একটা ছোট পরিসংখ্যান দেয়া যাক শুরুতেই। স্প্যানিশ মিডফিল্ডার রদ্রিকে ছাড়া মাঠে নেমেছে এমন ৩১ শতাংশ ম্যাচই হেরেছে ম্যানচেস্টার সিটি। আর রদ্রি থাকা অবস্থায় শেষ ৭৬ ম্যাচের মধ্যে মাত্র ১ ম্যাচ হারতে হয়েছে তাদের। পেপ গার্দিওলার ম্যানচেস্টার সিটির জন্য রদ্রি ঠিক কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেটা খুব সহজেই বোঝা যায় এই দুই লাইন থেকেই। যদিও সেই তারকাকেই চলতি মৌসুমে আর পাচ্ছে না তারা।
২০২৪-২৫ মৌসুমের বাকি সময়ের জন্য তার মাঠের বাইরে ছিটকে পড়ার কথা জানিয়েছে স্পেনের সংবাদমাধ্যম। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে গত রোববার আর্সেনালের বিপক্ষে সিটির ২-২ গোলে ড্র ম্যাচে খোঁড়াতে খোঁড়াতে মাঠ ছাড়েন রদ্রি। এসপিএন ও মার্কা জানিয়েছে, পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর রদ্রির এসিএল চোট ধরা পড়েছে।গত সপ্তাহে রদ্রি সতর্ক করে বলেছিলেন, ঠাসা সূচিতে খেলোয়াড়েরা ধর্মঘটে যেতে পারে। গত মৌসুমে সিটি ও স্পেনের হয়ে মোট ৬৩ ম্যাচ খেলেন ২৮ বছর বয়সী রদ্রি, সময়ের হিসাবে যা ৫০০০ মিনিটের বেশি। কিন্তু এরপরেই তাকে পড়তে হয়েছে চোটে। এর আগে ইউরো ফাইনালও পুরো খেলতে পারননি এই তারকা।
এসিএল কি?
এসিএল এর পূর্ণরূপ থেকেই জানা যায় এটি একপ্রকার লিগামেন্ট। লিগামেন্টের কাজ হল দুই বা আরও বেশি হাড়ে মধ্যে সংযোগ স্থাপন করা। একইসঙ্গে এটি হাড়ের বিভিন্ন নড়ন-চড়নের কাজেও বড় রকমের ভূমিকা রাখে।
দেহের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এক সংযোগ ‘নি (knee) জয়েন্ট’ বা হাঁটুর জোড়া। এই এক জোড়ার মাঝেই আছে ৩ টি হাড়। থাইয়ের ফিমার, পায়ের টিবিয়া এবং হাঁটুর সামনের অংশে ঢাকনার মত প্যাটেলা যুক্ত থাকে এখানে। আর এর সবই সংযুক্ত থাকে অ্যান্টেরিওর ক্রুশিয়েট লিগামেন্ট এর মাধ্যমে। যাকে সংক্ষেপে বলা হয় ‘এসিএল।’
নি জয়েন্টে লিগামেন্ট থাকায় তাই হাঁটু সবসময়ই সুরক্ষিত থাকে। কিন্তু ধারণক্ষমতার বাইরে অর্থাৎ পা বেশি সংকুচিত বা প্রসারিত করলে সেই চাপ পড়ে হাঁটুতে। আর তাতেই লিগামেন্ট, টেন্ডন ছিঁড়ে পা তার স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেলে।রদ্রির মাঠের বাইরে ছিটকে পড়ার খবর সিটির এবারের মৌসুমের বড় ধাক্কা হয়েই এলো। ক্লাব ও দেশের হয়ে তাঁর সর্বশেষ ৮৪ ম্যাচের মধ্যে মাত্র একটিতে হেরেছেন। এবার ব্যালন ডি’অর পুরস্কারেও রদ্রির নাম জোরেশোরে উচ্চারিত হচ্ছিল। গত মৌসুমে সিটির লিগ জয় এবং গত জুলাইয়ে স্পেনের ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ (ইউরো) জয়ে দারুণ ভূমিকা ছিল রদ্রির। এবার তাকে ছাড়া গার্দিওলা কেমন করেন তা দেখার বিষয়।