আগামী ৯ অক্টোবর থেকে জেলায় হিন্দু সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ উৎসব দুর্গাপূজা উদযাপনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
স্থানীয়ভাবে পল নামে পরিচিত কারিগররা দেবী দুর্গার প্রতিমাকে শেষ ছোঁয়া দিতে দিনরাত কাজ করছেন।
নগর শাখা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রশান্ত কুমার কুন্ডু জানান, মহানগরী ও জেলার নয়টি উপজেলায় মোট ৯২৫টি পূজা মণ্ডপ স্থাপন করা হয়েছে।
মহানগরীতে মোট ১২৪ টি পূজা মন্ডপ স্থাপন করা হয়েছে এবং জেলার নয়টি উপজেলায় ৮০১ টি পূজা মন্ডপ রয়েছে। তিনি বলেন, এই অঞ্চলে প্রায় ৪৫০ জন প্রতিমা নির্মাতা প্রতিমা তৈরিতে নিয়োজিত রয়েছে।
হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্য এবং সমাজের সর্বস্তরের মানুষ ইতিমধ্যে তাদের শেষ প্রস্তুতি দেখতে মন্দির ও পূজা মণ্ডপের চারপাশে ভিড় করতে দেখা গেছে।
আলাপকালে নগরীর ধর্মাবলম্বী পূজা মণ্ডপের প্রতিমা নির্মাতা শিবু পাল জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছর প্রতিমা প্রস্তুতকারীরা বেশি আয় করবে।
তিনি বলেন, “গত বছর প্রতিটি প্রতিমার জন্য আমরা ৭৫০০ থেকে ৮৫০০ টাকা পেয়েছি কিন্তু এ বছর আমরা প্রায় ৯০০০ থেকে ৯৫০০ টাকা নিচ্ছি,” তিনি বলেন, “আমরা প্রতিটি পূজা মন্ডপ শেষ করার জন্য ৫০০০০ থেকে ৬০০০০ টাকা পেয়েছি।
তিনি বলেন, প্রতিমা তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় মাটি, দড়ি, খড়, বাঁশ, পাটসহ কাঁচামালের দাম বেড়েছে।
শিবু আরও জানান, বাবার মৃত্যুর পরও তিনি এই ব্যবসা চালিয়ে আসছেন। তিনি তার ৯৫ শতাংশ কাজ শেষ করেছেন এবং তার বাকি কাজ যথাসময়ে শেষ হবে বলে তিনি আশা করেন।
ধর্মাবলম্বী পূজা মন্ডপের তত্ত্বাবধানকারী অর্ঘ্য ধর্মাবলম্বী পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি মনোশ কুমার ঘোষ বলেন, কাঁচামালের উচ্চমূল্য এবং প্রতিমা নির্মাতা, পুরোহিত ও ঢাকিদের বর্ধিত চার্জের কারণে দুর্গাপূজার প্রস্তুতি ব্যয় বেড়েছে।
প্রশান্ত কুন্ডু বলেন, ইতোমধ্যে নগর ও জেলায় অন্তত ৯৫ শতাংশ প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ হয়েছে।
খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) প্রশাসক ও খুলনা বিভাগীয় কমিশনার হেলাল মাহমুদ শরীফ নগরীর ৭১টি পূজা মণ্ডপের ব্যবস্থাপনা কমিটির কাছে ৬ লাখ ৩৫ হাজার টাকা হস্তান্তর করেন।
আলাপকালে জেলা ইউনিট পূজা কমিটির সভাপতি কৃষ্ণ সাহা বলেন, জেলা প্রশাসন জেলার নয়টি উপজেলা ও দুটি পৌরসভায় প্রতিটি পূজা মণ্ডপে ৫০০ কেজি করে চাল বিতরণ করেছে।
তিনি বলেন, “আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য প্রস্তুত হওয়ায় আমরা খুশি হয়েছি।”
দুর্গাপূজা নির্বিঘ্নে উদযাপন নিশ্চিত করতে পূজা উদযাপন কমিটির অনেক নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।
এছাড়া নগর ও জেলায় পূজা মন্ডপের আগে ও পরে পুলিশ পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে।
আলাপকালে কেএমপি কমিশনার মোঃ জুলফিকার আলী হায়দার বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ইতোমধ্যে প্রতিদিন প্রতিটি পূজা মন্ডপে যেতে শুরু করেছে।
“আমরা প্রতিটি পূজা মন্ডপ পরিচালনা কমিটিকে তাদের নিজ নিজ পূজা মন্ডপে স্বেচ্ছাসেবক এবং সিসি টিভি মোতায়েন করার জন্য অনুরোধ করছি,” তিনি যোগ করেছেন।