‘অ্যালগরিদমের ক্ষমতা’ থেকে শিশুদের রক্ষা করতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের বয়সসীমা বাড়িয়ে ১৫ বছর করার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে নরওয়ে।
দেশটির প্রধানমন্ত্রী জোনাস গাহর স্টোর বলেছেন, নতুন নীতিমালার আওতায় ১৫ বছরের কম বয়সীদের ব্যক্তিগত তথ্য নেওয়া থেকে দূরে রাখা হবে বিভিন্ন প্রযুক্তি কোম্পানিকে, যা প্রযোজ্য হবে নেটফ্লিক্সের বেলাতেও।
বর্তমানে স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশটিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের ন্যূনতম বয়সসীমা ১৩, যা টিকটক, ইনস্টাগ্রাম ও স্ন্যাপচ্যাট ব্যবহারের ক্ষেত্রেও গোটা বিশ্বের প্রায় সব জায়গাতেই ‘স্ট্যান্ডার্ড’।নরওয়ের গণমাধ্যম বলছে, এই ন্যূনতম বয়সসীমা থাকার পরও ৯ বছর বয়সী অর্ধেকেরও বেশি শিশু বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে। এমনকি দেশটিতে থাকা বিধিনিষেধ সহজেই এড়িয়ে যেতে পারে তারা।
“এ থেকে যে গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত মেলে, তা হচ্ছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ক্ষতিকর কনটেন্ট থেকে শিশুদের রক্ষা করতে হবে,” দেশটির স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ভিজি’কে বলেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী।
“শিশুদের সরল মস্তিষ্ককে ব্যবহার করছে বড় বড় টেক জায়ান্ট। আমরা জানি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যবহার থেকে শিশুদের দূরে রাখার বিষয়টি কঠিন। কারণ, এখানে শক্তিশালী কর্পোরেট ক্ষমতা রয়েছে। তাই এখানে রাজনৈতিক সদিচ্ছার প্রয়োজন।”
দেশটির পরিবারমন্ত্রী কেজার্স্টি টপ্পে বলেন, “প্রযুক্তি জায়ান্টদের সঙ্গে লড়াইটা মা-বাবারা একা এগিয়ে নিতে পারবেন না। এজন্য আমরা আরও কঠোর আইন প্রণয়নের কথা ভাবছি।”ফোন স্ক্রিনের আসক্তি কমাতে ও সাইবার বুলিয়িং ঠেকাতে ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশ স্কুলে স্মার্টফোন নিষিদ্ধ করার পর নরওয়ে এই পদক্ষেপ নিল বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্ট।
সেপ্টেম্বরে ‘ডিজিটাল ব্রেক’ নিয়ে পরীক্ষা শুরু করে ফ্রান্সের ২০০টি স্কুল, যার মাধ্যমে স্কুল চলাকালীন ফোন ব্যবহার থেকে দূরে রাখা হবে শিক্ষার্থীদের। এ পরীক্ষা সফল হলে জানুয়ারি মাসে সব স্কুলে শুরু হবে এর ট্রায়াল।এদিকে, বিভিন্ন প্রযুক্তি কোম্পানি যদি ‘টক্সিক’ উপাদান থেকে শিশুদের রক্ষার জন্য তৈরি করা অনলাইন সুরক্ষা বিধি মেনে না চলে তবে যুক্তরাজ্যে ১৮ বছরের কম বয়সীদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যবহার নিষিদ্ধের হুমকি দিয়েছে দেশটির যোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা অফকম।
ফেইসবুক ও ইনস্টাগ্রামের মূল কোম্পানি মেটা বলেছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শিশুদের জন্য বাড়তি সুরক্ষার পাশাপাশি অভিভাবকদের জন্যও তা নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা রয়েছে কোম্পানিটির।