নতুন প্রাণের সন্ধানে’ মহাকাশ ভ্রমণ বা যাত্রাকে দীর্ঘ করতে পারে এক নতুন রকেট থ্রাস্টার, যা জ্বালানী হিসাবে যে কোনও ধরনের ধাতু ব্যবহার করে মহাকাশে ‘অসীম যাত্রাকে’ চালিয়ে নিতে পারবে বলে দাবি বিজ্ঞানীদের।
সম্প্রতি একটি নতুন প্রপালশন সিস্টেম পরীক্ষা করছে ‘ইউনিভার্সিটি অফ সাউদাম্পটন’-এর এক দল গবেষক, যা কোনো মহাকাশযানকে অনির্দিষ্টকালের জন্য চালিয়ে নিতে বিভিন্ন উপগ্রহ ও ধূমকেতুতে পাওয়া নানারকম ধাতব পদার্থ সংগ্রহের জন্য সহায়তা করবে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম স্কাই নিউজ।বর্তমানে বিভিন্ন মহাকাশযানের রকেট প্রপালশন সিস্টেমে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয় জেনন বা ক্রিপ্টনের মতো বিরল গ্যাস, যা পৃথিবীতে সহজে মিললেও মহাকাশে এসব উপাদান পাওয়া কঠিন।তবে কোনও মহাকাশযান নিজের যাত্রাপথে যে ধাতু সংগ্রহ করতে পারে তা ব্যবহার করে ‘গ্রহ ও মহাকাশ অনুসন্ধান একটি নতুন জগত খুলে দিতে পারে’, বলেন এ গবেষণার প্রধান বিজ্ঞানী ড. মিনকোয়ান কিম।“আসলে মহাকাশের অনেক গভীরে যেতে ও বহু বছর ধরে কাজ চালিয়ে নিতে পারবে এটি।”
গত বছর মহাকাশে উৎক্ষেপণ করা স্পেসএক্স-এর নির্মিত ‘ফ্যালকন ৯’ রকেটের প্লাজমা থ্রাস্টার ডিজাইনের নির্মাতা ড. কিম বলেছেন, মহাকাশে পাওয়া যায় নানা এমন ধরনের ধাতু পোড়াতে পারে এইসব নতুন ধরনের থ্রাস্টার, যেমন লোহা, অ্যালুমিনিয়াম ও তামা।
“মহাকাশের আরও গভীরে দীর্ঘ সময় ধরে ভ্রমণের জন্য আমাদের এক নতুন কৌশল দিয়েছে এটি।”বর্তমানে জ্বালানী হিসেবে ধাতু ব্যবহার করে এমন বিভিন্ন থ্রাস্টারকে ডিজাইন করা হয়েছে কৃত্রিম উপগ্রহের জন্য। তবে ড. কিম ও তার গবেষণা দলটি যা পরীক্ষা করছেন তা মহাকাশযানেও ব্যবহার করা যেতে পারে।ব্রিটিশভিত্তিক মহাকাশ গবেষণা কোম্পানি ‘ম্যাগড্রাইভ’-এর সঙ্গে ‘সুপার ম্যাগড্রাইভ’ নামের এক প্রপালশন সিস্টেম নিয়ে কাজ করছে গবেষণা দলটি, যা যুক্তরাজ্য সরকারের কাছ থেকে পেয়েছে ১০ লাখ পাউন্ড।
“আমাদের অনুমান, ভবিষ্যতের দীর্ঘ মহাকাশ মিশনের মূল ভিত্তি হতে পারে এটি। এ তো কেবল শুরু। আমরা এখনও জানি না, এই প্রযুক্তি কতদূর পাল্টাতে পারবে বা আমরা কতদূর এগিয়ে যেতে পারবো,” বলেন ড. কিম।“আমাদের নতুন গ্রহ অনুসন্ধানে, নতুন প্রাণের সন্ধানে ও আগে মহাকাশের যে অংশে কোনও মানুষ যায়নি সেখানে যেতে সহায়তা করবে এই সিস্টেমটি, যা মহাকাশে অসীম আবিষ্কারকে সম্ভব করে তুলবে।”