তা দিয়েছেন বলে জানিয়েছে নিউজউইক।
ইউক্রেইন যুদ্ধ বন্ধে ট্রাম্প হয়ত ভিন্ন কিছু করবেন বলে জেলেনস্কি সাক্ষাৎকারে আশা প্রকাশ করেন। তবে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা ছাড়া ‘সবকিছু ধ্বংস’ করে দেবেন রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন।
ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদের প্রেসিডেন্সির আমলে নেটোর সমালোচনা করেছিলেন। সে সময় তিনি ব্যক্তিগতভাবে নেটো থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেওয়ার ইচ্ছার কথা জানিয়েছিলেন। ২০ জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে নতুন করে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় বসতে চলেছেন ট্রাম্প।
তার আগে দিয়ে জেলেনস্কি নেটো থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বের হয়ে যাওয়ার বিপদ সম্পর্কে এই সতর্কবার্তা দিলেন। পুতিনকে ভবিষ্যতে আগ্রাসন থেকে নিবৃত্ত করতে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা যে গুরুত্বপূর্ণ এবং এর জন্য নেটো জোটে তাদের থাকা জরুরি সেটিই মূলত স্পষ্ট করলেন জেলেনস্কি।
সাক্ষাৎকারে জেলেনস্কি আরও বলেন, রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ বন্ধে ইউক্রেইনের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা পাওয়া প্রয়োজন। যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা থাকাটাও ইউক্রেইনের জন্য জরুরি উল্লেখ করে তিনি বলেন, অন্যথায় পুতিন ফিরে এসে কেবল ইউক্রেইনের বিরুদ্ধেই লড়বেন।
“তিনি চারপাশের সবকিছু ধ্বংস করে দেবেন। আর আপনি যদি বলেন ভাবি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নেটো থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নেবেন সেই ঝুঁকি আছে। এই সিদ্ধান্ত নেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের বিষয়। আর তা যদি ঘটে তাহলে আমি বলব, পুতিন ইউরোপকে ধ্বংস করে দেবেন”, বলেন জেলেনস্কি।
ট্রাম্প গতবছর ডিসেম্বরে এনবিসি নিউজকে বলেছিলেন, “নেটো দেশগুলো যদি তাদের বিল পরিশোধ করে, আর আমি যদি মনে করি তারা আমাদের সঙ্গে ন্যায্য আচরণ করছে, তাহলে আমি নেটোর সঙ্গে থাকব।”
পশ্চিমা সামরিক জোট নেটো নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই নাখোশ ট্রাম্প। গত বছর এক বিতর্কিত মন্তব্যে তিনি বলেছিলেন, নেটোর যে সব দেশ আর্থিক দায়বদ্ধতা পালন করছে না, তাদের ওপর হামলা চালানোর জন্য তিনি রাশিয়াকে উৎসাহিত করবেন। তার এই মন্তব্যর তীব্র নিন্দা-সমালোচনা হয়েছিল।
নেটো চুক্তিতে বলা হয়েছে, প্রতিটি সদস্য দেশ তাদের জিডিপি-র দুই শতাংশ প্রতিরক্ষাখাতে খরচ করবে। কিন্তু অধিকাংশ দেশই এই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করে না বা করতে পারে না।