জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি বর্তমানে প্রচলিত রয়েছে। ওষুধ সেবন কিংবা দীর্ঘমেয়াদি ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে এ কাজটি করা হয়। কিন্তু কেমন ছিল শত শত বছর আগের চিত্রপট? তখন কীভাবে করা হতো জন্মনিয়ন্ত্রণ?
প্রাচীন যুগে জন্মনিয়ন্ত্রণ এতটা সোজা ছিল না। এ কাজটির জন্য নারীদের অনেক কষ্ট সহ্য করতে হয়েছিল। আজব সব নিয়ম মানতে হয়েছিল এজন্য। চলুন সে সময়কার কিছু উদ্ভট নিয়ম সম্পর্কে জেনে নিই-
পারদের মিশ্রণ
চীনে গর্ভধারণ এড়ানোর জন্য অদ্ভুত এক পদ্ধতি মানা হতো। নারীদের খালি পেটে পারদ আর তেলের মিশ্রণ পান করানো হতো। তারা মনে করতেন, এভাবে অসময়ে গর্ভধারণ এড়ানো যেত। বর্তমানে সবাই জানেন, হাড় আর দেহের জন্য পারদ কতটা ক্ষতিকর।
যত দোষ সব চাঁদের
গ্রিনল্যান্ডে মনে করা হতো নারীদের গর্ভবতী হওয়ার পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান চাঁদের। গর্ভধারণ এড়াতে তারা চাঁদকেই এড়িয়ে চলত। চাঁদের দিকে তাকাতো না। এমনকি ঘুমানোর আগে পেটে থুতু মেখে নিতেন যেন ঘুমের মধ্যে চাঁদ কোনো ঝামেলা করতে না পারে।
নেকড়ের মূত্র
অন্ধবিশ্বাস মধ্যযুগে অনেকেরই সঙ্গী ছিল। সেসময়ের চিকিৎসার ধরনও ছিল উদ্ভট। অযাচিত গর্ভধারণ রোধ করতে যৌনমিলনের পূর্বে নারীদের ঘরের বাইরে গিয়ে কোনো নেকড়ের মূত্র ত্যাগ করার স্থানের ওপর মূত্র ত্যাগ করতে হতো। কিংবা ঘুরে আসতে হতো কোনো গর্ভবতী নেকড়ের মূত্রত্যাগের স্থান থেকে। ধারণা করা হতো, এই কাজ করলে গর্ভধারণ এড়ানো যাবে।
লাইসল
১৯০০ এর প্রথমদিকের কথা। তখনও আমেরিকায় জন্মনিয়ন্ত্রণ বৈধ হয়নি। সেসময় বাজারে লাইসল নামে একটি পণ্য বের করা হয়। এটি নারী দেহের ভেতরে গিয়ে খানিকটা অংশ জ্বালিয়ে দেয় আর নিরাপদভাবে নিশ্চিত করে জন্মনিয়ন্ত্রণ। তবে, যতই নিরাপদ বলা হোক না কেন, এটি ব্যবহারে অনেকেই আহত হন। এমনকি পাঁচজনের মৃত্যুও হয়।
অলিভ অয়েল
প্রাচীন গ্রিসে পুরুষেরা মিলনের সময় অলিভ অয়েল আর সিডারের তেল একসঙ্গে মিশিয়ে ব্যবহার করতেন। মনে করা হতো এটি শুক্রাণুকে দুর্বল করে দেয়। যা নারীকে গর্ভবতী হওয়া থেকে বিরত রাখে।
মধু
প্রাচীন মিশরে গর্ভধারণ এড়াতে মধু ব্যবহার করা হতো মধু। তবে পুরুষ নয়, এটি ব্যবহার করতেন নারীরা। মনে করা হতো মধুর প্রলেপ থাকলে পুরুষের শুক্রাণু নারী দেহের ভেতরে প্রবেশ করতে পারবে না। ফলে কোনো সন্তানেরও জন্ম হবে না। বর্তমানে মধুর পরিবর্তে হানি ক্যাপ ব্যবহার করা হয়।
প্রাচীন এই উদ্ভট নিয়মগুলো সম্পর্কে কি জানা ছিল আপনার?