করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ধনীদের সম্পদ বেড়ে হয়েছে দ্বিগুণ, অন্যদিকে একই মহামারি আরও বহু সংখ্যক মানুষকে দরিদ্র করেছে। নতুন এক প্রতিবেদনে আন্তর্জাতিক দাতব্য ও ত্রাণসংস্থা অক্সফাম এই তথ্য তুলে এনেছে বলে জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
সম্পদের এই বৈষম্য ও অসমতাকে ‘অর্থনৈতিক সহিংসতা’ হিসেবে উল্লেখ করে আন্তর্জাতিক এই সংস্থাটির দাবি, দরিদ্রতা, স্বাস্থ্যসেবা, লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা, ক্ষুধা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বে প্রতিদিন ২১ হাজার মানুষের মৃত্যু হচ্ছে।
কিন্তু করোনা মহামারির শুরু থেকে অর্থাৎ ২০২০ সালের মার্চ মাস থেকে বিশ্বের শীর্ষ ১০ ধনী ব্যক্তির সম্পদ বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। সুইজারল্যান্ডের দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের বৈঠকের আগে বৈশ্বিক অসমতার ওপর এই রিপোর্টটি সামনে আনলো সংস্থাটি।
এই বৈঠকে সারা বিশ্ব থেকে করপোরেট ও রাজনৈতিক নেতা, সেলিব্রেটি, অর্থনীতিবিদ ও সাংবাদিকসহ হাজারও প্রতিনিধি অংশ নিয়ে থাকেন। চলতি সপ্তাহেই অনলাইনের মাধ্যমে এই বৈঠকটি শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। বৈঠকটি সরাসরি উপস্থিত হয়ে অনুষ্ঠানের কথা থাকলেও ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ায় সেটি ভার্চ্যুয়ালি আয়োজন করা হচ্ছে।
অক্সফাম জানিয়েছে, মহামারির শুরু থেকে ধনীদের সম্পদ ৭০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে বেড়ে ১ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে। আর প্রতিদিন সম্পদ বৃদ্ধির পরিমাণ গড়ে ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার।
অন্যদিকে সম্পদ বৃদ্ধির হারে ধনীদের মধ্যেও ব্যাপক পার্থক্য রয়েছে। উদাহরণ স্বরূপ, বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনী ইলন মাস্কের সম্পদ করোনা মহামারির মধ্যে যেখানে বেড়েছে ১ হাজার শতাংশেরও বেশি, সেখানে আরেক শীর্ষ ধনী বিল গেটসের সম্পদ বেড়েছে ৩০ শতাংশ হারে।
অক্সফামের তথ্য অনুযায়ী, করোনা মহামারি বিশ্বব্যাপী ১৬০ মিলিয়ন মানুষকে দারিদ্র্যের মধ্যে নিমজ্জিত করেছে। এছাড়া অসমতা ও বৈষম্য বেড়ে যাওয়ায় জাতিগত অ-শ্বেতাঙ্গ সংখ্যালঘু এবং নারীরা দারিদ্র্যের শিকার হয়েছেন তুলনামূলক বেশি।
আর তাই বর্তমান পরিস্থিতিতে বিশ্বব্যাপী ভ্যাকসিন উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি স্বাস্থ্যসেবা, জলবায়ু পরিবর্তন এবং লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা হ্রাসে আরও অর্থায়ন বাড়িয়ে কর সংস্কারের আহ্বান জানিয়েছে অক্সফাম।
পিএসএন/এমআই