ভারতের পিটিআই ক্রিকেটের ডেপুটি এডিটর কুশান সরকারের মতে, ফরম্যাটগুলো ভাগ করতে না পারায় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ধারাবাহিক হতে পারছে না বাংলাদেশ। অর্থাৎ সব খেলোয়াড়কে তিন ফরম্যাটে না রেখে সক্ষমতা অনুযায়ী আলাদা করে ফেলার কথা বলছেন তিনি। বিসিবির সাবেক নির্বাচক প্যানেল এই কৌশলেই এগোচ্ছিল। যে কারণে মেহেদী হাসান মিরাজকে টি২০ থেকে দূরে রাখা হয়েছিল বলে জানান হাবিবুল বাশার। তাইজুল ইসলাম, মুমিনুল হককে খেলাতেন টেস্টে।
বিসিবির বর্তমান ম্যানেজমেন্ট সে কৌশল থেকে কিছুটা সরে এসেছে হয়তো। সাকিব আল হাসানের না থাকা মিরাজকে টি২০ দলে নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রভাবিত করছে নির্বাচকদের। অলরাউন্ডার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে কৌশলটা নেওয়া। এ কারণেই মিরাজকে ভারতের বিপক্ষে টি২০ সিরিজে নেওয়া হয়েছিল। ডানহাতি এ অলরাউন্ডারকে ২০ ওভারের ক্রিকেটে খেলালে টেস্ট ও ওয়ানডে বোলিংয়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। মিরাজ নিজেও বিষয়টি বুঝতে পেরে টি২০ খেলতে মরিয়া হয়ে উঠতে চান না। টেস্ট এবং ওয়ানডেতে মনোযোগ বেশি দেওয়ার পক্ষে তিনি।
২০১৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত ২৭ টি২০ খেলে ১৪ উইকেট নিয়েছেন মিরাজ। বোলিং ইকোনমি ৮.৫৬। ২০ ওভারের খেলার জন্য যেটা আদর্শ মনে করা হয় না। সম্প্রতি ভারতে টি২০ খেলে সুবিধা করতে পারেননি। উল্টো টেস্ট বোলিং কিছুটা ছন্দচ্যুত। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দেশের মাটিতে ভালো করতে পারেননি। দুই টেস্টের সিরিজে দুই উইকেট শিকার তাঁর। ২০২১ সালের পর দেশের মাটিতে এতটা খারাপ রেকর্ড মিরাজের।
টেস্ট এবং ওয়ানডে ক্যারিয়ার আরও সমৃদ্ধ করতে ২০ ওভারের সংস্করণ নিয়ে ভেবে দেখতে চান তিনি, ‘মনে হয়, তিন ফরম্যাট খেলা যাবে না। টি২০ নিয়ে ভাবতে হবে।’ ২০১৮ সালের পর ২০২২ সালে টি২০ ক্রিকেটে ফেরেন মিরাজ। তিন বছরে ১৪ ম্যাচ খেলে ১০ উইকেট শিকার তাঁর। গত টি২০ বিশ্বকাপের দলে রাখা হয়নি তাঁকে।
২৭ বছর বয়সী অলরাউন্ডারের টি২০ ক্যারিয়ার নিয়ে সাবেক নির্বাচক হাবিবুল বাশারের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘আমরা একটা সময়ে ওকে টি২০ থেকে দূরে রেখেছিলাম। কারণ, টি২০ খেললে বাকিগুলোতে ওর বোলিং লেন্থ ঠিক থাকে না। আমি বলব না, টি২০তে ওর সুযোগ নেই। তবে নিজের স্বার্থেই মিরাজ ২০ ওভারের ক্রিকেট নিয়ে ভাবতে পারে।’
টাইগার অলরাউন্ডার জানান, বিষয়টি তাঁর মাথায় আছে। ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নিতে চান তিনি। জাতীয় দল ম্যানেজমেন্ট, নির্বাচক প্যানেলও বিষয়টি মাথায় রেখেছে।
২০২৬ সালে টি২০ বিশ্বকাপ হবে ভারত ও শ্রীলঙ্কায়। বৈশ্বিক এই টুর্নামেন্ট সামনে রেখে টি২০ দল সাজাতে চান নির্বাচকরা। বিশ্বকাপের আগে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক মিলে ৭০টির মতো ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবেন ক্রিকেটাররা। এ সময়ে নিজেকে ভালোভাবে পরখ করে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন মিরাজ।
তিনি বলেন, ‘টেস্টের এই সিরিজটি ভালো হয়নি। আশা করি, ঠিক হয়ে যাবে। যে ক্রিকেট খেললে ভালো হবে, সেটাই খেলব।’ ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে টেস্ট ও ওয়ানডের পর তিন ম্যাচ টি২০ সিরিজও খেলবে বাংলাদেশ। এই সিরিজের পর দেশের মাটিতে বিপিএল খেলা। টি২০তে অনিয়মিত মিরাজের জন্য উইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজটি একপ্রকার পরীক্ষার মঞ্চও।