বাংলাদেশে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করা নিয়ে চলতি বছরের প্রায় পুরোটা সময় জুড়েই সরব ছিল যুক্তরাষ্ট্র। এমন অবস্থার মধ্যেই বাংলাদেশে সম্ভাব্য ‘আরব বসন্তে’র মতো বিপ্লব বা অভ্যুত্থান ঘটানোর ঝুঁকির কথা সামনে এনেছে রাশিয়া।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশে ‘আরব বসন্তে’র মতো পরিস্থিতি সৃষ্টির প্রসঙ্গটি উঠেছে। এছাড়া বাংলাদেশে সম্প্রতি ট্রেনে অগ্নিকাণ্ড এবং প্রাণহানির বিষয়টিও ব্রিফিংয়ে উঠে এসেছে।
তবে যুক্তরাষ্ট্র এসব বিষয়ে সরাসরি কোনও মন্তব্য না করে বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সমর্থন করার বিষয়টিই উল্লেখ করেছে।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নকারীর প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নকারী জানতে চান, আমি দুটি প্রশ্ন করব, একটি বাংলাদেশ নিয়ে। ১৯ ডিসেম্বর ঢাকাগামী একটি এক্সপ্রেস ট্রেনের তিনটি বগিতে অগ্নিসংযোগকারীরা অগ্নিসংযোগ করলে এক নারী ও তিন বছরের শিশুসহ চারজন নিহত হন। বাইডেন প্রশাসন কি ক্ষতিগ্রস্তদের এই ধরনের অগ্নিসংযোগের শিকার হওয়ার বিষয়ে উদ্বিগ্ন?
জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, আমি এই নির্দিষ্ট ঘটনার বিষয়ে জানি না এবং এ বিষয়ে আমার কোনও মন্তব্য নেই।
পরে ওই প্রশ্নকারী বাংলাদেশে সম্ভাব্য ‘আরব বসন্তে’র মতো বিপ্লব বা অভ্যুত্থানের বিষয়ে রাশিয়ার অভিযোগ নিয়ে জানতে চান। তিনি বলেন, রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেছেন, জনগণের ভোটের ফলাফল যুক্তরাষ্ট্রের জন্য সন্তোষজনক না হলে আরব বসন্তের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি করে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করা হতে পারে। এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য কী?
জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, আমরা বাংলাদেশে একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনকে সমর্থন করি এবং এর চেয়ে বেশি বলার মতো আমার আর কোনও মন্তব্য নেই।
উল্লেখ্য, গত ১৫ ডিসেম্বর ‘বাংলাদেশ’ বিষয়ে এক বিবৃতি দেন রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা। সেই বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশে ভোটের ফলাফল যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সন্তোষজনক মনে না হলে ‘আরব বসন্তে’র মতো করে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা হতে পারে। এমন আশঙ্কার গুরুতর ভিত্তি রয়েছে যে, আগামী সপ্তাহগুলোয় পশ্চিমা শক্তিগুলোর পক্ষে অসুবিধাজনক বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে নানা রকমের অবরোধ আরোপ করা হতে পারে।
বিবৃতিতে বাংলাদেশে চলমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সঙ্গে ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের উসকানিমূলক কর্মকাণ্ডের সরাসরি সম্পর্কের কথা উল্লেখ করা হয়।
রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, বাংলাদেশের শিল্প খাতের গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলোর ওপর আঘাত আসতে পারে। সেই সঙ্গে কিছু সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় সংসদ নির্বাচনে নাগরিকদের গণতান্ত্রিক রায় প্রদানে বাধাদানের তথ্যপ্রমাণহীন অভিযোগ তুলে পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা থেকে বিরত হবে, এমন সম্ভাবনা কম বলেও রাশিয়া মনে করছে বলে জানান মারিয়া জাখারোভা।