মিয়ানমারের বাগো শহরে বিক্ষোভকারীদের ওপর নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে ৮০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মরদেহ সরিয়ে ফেলেছে সেনাবাহিনীর সদস্যরা। সেকারণে হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা হয়তো কখনোই জানা যাবে না।
প্রত্যক্ষদর্শীরা স্থানীয় গণমাধ্যমকে জানিয়েছে, সৈন্যরা ভারী অস্ত্র ব্যবহার করেছিল এবং এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়েছে। দেশটিতে গত ১ ফেব্রুয়ারি সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে এখন পর্যন্ত ৬শ’র বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।
ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার জন্য সামরিক বাহিনী দমন-পীড়নের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। ইয়াঙ্গুনের কাছে অবস্থিত বাগো শহরে ওই সহিংসতার শুক্রবার ঘটেছে বলে জানা গেছে। কিন্তু গণমাধ্যমের কাছে এই খবর পৌঁছাতে পুরো একদিন সময় লেগেছে। কারণ শহরের বহু বাসিন্দাকে বাধ্য হয়ে আশেপাশের গ্রামে পালিয়ে যেতে হয়েছিল।
পর্যবেক্ষণ সংস্থা অ্যাসিসটেন্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স (এএপিপি) বলছে, নিহতের প্রকৃত সংখ্যা অনেক বেশি ছিল। সংবাদ সংস্থা দ্য মিয়ানমার নাউ বিক্ষোভের আয়োজক ইয়ে হুটুটকে উদ্ধৃত করে বলেছে, ‘এটা গণহত্যার মতই। তারা প্রতিটি ছায়ার দিকে গুলি ছুড়েছে।
ফেব্রুয়ারিতে সামরিক অভ্যুত্থানের পর দেশটির সেনাবাহিনী এক বছর ব্যাপী জরুরি অবস্থা জারি করেছে। তখন থেকেই বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে রাজপথ।
সশস্ত্র বাহিনীর দাবি, গত বছরের নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপি হয়েছে যাতে দেশটির নেতা অং সান সুচি এবং তার দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি এনএলডি পুনঃনির্বাচিত হয় এবং সরকার গঠন করে। কিন্তু নির্বাচন কমিশন এই দাবি নাকচ করে আসছে।
শুক্রবার উৎখাত হওয়া সংসদ সদস্যরা এবং জাতিসংঘে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেছেন। তারা দেশটির সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা বাড়ানো এবং অস্ত্র অবরোধ বা এবং নো-ফ্লাই জোন করার মত ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানান।
জাতিসংঘে ওই বৈঠকে আরো সতর্কতা দেয়া হয় যে মিয়ানমার, ‘রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতার দ্বারপ্রান্তে’ রয়েছে। ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের ঊর্ধ্বতন উপদেষ্টা রিচার্ড হোর্সে বলেছেন, সামরিক শাসনের ফলে দেশটিতে এমন একটি পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে যে দেশটি শাসনের অযোগ্য হয়ে পড়ছে।