প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সেক্রেটারি শফিকুল আলম অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশের সংখ্যালঘু ইস্যুতে ভারতীয় মিডিয়া ব্যাপকভাবে ভুল তথ্য ছড়াচ্ছে। তিনি বলেন, এই ইস্যুতে ভারতীয় মিডিয়া আমাদের পুরো জাতিকে কাঠগড়ায় দাড়ঁ করানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
আজ (মঙ্গলবার) সন্ধ্যায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন প্রেস সেক্রেটারি।
শফিকুল আলম বলেন, ভারত সংখ্যালঘু ইস্যুতে বাংলাদেশের পুরো জাতিকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এর প্রতিবাদে আমাদের সিটিজেন গ্রুপ, ডায়াসপোরা গ্রুপ, রাজনৈতিক দল, সিভিল সোসাইটির সোচ্চার হওয়া উচিত।
প্রেস সেক্রেটারি বলেন, দায়িত্ব গ্রহণের পর ২০ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ভারতীয় সাংবাদিকদের বাংলাদেশে পাঠিয়ে সংখ্যালঘু ইস্যুতে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করানোর অনুরোধ করেন। তিনি বলেছিলেন বাংলাদেশে সংখ্যালঘুরা আদৌ ভায়ালেন্সের (নির্যাতন) শিকার হচ্ছে কি না, কীভাবে হচ্ছে, আদৌ হচ্ছে কি না তা অনুসন্ধান করে দেখে যাক।
প্রেস সেক্রেটারি আরও বলেন, আজকের এসব ঘটনার জন্য আমি ভারতীয় মিডিয়াকে দায়ী করব। তারা মিস ইনফরমেশনের ব্যাপক একটা ক্যামপেইন চালাচ্ছে। তারা এই ইস্যুতে মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে। এর ফলে ভারতের জনগণ বা একটা অংশ ভায়োলেন্স করছে। তারই রেজাল্ট হাইকমিশনে হামলা।
তিনি বলেন, আমরা বিদেশি মিডিয়াকে বাংলাদেশে আমন্ত্রণ জানাবো, আপনারা এসে প্রকৃত তথ্য দেখে যান। ইতোমধ্যে বিবিসি, সিএনএন, রয়টার্স ভালো কিছু রিপোর্ট করেছে। কিন্তু ভারতের মিডিয়াগুলো আগে থেকে ডিটারমাইন্ড (নির্ধারিত করে রেখেছে) যে তারা কী প্রতিবেদন করবে।
বিদেশি গণমাধ্যমকে বারবার বলছি, আপনার আসেন। কারণ এখান থেকে মিস ইনফরমেশন ছড়ানো হচ্ছে। তারা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কাউন্সিল থেকে তথ্য নিয়ে প্রতিবেদন করছে, যাতে তথ্যের গরমিল আছে। হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কাউন্সিলের রিপোর্টে ৯ জনের মৃত্যুর কথা বলা হচ্ছে। এই মৃত্যুগুলোর কোনোটিই ধর্মীয় কারণে হয়নি। প্রত্যেকটি মৃত্যুর পেছনে ছিল রাজনৈতিক বা ব্যক্তিগত কারণ। অথচ এই তথ্য দিয়ে ১১ মিলিয়ন বার সাইটেশন করেছে। তাদের তথ্য দিয়ে ভারতীয় মিডিয়া চোখ মুখ বন্ধ করে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছে।
শফিকুল আলম বলেন, আমরা হিউম্যান রাইটস ওয়াচকে এসে দেখে যাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। এ ব্যাপারে আমরা খুব ট্রান্সপারেন্ট।
আগরতলায় বাংলাদেশের হাইকমিশনে হামলা প্রসঙ্গে প্রেস সেক্রেটারি বলেন, ডিপ্লোম্যাটিক লাইনে যতটুকু করা দরকার ততটুকু করা হচ্ছে। ডিপ্লোম্যাট চ্যানেলে কথা বলা, স্টেটমেন্ট দেওয়া হয়েছে। দেশের বিদ্যমান সিস্টেমে এর চেয়ে বেশি কিছু করা যায় না।
শান্তি প্রতিষ্ঠায় ভারতের সাথে বাংলাদেশ সুসম্পর্ক চায় উল্লেখ করে প্রেস সেক্রেটারি বলেন, সেই সম্পর্ক হতে হবে ন্যায্যতা ও সমতার ভিত্তিতে।