জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম টুয়েন্টিতে তানজিদ হাসান তামিমের অভিষেক ছাড়া আর বড় ঘটনা ছিলো দীর্ঘসময় পর সাইফুদ্দিনের ফেরা।
দুজনই উপলক্ষটা রাঙিয়েছেন দারুণ ভাবে। সাইফুদ্দিনের ৩ উইকেট শিকারের পর তানজিদের অপরাজিত ফিফটিতে প্রথম আন্তর্জাতিক
টি-টোয়েন্টিতেও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৮ উইকেটের বড় জয় দিয়ে সিরিজ শুরু করল বাংলাদেশ।
চট্টগ্রামের সাগরিকায় আজ (শুক্রবার) বৃষ্টির বাগড়া দিতে পারে সে আভাস অবশ্য আগেই মিলেছিলো। জল্পনা সত্যি করে বেরসিক বৃষ্টি বারবার বাধা দিয়েছে। যা বারবার বিঘ্ন ঘটিয়েছে পাঁচ ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে। এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে টাইগার বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে সফরকারী জিম্বাবুয়ে। এক পর্যায়ে ৪১ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে ফেলে কিন্তু ৮ম উইকেট জুটিতে ক্লাইভ মাদান্দে ও ওয়েলিংটন মাসাকাদজার ৭৫ রানের অবিশ্বাস্য জুটিতে ভর করে জিম্বাবুয়ে ১২৪ রানের সম্মানজনক পুঁজি দাঁড় করায়। অভিষিক্ত তানজিদ হাসান একাধিকবার জীবন পাওয়ার পর সর্বোচ্চ ৬৭ রানের সাথে হৃদয়ের অপরাজিত ৩৩ রানে ভর কর ১২৫ রানের লক্ষ্য বাংলাদেশ পেরিয়েছে ১৫.২ ওভারে।
জিম্বাবুয়ের দেওয়া ১২৫ রানের ছোট লক্ষ্য তাড়ায় বাংলাদেশের শুরুটা ভীতিজাগানীয়া ছিলো। ওপেনিংয়ে নেমে অধারাবাহিক লিটন দাস শুরুটা করেন এলোমেলো। ব্লেসিং মুজারাবানির করা দ্বিতীয় ওভারের গুড লেংথ ডেলিভারিটি লিটনের ব্যাট ও প্যাডের ফাঁক গলে স্টাম্প ভেঙে দেয়। ৩ বলে মাত্র ১ রানেই থামে লিটনের ইনিংস। ইনিংসের তৃতীয় ওভারের শুরুতেই বৃষ্টির হানা। ফলে আধাঘণ্টারও বেশি সময় ধরে খেলা বন্ধ থাকে। এরপর অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তকে নিয়ে ব্যাটিংয়ে নামেন তামিম। ক্রিজে এসেই একই ওভারে দু’বার ক্যাচ তোলেন তানজিদ। মুজারাবানির বলে প্রথমে পুল করতে গিয়ে বল আকাশে তুলে দেন, উইকেটরক্ষক ও বোলারের প্রতিযোগিতায় ক্যাচটি নিতে গিয়ে ফসকে যায়। একই ওভারের শেষ বলে কাভারে তানজিদের ক্যাচ ছাড়েন জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক সিকান্দার রাজাও। যার জন্য ম্যাচটিতে হার দিয়ে বড় মাশুল দিতে হলো সফরকারীদের।
জীবন পেয়ে তামিম খোলস ছেড়ে বের হন। এরপর খেলেছেন পুল শট ও কাউ-কর্নার দিয়ে ছক্কার মার। ৭.২ ওভারে বাংলাদেশ যখন ১ উইকেট হারিয়ে ৪৪ রান করেছে, তখনই ফের বৃষ্টির অনাকাঙ্ক্ষিত আগমন। এতে প্রায় ১৫ মিনিট পরে আবার খেলা শুরু হয়। এভাবে বারবার ওঠানামায় হয়তো ক্রিজে ফিরেই মনোযোগ হারান শান্তরা। টাইগার অধিনায়ক ২৪ বলে ২১ রান করে ক্যাচ দেন শন উইলিয়ামসকে। সেখান থেকে বাংলাদেশের বাকি পথটা পাড়ি দিয়েছেন তানজিদ-হৃদয় জুটি। দুজনে মিলে শেষ পর্যন্ত গড়েন ৬৯ রানের জুটি। আর তাতেই স্বাগতিকদের বড় জয় নিশ্চিত হয়ে য
৩৬ বলে অভিষিক্ত তামিম ফিফটি তুলে নেওয়ার পর, শেষ পর্যন্ত তিনি ২ ছক্কা ও ৮ চারে ৪৭ বলে ৬৭ রানে অপরাজিত থাকেন। আরেক অপরাজিত ব্যাটার হৃদয় ১৮ বলে ১ ছক্কা ও ৫ চারে ৩৩ রান করেন। জিম্বাবুয়ের হয়ে একটি করে উইকেট শিকার করেছেন মুজারাবানি ও লুক জঙ্গুিয়ে।
এর আগে প্রথম ইনিংসে মেঘলা আকাশের নিচে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে যেন শুরু হয়েছিল উইকেট-বৃষ্টি। তাসকিন সাইফুদ্দিনের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে মুহূর্তেই এলোমেলো হয়ে যায় জিম্বাবুয়ের ব্যাটিং অর্ডার। স্কোরবোর্ডে ৪১ রান যোগ করতেই ৭ উইকেট হারিয়ে নিজেদের ইতিহাসে সর্বনিম্ন রানের লজ্জায় পড়ার শঙ্কায় ছিল সফরকারীরা। কিন্তু ৮ম উইকেটে ৭৫ রানের জুটিতে ভর করে সম্মানজনক পুঁজিও দাঁড় করায় সফরকারীরা। নির্ধারিত ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১২৪ রানে থামে জিম্বাবুয়ের ইনিংস।
সফরকারীদের হয়ে সর্বোচ্চ ৩৯ বলে ৪৩ রানের ইনিংস খেলেন ক্লাইভ মাদান্দে। এছাড়া ক্যারিয়ারসেরা ইনিংসে ৩৮ বলে ৩৪ রান করেন ওয়েলিংটন মাসাকাদজা। অথচ আর কোনো ব্যাটারই এদিন ২০ রানও করতে পারেননি। চার ব্যাটার আউট হন শূন্য রানে।
স্বাগতিক টাইগারদের হয়ে তিনটি করে উইকেট শিকার করেছেন দীর্ঘদিন পর জাতীয় দলে ফেরা মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ও তাসকিন আহমেদ। এছাড়া দুটি উইকেট শিকার করেছেন শেখ মেহেদী।
এসআর/এসটি