পুরুষের চুল পড়া বা টাক সমস্যা রোধের কিছু উপায় হচ্ছে- খাদ্যাভ্যাস ঠিক রাখা, মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া। আরো বিস্তারিত তথ্য নিয়ে এ প্রতিবেদন।
- পর্যাপ্ত পানি পান করুন: শরীরে পানির অভাব দেখা দিলে চুলের গ্রন্থিগুলো দুর্বল হয়ে যায়। ফলে চুলের ঘনত্ব কমে যায় এবং চুল পড়া শুরু হয়। তাছাড়া শরীরে পানির অভাব দেখা দিলে নতুন চুলগ্রন্থি তৈরি হয়না, ফলে মাথায় চুলের পরিমাণ বাড়ে না। চুল পড়া রোধে পর্যাপ্ত পানি পান করুন।
- কী খাচ্ছেন তাতে নজর দিন: চুলের বৃদ্ধির জন্য আমিষ খুবই প্রয়োজনীয়। তবে চুলের পাশাপাশি শরীরের খেয়াল রাখতে হলে অবশ্যই চর্বিহীন আমিষ খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। মাছে প্রচুর পরিমাণ চর্বিহীন আমিষ থাকে। তাছাড়া চর্বিহীন মাংস মানবদেহের আমিষের চাহিদা পূরণ করে থাকে। বাদামের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের ভোজ্য বীজে প্রচুর ভিটামিন ই এবং স্বাস্থ্যকর স্নেহ পদার্থ থাকে, যা চুলে পর্যাপ্ত আর্দ্রতা ও পুষ্টি যোগায়। এমনকি কিছু মসলা চুলের পক্ষে খুবই উপকারী, যেমন: দারুচিনি। বিভিন্ন খাবারে দারুচিনি ব্যবহারের মাধ্যমে চুলের প্রয়োজনীয় অক্সিজেন এবং পুষ্টির চাহিদা মেটানো সম্ভব।
- মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করুন: অনেকেই আছেন যারা চুল পড়া নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় ভোগেন। ফলাফল হিসেবে চুল পড়ার হার বেড়ে যায়। অতিরিক্ত দুশ্চিন্তার ফলে চুলপড়াজনিত নানারকম সমস্যা বেড়ে যায়। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে টেলোজেন এফ্লুভিয়াম (যার ফলে মাথা থেকে আপনাআপনি চুল ঝরে যায়) এবং ট্রিকোটেলোমেনিয়া (যার ফলে বারবার চুল টানার ইচ্ছা জাগে ফলে মাথা থেকে প্রচুর পরিমাণে চুল পড়ে যায়)। সুতরাং মানসিক চাপ বা দুশ্চিন্তা এড়াতে নিয়মিত বিভিন্ন ব্যায়াম করুন।
- ধূমপান এবং মদ্যপানের পরিমাণ কমান: গবেষণায় দেখা গেছে ধূমপান এবং মদ্যপান চুল পড়ার জন্য দায়ী। ধূমপানের ফলে শরীরের রক্ত চলাচল ব্যাহত হয়। ফলে আপনার চুলের গ্রন্থিগুলোতে সঠিক মাত্রায় রক্তপ্রবাহ না থাকায় চুল পড়া শুরু হয়। অন্যদিকে মদ্যপানের ফলে শরীরে পানিশূন্যতা এবং নানানরকম পুষ্টিজনিত সমস্যা দেখা দেয়। ফলে চুল পড়ার হার বৃদ্ধি পায়।
- বিশেষজ্ঞ পরামর্শ গ্রহণ করুন: চুল পড়া সমস্যা দূর করার জন্য বিশেষজ্ঞের পরামর্শ জরুরি। পরিস্থিতি বেগতিক হওয়ার আগেই আপনার প্রথম কাজ হবে বিশেষজ্ঞ মতামতের মাধ্যমে চুল পড়ার কারণ এবং তা প্রতিরোধের উপায় খুঁজে বের করা। আপনি কোন ওষুধ সেবন করেন, চুলের জন্য কোন প্রসাধনী ব্যবহার করেন এবং চুল বিষয়ে আপনার পারিবারিক ইতিহাস এক্ষেত্রে জরুরি। অনেক সময় দেখা যায় যে, আপনি যেসকল ওষুধ সেবন করছেন তার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে আপনার মাথার চুল পড়ে যাচ্ছে। প্রয়োজনীয় সকল বিষয়াদি পর্যালোচনা করে বিশেষজ্ঞ যে পরামর্শ দেবেন, তা পালন করুন।
- অ্যালোভেরা ব্যবহার করুন: চুল পড়া রোধে অ্যালোভেরা হতে পারে চমৎকার এক ঘরোয়া সমাধান। অ্যালোভেরা আপনার ক্ষতিগ্রস্ত স্ক্যাল্পকে করে তোলে সতেজ এবং মাথাভরা নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। স্ক্যাল্পের গ্রন্থিকোষে জমে থাকা তেল জাতীয় পদার্থ যা নতুন চুল উঠতে বাধা দেয় তা দূর করার জন্যেও অ্যালোভেরা বেশ কার্যকরী। ব্যবহারের জন্য বিশুদ্ধ অ্যালোভেরা সরাসরি প্রয়োগ করুন।
- নিয়মিত ব্যায়াম সাহায্য করতে পারে: নিয়মিত ব্যায়ামের ফলে যেমন শরীর সুস্থ থাকে, তেমনি আপনার চুলের জন্যও উপকারী। ব্যায়ামের ফলে মানসিক চাপ বা দুশ্চিন্তা দূরে থাকে এবং শরীরে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায়, যা চুলের বৃদ্ধি ঘটাতে সহায়তা করে।
পিএসএন/এমঅাই