রক্ষণাবেক্ষণ কাজের সময় কারিগরি ত্রুটির কারণে পাকিস্তানের দিকে একটি ক্ষেপণাস্ত্র ছুটে গিয়েছিল বলে দাবি করেছে ভারত। এ ঘটনায় গভীর দুঃখপ্রকাশের পাশাপাশি কেউ হতাহত না হওয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করেছে নয়াদিল্লি। তবে ‘চিরশত্রু’ দেশ থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ছুটে যাওয়ার ঘটনা যে পাকিস্তান সহজভাবে নেয়নি, তা বলাই বাহুল্য। এরই মধ্যে ভারতের ভারতের চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্সকে তলব করে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে ইসলামাবাদ।
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জিও নিউজের খবরে বলা হয়েছে, গত বৃহস্পতিবারই (১০ মার্চ) দেশটির আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল বাবর ইফতিখার জানিয়েছিলেন, একটি ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র পাকিস্তানের আকাশসীমায় প্রবেশ করে খানেওয়াল জেলার মিয়া চান্নু এলাকার কাছাকাছি ভূপাতিত হয়েছে। যার ফলে, আশপাশে বেশ কিছু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
‘দুর্ঘটনাক্রমে’ পাকিস্তানে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়লো বসলো ভারত
সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তানের ডিজি আইএসপিআর জানান, স্থানীয় সময় বুধবার (৯ মার্চ) সন্ধ্যা ৬টা ৪৩ মিনিটে ভারতীয় ভূখণ্ডে একটি উচ্চগতির উড়ন্ত বস্তু শনাক্ত করে পাকিস্তানি বিমান বাহিনীর আকাশ প্রতিরক্ষা পরিচালনা কেন্দ্র। বস্তুটি হঠাৎ প্রাথমিক গতিপথ পরিবর্তন করে পাকিস্তানি ভূখণ্ডের দিকে এগোতে থাকে এবং পাকিস্তানের আকাশসীমা লঙ্ঘন করে শেষপর্যন্ত সন্ধ্যা ৬টা ৫০ মিনিটে মিয়া চান্নুর কাছাকাছি আছড়ে পড়ে।
তিনি জানান, উড়ন্ত বস্তুটি বিধ্বস্ত হয়ে বেশ কিছু বেসামরিক সম্পত্তির ক্ষতিসাধন করেছে। তবে সৌভাগ্যক্রমে কেউ হতাহত হননি।
এ কর্মকর্তা বলেন, ভারতের সিরসায় উড্ডয়নস্থল থেকে শুরু করে মিয়া চান্নুর কাছে পড়ার আগপর্যন্ত উড়ন্ত বস্তুটির পুরো গতিপথে সূক্ষ্ম নজর রেখেছিল পাকিস্তানি বিমানবাহিনী। বস্তুটি ভারত-পাকিস্তান উভয়ের আকাশপথে অনেক আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ যাত্রীবাহী ফ্লাইটকে ঝুঁকিতে ফেলেছিল।
পাকিস্তানি ডিজি আইএসপিআরের ভাষ্যমতে, এটি তাদের (ভারতের) বিমান চলাচলের নিরাপত্তায় অবজ্ঞা এবং প্রযুক্তি ও পদ্ধতিগত দক্ষতার অভাবকে প্রতিফলিত করে। এটি আকাশপথে অনেক বড় বিপর্যয়ের পাশাপাশি স্থলেও প্রচুর বেসামরিক লোক হতাহতের কারণ হতে পারতো।
মেজর জেনারেল ইফতিখার বলেন, পাকিস্তান এই স্পষ্ট আকাশসীমা লঙ্ঘনের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তির বিরুদ্ধে সতর্ক করছে।
পাকিস্তানি বিমান বাহিনীর এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্রটি ভূপৃষ্ঠ থেকে ৪০ হাজার ফুট ওপর দিয়ে শব্দের চেয়ে তিনগুণ গতিতে উড়ে প্রায় ১২৪ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে পাকিস্তানের ভূখণ্ডে আঘাত করেছিল।