ফরজ গোসল করার সময় কি অজু করতে হবে নাকি মুখে পানি দিয়ে গড়গড়া করলে এবং নাকের নরম হাড্ডি পর্যন্ত পানি পৌঁছালে হয়ে যাবে?
গোসল চাই ফরজ হোক সুন্নত বা মুস্তাহাব এতে পুরুষ নারী কারো জন্য অজু করা জরুরি নয়। গোসলে ফরজ শুধু তিনটি।
ফরজগুলো হলো—
গড়গড়াসহ কুলি করা :
গোসলের প্রথম ফরজ হলো- গড়গড়াসহ কুলি করা। মুখের ভেতর অনেক সময় খাবারের উচ্ছিষ্ট জমে থাকে। গলার ভেতরেও কফ জমে থাকে। তাই গড়গড়াসহ কুলি করলে গলার কফ ও মুখের ভেতর জমে থাকা খাবারের উচ্ছিষ্ট দূর হয়ে যায়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও ফরজ গোসলের অংশ হিসেবে কুলি করেছেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ২৫৭ ও ২৬৫; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৫৬৬)
নাকের নরম অংশের শেষ পর্যন্ত পানি দেওয়া :
গোসলের আরেকটি ফরজ হলো- নাকের ভেতর পানি দেওয়া। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও নাকে পানি দিয়েছেন। এ সম্পর্কিত একাধিক হাদিস বর্ণিত রয়েছে। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ২৬৫; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৫৬৬)
তবে গোসলের জন্য অজু করা সুন্নত। অর্থাৎ কেউ যদি গোসলের জন্য অজু করে অথবা গোসলের অন্য সুন্নতগুলো ঠিক মতো পালন করে তাহলে সে পরিপূর্ণ সওয়াব পাবে। অন্যথায় গোসল হয়ে যাবে কিন্তু পূর্ণ সওয়াব পাবে না। পূর্ণ সওয়াব পেতে চাইলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যেভাবে গোসল করতেন তা অনুসরণ করতে হবে। -(দুররে মুখতার, ফতোয়ায় শামী)
সারা শরীরে পানি দেওয়া, কোনো অংশ যেন শুকনো না থাকে –
এমনভাবে গোসল করতে হবে— যাতে শরীরের কোনো অঙ্গ শুকনো না থাকে। এ প্রসঙ্গে একাধিক হাদিস রয়েছে। সেসব হাদিস অনুযায়ী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন গোসল করতেন, তখন তার শরীরের সব অংশ ভেজা থাকতো। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ২১৭)
তবে গোসলের জন্য অজু করা সুন্নত। অর্থাৎ কেউ যদি গোসলের জন্য অজু করে অথবা গোসলের অন্য সুন্নতগুলো ঠিক মতো পালন করে তাহলে সে পরিপূর্ণ সওয়াব পাবে। অন্যথায় গোসল হয়ে যাবে কিন্তু পূর্ণ সওয়াব পাবে না। পূর্ণ সওয়াব পেতে চাইলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যেভাবে গোসল করতেন তা অনুসরণ করতে হবে। -(দুররে মুখতার, ফতোয়ায় শামী)
রাসুল (সা.) যেভাবে গোসল করতেন –
হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, মায়মুনা (রা.) বলেন, আমি আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর জন্য গোসলের পানি রাখলাম। তা দিয়ে তিনি জানাবাতের (অপবিত্রতা থেকে পবিত্র হওয়ার) গোসল করেন। আল্লাহর নবী (সা.) পাত্র হাতে নিয়ে নিজের ডান হাতের ওপর কাত করে তা দুই বা তিনবার ধৌত করেন। অতঃপর তিনি তাঁর লজ্জাস্থানের ওপর পানি ঢেলে— বাম হাত দিয়ে ধৌত করেন। পরে তিনি মাটির ওপর হাত ঘষে (দুর্গন্ধমুক্ত হওয়ার জন্য) তা পানি দিয়ে ধৌত করেন।
অতঃপর তিনি কুলি করেন এবং নাক পরিষ্কার করেন। অতঃপর মুখমন্ডল ও দুই হাত ধৌত করেন। এরপর তিনি নিজের মাথা ও সর্বাঙ্গে পানি ঢালেন। পরে তিনি সেই স্থান থেকে অল্প দূরে সরে গিয়ে উভয় পা ধৌত করেন। (আবু দাউদ, হাদিস : ২৪৫)