বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ক্রিকেটারের নাম উঠলেই সবার আগে শচীন টেন্ডুলকার, বিরাট কোহলি এবং মহেন্দ্র সিং ধোনির নাম শুনতে পাওয়া যায়। কিন্তু সবচেয়ে ধনী ক্রিকেটারদের তালিকার শীর্ষে আছেন এমন একজন, যিনি ২২ বছর বয়সেই ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন। ভারতেই এমন একজন ঘরোয়া ক্রিকেটার রয়েছেন, যিনি আজ পর্যন্ত জাতীয় ক্রিকেট দলের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেননি। এমনকি তিনি খেলেননি আইপিএল টুর্নামেন্টেও। কিন্তু, আর্থিক বৈভবে বিশ্বের আর কোনো ক্রিকেটার তার কাছাকাছিও নেই। তার নাম আর্যমান বিড়লা, ভারতের বিখ্যাত ব্যবসায়িক গোষ্ঠী আদিত্য বিড়লা গ্রুপের উত্তরাধিকারী।
১৯৯৭ সালে মুম্বাইয়ে জন্ম নেয়া আর্যমান বেড়ে উঠেছেন মধ্যপ্রদেশের রেওয়ায়। শৈশব থেকেই ক্রিকেটের প্রতি ভালোবাসা তাকে ভারতের শীর্ষস্থানীয় প্রতিযোগিতা রঞ্জি ট্রফি পর্যন্ত নিয়ে যায়। ২০১৭ সালে মধ্যপ্রদেশের হয়ে উড়িষ্যার বিপক্ষে রঞ্জি ট্রফিতে অভিষেক করেন তিনি।
২০১৮ সালে বেঙ্গলের বিপক্ষে ইডেন গার্ডেনসে খেলেন তার ক্যারিয়ারের সেরা ইনিংস ১৮৯ বলে ১০৩ রান। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৯টি ম্যাচ খেলে করেন ৪১৪ রান, যার মধ্যে একটি সেঞ্চুরি ও একটি ফিফটি রয়েছে। সব মিলিয়ে ৯টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলেন আর্যমান, ১ সেঞ্চুরি ও ১ ফিফটিসহ ২৭.৬০ গড়ে করেন ৪১৪ রান। এ ছাড়া চারটি লিস্ট ‘এ’ ম্যাচও খেলেন।
এর মধ্যে ২০১৮ সালে আইপিএলের দল রাজস্থান রয়্যালস তাকে নিলাম থেকে ৩০ লাখ রুপিতে দলে ভেড়ায়। আইপিএল দলে থাকলেও কোনো ম্যাচে নামানো হয়নি আর্যমানকে। একই বছরে চোট ও মানসিক চাপের কারণে ক্রিকেট থেকে সাময়িক বিরতিতে যান আর্যমান এবং পরে অবসরের সিদ্ধান্ত নেন।
ক্রিকেট ছেড়ে দিয়ে পুরোপুরি পারিবারিক ব্যবসায় মনোযোগ দেন আর্যমান। ২০২৩ সালে তিনি আদিত্য বিড়লা ফ্যাশন অ্যান্ড রিটেইল লিমিটেডের পরিচালক হিসেবে যোগ দেন। বর্তমানে তিনি আদিত্য বিড়লা ম্যানেজমেন্ট করপোরেশন ও গ্রাসিম ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালকের দায়িত্বেও আছেন।
তবে নিজের ক্রিকেটার পরিচয়কে যে ছড়িয়ে যেতে পেরেছেন, তাতে বেশ খুশিই ছিলেন আর্যমান, ‘একজন এসে যখন বলল, ‘তুমি সাধাসিধে মানুষ। তুমি যে বিড়লা পরিবারের ছেলে, জানতামই না।’ তখন মনে হলো নিজের পরিচয়ে একটা পরিবর্তন আনতে পেরেছি।’
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদন অনুসারে, আর্যমান বিড়লার সম্পদমূল্য আনুমানিক ৭০ হাজার কোটি রুপি। এই সম্পদমূল্যের কারণে আর্যমানকে সবচেয়ে ধনী ক্রিকেটার বলাই যায়, কারণ প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে ভারতের বর্তমান ও সাবেকদের মধ্যে আর কারও সম্পদই এর ধারেকাছে নেই।