প্রতিবছর বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি নাগরিক বিদেশে চাকরি করতে যান। অনেকেই মনে করেন শ্রমিক ভিসায় কেবল বিদেশে চাকরি করতে যাওয়া যায়। অথচ, উচ্চশিক্ষায় ডিগ্রিধারী অনেকেই বিদেশে যোগ্যতা বলে চাকরি পান। এদের বেতনও অনেক। থাকে অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাও।
বাংলাদেশে যেমন একটি চাকরি পাওয়ার জন্য স্টেপ বাই স্টেপ কিছু প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হয়, ঠিক একইভাবে বাইরের দেশেও যদি আপনি চাকরি করতে চান তাহলেও আপনাকে তাদের নিয়ম অনুযায়ী স্টেপ বাই স্টেপ কিছু নিয়ম কানুন মেনে চলতে হবে।
আপনার যদি অনলাইন ভিত্তিক কাজের অভিজ্ঞতা থেকে থাকে। আপনি যদি রিমোট জব করতে চান তাহলে বাংলাদেশের অবস্থান করেও বিদেশে চাকরি করতে পারেন।
বিদেশে চাকরি পাওয়ার কৌশল
বিদেশে চাকরি পেতে হলে সর্বপ্রথম আপনার কিছু যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। এগুলো হলো-
* নিজেকে বাইরের দেশের জন্য উপযুক্ত করে তোলা।
* যে কোম্পানি বা যে পদের জন্য আপনি যোগ্য তাতে আবেদন করা।
* প্রয়োজনীয় সকল ডকুমেন্ট সংরক্ষণ করা ও তার সত্যতা যাচাই করা।
* বাইরের দেশের আবহাওয়া সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা রাখা।
* ভিন্ন ইন্টারভিউ সিস্টেমের সঙ্গে নিজেকে খাপ খাইয়ে নেওয়া।
* ভিসা এবং ওয়ার্ক পারমিট পারমিশন গ্রহণ করা।
* ভিন্ন টাইমজনের সাথে নিজেকে মানিয়ে নেওয়া।
* অর্থনীতি, সংস্কৃতি সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা রাখা।
* বিদেশিদের ভাষা বোঝার সক্ষমতা তৈরি করা।
* বাইরের দেশের আপডেটকৃত তথ্যাবলী জানা।
* চাকরির আবেদনের জন্য নিয়মিত বিদেশি চাকরির সার্কুলার প্রকাশিত ওয়েবসাইট অনুসরণ করা
* নিজের মধ্যে ক্রিয়েটিভিটি তৈরি করা এবং তা প্রতিষ্ঠানের সামনে ইন্টারভিউ ও পরীক্ষার সাহায্যে তুলে ধরার চেষ্টা করা।
* পাশাপাশি ইংরেজিতে দক্ষ হওয়া এবং বিদেশীদের নিয়ম কানুন ও চাকরির রুলস সম্পর্কে পূর্ব ধারণা অর্জন করা।
বিদেশে চাকরি অর্জনের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয়তাসমূহ
আপনি বিদেশে চাকরি করতে চাইলে অবশ্যই তাদের চাকরির প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে জানতে হবে। আর মজার ব্যাপার হলো, আপনি যদি একজন বুদ্ধিমান হয়ে থাকেন এবং কয়েকটি কাজ করে রাখেন তাহলে বিদেশে চাকরি পাওয়ার জন্য আপনাকে দৌড়াদৌড়ি করতে হবে না, বরং তারাই আপনাকে খুঁজে বের করবে।
পাসপোর্ট তৈরি করে রাখা ও জীবন বৃত্তান্ত আপ টু ডেট রাখা
বিদেশি চাকরি আপনার জন্য যেকোনো মুহূর্তে প্রস্তুত হয়ে যেতে পারে। আর তাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে চাকরি পাওয়ার পূর্বেই পাসপোর্ট তৈরি করে রাখা। আর সেই সঙ্গে বিদেশে চাকরি হয়ে গেলে আপনাকে অবশ্যই প্রয়োজনীয় রিকোয়ারমেন্ট অনুযায়ী বেশ কিছু কাগজপত্র জমা দিতে হবে।
আর এটা নিশ্চয়ই জানেন যে প্রয়োজনীয় সেই ডকুমেন্টগুলো কখনোই সরাসরি গ্রহণযোগ্য হবে না। এজন্য ভিসা সিভি এবং জীবন বৃত্তান্তের সকল কাগজপত্র ওয়ার্ক পারমিট করে রাখতে হবে। সুতরাং আপনাকে সরকারিভাবে নিবন্ধন করতে হবে সে সকল কাগজপত্র।
বিদেশে দেশে চাকরি পাওয়ার প্রক্রিয়া
বাইরের দেশে চাকরি পেতে চাইলে প্রথমত আপনাকে সে দেশের চাকরির বাজার সম্পর্কে রিসার্চ করতে হবে। এরপর ধারাবাহিকভাবে যা যা করতে হবে সেগুলো হলো:–
প্রথমত: সে দেশের কোম্পানি বা সেক্টরে চাকরির জন্য যে সার্কুলার প্রকাশিত হয়েছে তা সংগ্রহ করতে হবে।
দ্বিতীয়ত: আবেদন প্রক্রিয়া সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা নিতে হবে।
তৃতীয়ত: নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে আবেদন ফরম পূরণ করতে হবে।
চতুর্থত: চাকরির ক্ষেত্রে যদি দক্ষতা অভিজ্ঞতার প্রয়োজন পড়ে তাহলে আপনাকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে হবে।
মনে রাখবেন, বিদেশে চাকরি করার ক্ষেত্রে আপনাকে নিজ দেশের নয় সে দেশের নিয়ম-কানুন মেইনটেইন করার অভ্যাস করতে হবে। আপনি বাইরের দেশে চাকরি পেতে পারবেন অনলাইন এবং অফলাইন দুই মাধ্যমে।
আমাদের দেশে যেমন অনলাইন মাধ্যমে চাকরির আবেদন প্রক্রিয়া উল্লেখ থাকলে ঘরে বসে আবেদন করতে পারেন এবং ডাক যোগাযোগ অথবা সরাসরি সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে আবেদনের কথা উল্লেখ থাকলে এর জন্য উল্লেখিত ঠিকানায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যেতে হয়। ঠিক একইভাবে বিদেশে চাকরির ক্ষেত্রেও তাই।
আর এজন্যই বিদেশে চাকরি করতে চাইলে সেই চাকরিপ্রার্থীর পূর্বেই পাসপোর্ট তৈরি করে রাখাটা অধিক বেশি জরুরি সেই সাথে জীবন বৃত্তান্ত ও বায়োডাটা সত্যায়িত করাটাও অত্যন্ত প্রয়োজন।
বিদেশে চাকরি খোঁজার ওয়েবসাইট
বিদেশি চাকরিপ্রার্থীদের নিয়মিত চাকরির সার্কুলার জানার জন্য অবশ্যই ওয়েবসাইট ভিজিট করতে হবে। আর তাই আপনি যদি নিয়মিত বিদেশি চাকরির খবর জানতে চান তাহলে ফলো করতে পারেন কিছু ওয়েবসাইট।
1. LinkedIn
2 . monster.com
3. careerbuilder.com
4. Jobs.goabroad.com
5. Bdjobs.com
6. Indeed.com
7. Jooble.org
8. careerjet.com
তথ্যসূত্র: চাকরি নিউজ