আগামীকাল বুধবার অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন না হলে কারাগার অভিমুখে লংমার্চ করার ঘোষণা দিয়েছেন সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের নেতারা।
একই সঙ্গে বিক্ষিপ্তভাবে আন্দোলন না করে সারা দেশে সম্মিলিতভাবে আন্দোলন করে স্বেচ্ছায় কারাবরণ করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) রাতে রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দিরে সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের জরুরি সংবাদ সম্মেলনে জোটের নেতারা এসব কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের প্রতিনিধি প্রসেনজিৎ হালদার বলেন, আমরা গতকাল সোমবার যে সমাবেশ করেছি সেখানে একদল দুষ্কৃতিকারী উগ্রবাদী লোক অমানবিকভাবে হামলা করেছে। এতে সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের ৩০ জন সমর্থক আহত হয়েছেন। এ সময় ২ জন নারী সমর্থককেও লাঞ্ছিত করা হয়।
তিনি বলেন, সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী ঢাকা এসেছিলেন। পরে তিনি আবার চট্টগ্রাম যাওয়ার সময় তাকে বিমানবন্দর থেকে ডিবি পরিচয়ে তুলে আনা হয়। বিষয়টি শোনার সঙ্গে সঙ্গেই আমরা মিন্টু রোডের ডিবি কার্যালয়ে উপস্থিত হই। সেখানে উপস্থিত চিন্ময় প্রভুর সমর্থকরা ডিবি কর্মকর্তাদের কাছে গ্রেপ্তারের তথ্য জানতে চান। কিন্তু তারা কেউই এই সংক্রান্ত তথ্য ঠিকমতো দিতে পারেননি।
প্রসেনজিৎ বলেন, তখন সমর্থকরা মিছিল নিয়ে শাহবাগ এসে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ সমাবেশ আয়োজন করে। কিন্তু সমাবেশ চলমান অবস্থায় একদল উগ্রবাদী ও দুষ্কৃতিকারী হামলা করে। তারা অস্ত্র নিয়ে আন্দোলনরত সমর্থকদের ওপর হামলা চালায়। দুঃখের বিষয় হচ্ছে, পুলিশ প্রশাসনের উপস্থিতিতেই এই হামলা হয়েছে। সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী উপস্থিত ছিল। কিন্তু পুলিশের পক্ষ থেকে হামলা প্রতিরোধে তেমন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। আমরা অবিলম্বে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিতি সনাতনী জোটের আরেক নেতা বলেন, আগামীকাল চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের আবার জামিন শুনানি রয়েছে। সরকার ভেবেছে তাকে গ্রেপ্তার করলে আন্দোলন থেমে যাবে। কিন্তু চিন্ময় দাস শুধু একজন নয়, প্রতিটি সনাতনীর ঘরে ঘরে চিন্ময় প্রভু রয়েছেন। তাকে গ্রেপ্তার করে আন্দোলন থামানো যাবে না। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। এটুকু বলতে পারি যে, যদি কাল চিন্ময় প্রভুর জামিন না হয় তাহলে এই আন্দোলন বিচ্ছিন্নভাবে না করে সম্মিলিতভাবে অহিংস আন্দোলনে রূপ নেবে। প্রয়োজনে তাকে যে কারাগারে রাখা হবে আমরা সেখানে লংমার্চ করে সেই কারাগারে স্বেচ্ছায় কারাবরণ করব।
চট্টগ্রামে ঘটে যাওয়া আজকের ঘটনার বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, একটি গোষ্ঠী দেশকে অস্থিতিশীল করতে এবং বাংলাদেশে হিন্দু-মুসলিম সম্প্রীতি নষ্ট করার পাঁয়তারা করছে। তারা সনাতন সম্প্রদায়ের চলমান আন্দোলনকে ভূলুণ্ঠিত করতে চাচ্ছে। দেশের বিভিন্ন জায়গায় আমরা এটি দেখতে পেয়েছি। চট্টগ্রামে আজ বিক্ষোভ চলাকালীন সমর্থকদের ওপর গ্রেনেড, টিয়ার শেলসহ লাঠিচার্জ করা হয়েছে। এতে অনেক লোকজন আহত হয়েছেন। আমরা এই ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।