ইউরোপিয়ান লিগে খেলার প্রস্তাবটি পেয়েছিলেন নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের সময়ই। নর্থ মেসিডোনিয়ার ক্লাবের প্রস্তাবটিও গ্রহণ করতে দ্বিতীয়বার ভাবেননি সাবিনা খাতুন ও ঋতুপর্ণা চাকমা। প্রথমে জানা গিয়েছিল, এ দুই তারকার সঙ্গে তহুরা খাতুন ও মনিকা চাকমাকেও পেতে চায় মেসিডোনিয়ার ক্লাব টিভেরিজা ব্রেরা।
গতকাল শুধু সাবিনা ও ঋতুপর্ণার মেসিডোনিয়ার ক্লাবে খেলার সম্ভাবনার কথা নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে। সেই দেশের ভিসা পেতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমাও দিয়েছেন নেপাল সাফের সেরা খেলোয়াড় ঋতুপর্ণা ও বাংলাদেশ অধিনায়ক সাবিনা। এখন শুধু মেসিডোনিয়ার কাছ থেকে ইতিবাচক উত্তরের অপেক্ষা। ২০২৫ সালের ১৫ জানুয়ারির মধ্যে সাবিনা ও ঋতুপর্ণাকে চায় ক্লাব টিভেরিজা। মেসিডোনিয়া নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে ২২ ম্যাচে ৫৬ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দুই নম্বরে তারা। চ্যাম্পিয়ন হতে পারলে মেয়েদের উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলবে টিভেরিজা। এই প্রতিযোগিতাকে টার্গেট করেই সাবিনা ও ঋতুপর্ণাকে নিয়ে শক্তি বাড়াতে চায় মেসিডোনিয়ান ক্লাবটি।
বাংলাদেশে মেসিডোনিয়ার কোনো স্থায়ী দূতাবাস বা কনস্যুলেট নেই। ভারতের নয়াদিল্লিতে অবস্থিত মেসিডোনিয়ার দূতাবাস থেকে বাংলাদেশিদের ভিসা নিতে হয়। ঋতুপর্ণা ও সাবিনাকে প্রতিবেশী দেশে ভিসার জন্য যেতে হয়নি। পুরো প্রক্রিয়াটিই করছেন ইউরোপিয়ান ক্লাবটির কর্মকর্তারা।
বাংলাদেশের দুই নারী ফুটবলারকে মেসিডোনিয়ান ক্লাব টিভেরিজায় খেলানোর বিষয়টি দেখভাল করছেন নারী দলের গোলরক্ষক কোচ মাসুদ আহমেদ উজ্জ্বল। গতকাল সমকালের কাছে সাবিনা ও ঋতুপর্ণার মেসিডোনিয়ান ক্লাবে খেলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ভিসার জন্য আবেদন করার পর এখনও কোনো আপডেট পাইনি। ক্লাব থেকে মেসেজ করে জানানো হয়েছে, আপডেট থাকলে আমাকে জানাবে। সব কাগজপত্র মেসিডোনিয়ায় পাঠানো হয়েছে, তারাই প্রক্রিয়া করবে।’
বাস্তবে ইউরোপিয়ান লিগে খেলাটা বাংলাদেশের মেয়েদের জন্য অনেক কঠিনই বলা চলে। সেই কঠিন কাজকে সহজ করে এনেছেন গোলরক্ষক কোচ উজ্জ্বল। গত মৌসুমে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রে ছিলেন তিনি। সেই সময় ক্লাবটির প্রধান কোচ ছিলেন নর্থ মেসিডোনিয়ার ইয়োগোস্লাভ ত্রেনচোভস্কি। দু’জন দুই দিকে থাকলেও প্রতিদিনই হোয়াটসঅ্যাপে কথা হয় উজ্জ্বল ও ত্রেনচোভস্কির।
দু’জনের আলাপের মাধ্যমেই খুলে যায় বাংলাদেশের মেয়েদের ইউরোপে খেলার দরজা। ‘শেখ রাসেলের সাবেক কোচ আমাকে খুবই পছন্দ করেন। আমার সঙ্গে প্রতিদিনই মোটামুটি কথা হয়। তাঁকে আমাদের মেয়েদের খেলার ভিডিও পাঠাতাম। তখন তিনি এই বছর সাফের সময় আমাকে নক দিয়েছেন। তিনি ও টিভেরিজা ক্লাব প্রেসিডেন্ট মেয়েদের খেলা দেখে মুগ্ধ হয়েছেন। প্রথমে চারজনের কথা বলেছিলেন, পরে মনে হয় বাজেট কম বলে দু’জনকে নিচ্ছেন। আশা করি, সাবিনা ও ঋতুপর্ণা মেসিডোনিয়ান ক্লাবে খেলতে পারবে’– বলেন উজ্জ্বল।