‘আফগান গার্ল’ নামে রাতারাতি বিখ্যাত হয়ে ওঠা সেই আফগান কিশোরী শরবত গুলার কথা মনে আছে? ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক সাময়িকীর প্রচ্ছদে ১৯৮৫ সালে আলোকচিত্রী স্টিভ ম্যাককারির তোলা সবুজ চোখের আফগান মেয়েটি বিশ্বজুড়ে হৈচৈ ফেলে দেয়।
সবুজ চোখের রহস্যময় দৃষ্টি দেখে সেসময় মেয়েটির সে সময় নাম দেওয়া হয় ‘আফগান মোনালিসা’। এবার ফের নজর কাড়ল সবুজ চোখের আরেক আফগান কন্যা। তবে শরবত গুলার মতো রহস্যময় দৃষ্টির জন্য নয়, ঝকমকে হাসি উছলে পড়ছে আজকের আফগান কন্যার চোখে।
আফগানিস্তানের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম খামা নিউজ শুক্রবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সবুজ চোখের এক আফগান কন্যার ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে মেয়েটিকে কাবুলের রাস্তায় ভিক্ষা করতে এবং নিজের হারিয়ে যাওয়া নেশাগ্রস্ত বাবাকে খুঁজতে দেখা যায়।
খামা নিউজ জানিয়েছে, মেয়েটির নাম জয়নব। আট বছর বয়সী মেয়েটির বাড়ি পারওয়ান প্রদেশে হলেও, দারিদ্রের কারণে সে কাবুলে চলে এসেছে। বর্তমানে মা ও পাঁচ ভাইবোনের সঙ্গে সে কাবুলেই থাকে।
জয়নবের বাবা ১০ বছর ধরে মাদকাসক্ত। আট মাস আগে তিনি বাড়ি থেকে চলে যান। এরপর থেকে আর বাবার দেখা পায়নি মেয়েটি। এমনকি বাবা বেঁচে আছেন না মারা গেছেন, তাও জানে না জয়নব।
খামা নিউজের সাংবাদিক জয়নবের ছবি তুলতে চাইলে তার চাচা বাধা দেন। পেশায় কাবুল পৌরসভার পরিচ্ছন্নতাকর্মী জয়নবের চাচা বলেন, তালেবান জানিয়েছে কেউ এই পরিবারকে সাহায্য করতে চাইলে করতে পারেন। কিন্তু ছবি তোলা কিংবা ভিডিও করা যাবে না। পরে ওই সাংবাদিকের অনুরোধে জয়নবের চাচা এক তালেবান সদস্যের ফোন নম্বর দেয়। ওই তালেবান সদস্য ছবি তোলার অনুমতি দিলে তিনি জয়নবের কয়েকটি ছবি তোলেন।
জয়নবের ইচ্ছা স্কুলে যাওয়ার। ২০২১ সালের ১৫ আগস্ট ক্ষমতা দখলের পর আফগানিস্তানের হাজারো মেয়ের মতো জয়নবের স্বপ্নও হুমকির মুখে পড়েছে।
সম্প্রতি আফগানিস্তানের জনপ্রিয় ক্রিকেটার রশিদ খান জয়নবের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। একই সঙ্গে জয়নবকে স্কুলে ফেরার ব্যাপারে সাহায্যও করতে চেয়েছেন তিন।
পিএসএন/ এএপি