কাশ্মীরের পহেলগামে সাম্প্রতিক প্রাণঘাতী হামলার পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একের পর এক কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছে ভারত। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো ‘সিন্ধু পানি চুক্তি সাময়িকভাবে স্থগিত করার ঘোষণা’। তবে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ এ সিদ্ধান্তকে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করেছেন। খবর জিও নিউজের।
তিনি বলেছেন, ভারত একতরফাভাবে সিন্ধু চুক্তি বাতিল করতে পারে না। এটি কেবল ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার বিষয় নয়, বরং বিশ্বব্যাংকসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক পক্ষ এতে সম্পৃক্ত।
বুধবার জিও নিউজের টকশোতে অংশ নিয়ে খাজা আসিফ বলেন, ভারত যদি অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক চাপ থেকে এমন সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে পাকিস্তানও প্রয়োজন অনুযায়ী উপযুক্ত জবাব দিতে প্রস্তুত রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ভারতের এই পদক্ষেপ পাকিস্তানকে ভয় দেখানোর জন্য নেওয়া হলেও এর কূটনৈতিক ও আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া অত্যন্ত নেতিবাচক হতে পারে। আমরা ২০১৯ সালের আভিনন্দন ইস্যুতেও দেখিয়েছি, পাকিস্তান কিভাবে সংযমের সঙ্গে শক্ত প্রতিক্রিয়া জানাতে পারে।
ভারতের পদক্ষেপে ‘পাকিস্তানও উপযুক্ত জবাব দিতে প্রস্তুত’
কাশ্মীরে হামলা / এটি কি ভারতের ‘ফলস ফ্ল্যাগ’ নাটক?
ভারতের এ ধরনের সিদ্ধান্তকে তিনি ‘অযৌক্তিক এবং ঝুঁকিপূর্ণ’ বলেও আখ্যা দেন। পহেলগামের হামলাকে তিনি ‘ফলস ফ্ল্যাগ অপারেশন’ হিসেবে দেখছেন। এটি ভারতের পুরোনো একটি কৌশল, যার মাধ্যমে আভ্যন্তরীণ ব্যর্থতা ঢাকতে পাকিস্তানের ওপর দোষ চাপানো হয়।
এদিকে, আজ প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সভাপতিত্বে জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। বৈঠকে ভারতের পদক্ষেপে পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া কী হবে তা নির্ধারণ করা হবে।
অন্যদিকে, পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক ডার ভারতের পদক্ষেপকে ‘অপ্রাসঙ্গিক ও অগভীর’ আখ্যা দিয়ে বলেন, ভারতের অভিযোগের কোনো প্রমাণ নেই, শুধু দোষারোপ দিয়ে দায় এড়ানো যায় না।
তিনি আরও বলেন, পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদের শিকার—উদ্ভাবক নয়। আমাদের অভিজ্ঞতা, মানবিক ক্ষতি এবং দীর্ঘ যুদ্ধই তা প্রমাণ করে।
ভারতের নেওয়া পাঁচটি বড় পদক্ষেপ হলো—
সিন্ধু পানিচুক্তি তাৎক্ষণিকভাবে স্থগিত
আটারি-ওয়াঘা সীমান্ত বন্ধ
পাকিস্তানি নাগরিকদের ১ মে’র মধ্যে ভারতে থাকার অনুমতি বাতিল
দক্ষিণ এশিয়ার সার্ক ভিসা ছাড়ের আওতায় পাকিস্তানিদের প্রবেশ নিষিদ্ধ
দিল্লিতে নিযুক্ত পাকিস্তানি সামরিক উপদেষ্টাদের বহিষ্কার এবং পাকিস্তানের কূটনৈতিক কর্মীদের সংখ্যা ৫৫ থেকে ৩০-এ নামিয়ে আনা। একইসঙ্গে ভারত নিজ দেশের প্রতিরক্ষা কর্মকর্তাদের ইসলামাবাদ থেকে প্রত্যাহার করেছে।