নারীদের কণ্ঠেরও পর্দা আছে। এটি এজন্য যে, তাদের কণ্ঠের কোমলতার কারণে পরপুরুষ আকৃষ্ট হতে পারে বা ফেতনার আশঙ্কা রয়েছে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন, ‘হে নবীর স্ত্রীগণ! তোমরা অন্য নারীদের মতো নও (ইহুদি খ্রিস্টান)। তোমরা যদি আল্লাহকে ভয় পাও তবে আকর্ষণীয় ভঙ্গিতে কথা বলো না, যাতে যাদের মাঝে যৌনলিপ্সা আছে তারা তোমাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়। বরং তোমরা স্বাভাবিক কথা বলো এবং তোমরা অবস্থান করো স্বীয় বাসগৃহে, জাহেলি যুগের মেয়েদের মতো নিজেদের প্রকাশ করো না।’ (সুরা আহজাব: ৩২)
পরপুরুষ শুনে ফেলার সম্ভাবনা থাকলে নারীদের জোরে কথা বলা জায়েজ নয়। প্রয়োজন হলেই কেবল জোরে কথা বলা জায়েজ। একইভাবে পরপুরুষ শোনার সম্ভাবনা থাকলে সুললিত ও আকর্ষণীয় ভঙ্গিতে কোরআন তেলাওয়াতও পরিহার করবেন নারীরা। এক্ষত্রেও দলিল হিসেবে মহান আল্লাহর উল্লেখিত বাণীটি প্রযোজ্য।
পুরুষের জন্যও নারীর আকর্ষণীয় কণ্ঠ ও গজল শোনা হারাম। ইমাম ইবনুল কাইয়্যুম (রহ) বলেন বলেন, আজনবি মহিলার গান-গজল শ্রবণ করা সর্বাপেক্ষা হারাম কাজ এবং দ্বীনের সবচেয়ে দূষিত বিষয়। (ইগাসাতুল লুহফান: ১/২৩০)
নারীর প্রতি শরীয়তের নির্দেশনা হলো- সে যেন প্রয়োজন ছাড়া এত জোরে কথা না বলে যে, তার আওয়াজ গায়রে মাহরাম পর্যন্ত পৌঁছে যায়। এ জন্য ইবাদত বন্দেগির ক্ষেত্রেও তা লক্ষ রাখা হয়েছে। যেমন, আজানের দায়িত্ব নারীদের দেওয়া হয়নি। কারণ আজান উঁচু শব্দে দিতে হয়। নারীগণকে সকল নামাজের কেরাত নিম্নস্বরে পড়তে হয়। হজের তালবিয়া পুরুষগণ উচ্চ আওয়াজে পড়বে কিন্তু মহিলারা পড়বে নিম্ন আওয়াজে ইত্যাদি।
অতএব মহিলাগণ সাধারণ অবস্থায় তাদের কথাবার্তা এমনভাবে বলার চেষ্টা করবে যেন তা নিজেদের পরিসর পর্যন্ত সীমিত থাকে। নিজ ঘরেও এত জোর আওয়াজে কথা বলবে না, যাতে বাইরের লোকজন শুনতে পায়। আর নারীগণ বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া পর পুরুষের সাথে কথা বলবে না। কোন দরকারি কথা বলতে হলে পর্দার আড়াল থেকেই বলবে এবং কোমলতা পরিহার করে স্বাভাবিক স্বরে বলবে। এভাবে কথা বললে পর্দা নষ্ট হবে না। (আলবাহরুর রায়েক: ১/২৭০; শরহু মুখতাসারিত তহাবি: ১/৫৬৩; রদ্দুল মুহতার: ১/৪০৬)