বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা এমন যে পড়াশোনা শেষে চাকরি করা ছাড়া আর কিছুই ভাবতে দেয় না বলে মন্তব্য করেছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ এডুকেশন সিস্টেম এরকম যে লেখাপড়া শেষ করে শিক্ষার্থীরা চাকরি ছাড়া অন্য কিছু ভাবে না। অথচ বিশ্ব প্রতিনিয়ত চেঞ্জ হচ্ছে। ফলে বিশ্বের সঙ্গে তালমিলিয়ে আমরা এগিয়ে যেতে পারছি না। মানুষ মুক্তচিন্তা করবে, কল্পনা করবে, উদ্ভাবনী চিন্তাশক্তি প্রকাশ করবে। তাহলে আমাদের পরিবর্তন আসবে।
শনিবার (২৩ নভেম্বর) রাজধানীর ধানমন্ডিতে ড্যাফোডিল প্লাজায় ‘গ্লোবাল অ্যান্ট্রাপ্রেনিউরশিপ উইক ২০২৪’-এর সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ইনোভেশন অ্যান্ড অ্যান্ট্রাপ্রেনিউরশিপ বিভাগের উদ্যোগে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেন, ব্রিটিশ আমল থেকে আমাদের এ অঞ্চলে উদ্যোক্তারা সফল হতে পারেননি। ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি সেটা হতে দেয়নি। তারা চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত দিয়ে কৃষিকে ধ্বংস করেছে। হ্যাঁ, একটি শ্রেণি তৈরি করেছিল, সেটা হলো কেরানি শ্রেণি। ১৯৪৭ ও ১৯৭১ সালে দুইবার স্বাধীন হওয়ার পরও আমাদের লিগ্যাসি রয়ে গেছে। আমরা সেখান থেকে বের হতে পারিনি।
তিনি বলেন, দেশে অতি সম্প্রতি নতুন নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি হচ্ছে, এটি খুব ভালো খবর। কিন্তু উদ্যোক্তারা বেশির ভাগ বিদেশে চলে যান। তাদের দেশে ধরে রাখার জন্য সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগ নিতে হবে। কারণ দেশের জন্য তাদের বেশি প্রয়োজন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন গ্লোবাল অ্যান্ট্রাপ্রেনিউরশিপ নেটওয়ার্ক বাংলাদেশের ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্ট্রি বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মো. সবুর খান, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার দক্ষতা বিশেষজ্ঞ গুনজন দাল্লাকটি, মাইক্রোসফট বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইউসুফ ফারুক, বাংলাদেশ ভেঞ্চার ক্যাপিটাল লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শওকত হোসেন, বাংলাদেশ ফেডারেশন অব উইমেনস অ্যান্ট্রাপ্রেনিউরশিপের সভাপতি ড. রুবিনা হোসেন এবং ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ইনোভেশন অ্যান্ড অ্যান্ট্রাপ্রেনিউরশিপ বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ কামরুজ্জামান।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ‘গ্লোবাল অ্যান্ট্রাপ্রেনিউরশিপ উইক ২০২৪’-এর ন্যাশনাল হোস্ট ও বাংলাদেশ স্কিল ডেভেলাপমেন্ট ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক কে এম হাসান রিপন।
‘বাধা দূর করুন, সবাইকে স্বাগত জানান’ প্রতিপাদ্য নিয়ে ১৮-২৪ নভেম্বর বাংলাদেশে গ্লোবাল অ্যান্ট্রাপ্রেনিউরশিপ উইক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ বছর গ্লোবাল অ্যান্ট্রাপ্রেনিউরশিপ উইক বিশ্বের ২০০টি দেশজুড়ে উদযাপিত হয়। যেখানে ৪০ হাজারের বেশি ইভেন্ট এবং ১০ মিলিয়ন মানুষ এ উদযাপনে অংশ নেন।
বাংলাদেশে গ্লোবাল অ্যান্ট্রপ্রেনিউরশিপ নেটওয়ার্ক-বাংলাদেশ (জিইএন-বাংলাদেশ) ৫০টিরও বেশি অংশীদার সংস্থার সঙ্গে ৫০০টির বেশি ইভেন্ট আয়োজন করে, যা সরাসরি এক লাখ এবং ডিজিটালি ৩০ লাখ যুবককে প্রভাবিত করেছে।