মার্কিন ফার্মা জায়ান্ট ফাইজার এবং জার্মান সংস্থা বায়োএনটেকের তৈরি করোনাভাইরাসের টিকা দক্ষিণ আফ্রিকায় পাওয়া অতিসংক্রামক ধরনের বিরুদ্ধে উচ্চমাত্রায় কার্যকর। পাশাপাশি, সেটি প্রাণঘাতী এই ভাইরাস থেকে অন্তত ছয় মাস সুরক্ষা দেবে। বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে ফাইজার কর্তৃপক্ষ।
প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, দক্ষিণ আফ্রিকায় তাদের তৃতীয় ধাপের ট্রায়ালে টিকার দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণকারীদের কাউকেই করোনায় আক্রান্ত হতে দেখা যায়নি।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, করোনার বি.৩.৩৫১ ধরন ছড়িয়ে পড়া দক্ষিণ আফ্রিকায় ৮০০ জন ট্রায়ালে অংশ নিয়েছিলেন। তাদের মধ্যে নয়জন কোভিড-১৯ আক্রান্ত হন, যাদের সবাই প্ল্যাসেবো গ্রুপের (স্যালাইন-জাতীয় প্রতিক্রিয়াহীন ওষুধ গ্রহণকারী) সদস্য ছিলেন।
ফাইজারের প্রধান নির্বাহী আলবার্ট বুরলা বলেন, দ্বিতীয় ডোজ নেয়ার পর ছয় মাস পর্যন্ত কার্যকারিতা থাকা এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় ছড়িয়ে পড়া ধরনের বিরুদ্ধে কাজ করা আমাদের ভ্যাকসিনের সামগ্রিক সক্ষমতা সম্পর্কে আরও আস্থা জোগাচ্ছে।
বিভিন্ন দেশের মোট ৪৬ হাজার ৩০৭ জন অংশগ্রহণকারীর ওপর পরিচালিত প্রাথমিক ট্রায়ালের ফলাফল বিশ্লেষণ করে ফাইজারের এই টিকা সার্বিকভাবে ৯১ দশমিক ৩ শতাংশ কার্যকর প্রমাণিত হয়েছিল।
ওই ট্রায়ালে মোট ৯২৭ জন উপসর্গযুক্ত করোনা রোগী পাওয়া গিয়েছিল, যাদের মধ্যে ৮৫০ জনই ছিলেন সাধারণ প্ল্যাসেবো গ্রুপের এবং মাত্র ৭৭ জন ছিলেন, যারা টিকা নেয়ার পর আক্রান্ত হন।
যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের (সিডিসি) হিসাবে, ফাইজারের টিকা গুরুতর রোগ প্রতিরোধে শতভাগ কার্যকর আর মার্কিন খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসনের বিচারে এর হার ৯৫ দশমিক ৩ শতাংশ।
অবশ্য গত জানুয়ারিতেই ফাইজার-বায়োএনটেক জানিয়েছিল, মূল ভাইরাস এবং সাম্প্রতিক ধরনগুলোর তুলনা করে পরীক্ষার ফলাফলে ছোটখাটো পার্থক্য দেখা গেলেও তাতে টিকার কার্যকারিতা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই।
বছরখানেক আগে শুরু হওয়া করোনাভাইরাসের বৈশ্বিক মহামারিতে মৃতের সংখ্যা ইতোমধ্যে ২৮ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। এই সঙ্কট থেকে উত্তরণের সেরা উপায় একমাত্র টিকার হাত ধরেই আসতে পারে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।