স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে প্রায় সপ্তাহব্যাপী আন্দোলনরত তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা সরকারের কাছ থেকে আশ্বাস পাওয়ার পর তাদের আন্দোলন প্রত্যাহার করেছে। সরকার শিক্ষার্থীদের ৬টি দাবির বিষয়ে একমত হয়েছে এবং এগুলো পূরণ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কলেজ শাখার যুগ্ম সচিব মো. নুরুজ্জামান, যুগ্ম সচিব আব্দুর রহমান এবং সরকারি তিতুমীর কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক শিপ্রা রাণী মন্ডলের সঙ্গে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ বৈঠকে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ১৫ জন প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন এবং আড়াই ঘণ্টাব্যাপী আলোচনা শেষে শিক্ষার্থীরা তাদের আন্দোলন প্রত্যাহার করেন।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী, খুব শিগগিরই ১৫ জন পিএইচডি ডিগ্রিধারী অভিজ্ঞ শিক্ষক পদায়ন করা হবে। কলেজের শিক্ষার্থীদের আবাসিক ও পরিবহন সমস্যার সমাধান করা হবে এবং কলেজ সংলগ্ন সিটি করপোরেশনের নিয়ন্ত্রণাধীন ৫ বিঘা জমি পুনরুদ্ধারের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিতুমীর কলেজের ছাত্রবাসের জন্য নির্মিত ৭টি ভবন পুননির্মাণ ও সংস্কার করা হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় গবেষণা লাইব্রেরি ও অডিটরিয়াম নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। শিক্ষক সংকটের বিষয়েও পদক্ষেপ নেওয়া হবে এবং খুব শিগগিরই ১৫২ জন নতুন শিক্ষক পদায়ন করা হবে। এছাড়া, ২০২৪-২৫ সেশনের অনার্স প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে কলেজ, মন্ত্রণালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একযোগে সিদ্ধান্ত নেবে।
আরও পড়ুন
মহাখালী ছেড়েছেন তিতুমীরের শিক্ষার্থীরা, রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক
যুগ্ম সচিব মো. নুরুজ্জামান ঢাকা মেইলকে জানিয়েছেন, তিতুমীর কলেজের স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবি আপাতত পূর্ণ হবে না।
তিনি জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজটিকে অধিভুক্তি থেকে ছেড়ে দিলেও পরবর্তী সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত এর একাডেমিক কার্যক্রম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনেই পরিচালিত হবে। তিতুমীর এখনও সাত কলেজের মধ্যে রয়েছে এবং সরকার স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবির সঙ্গে একমত নয়। তবে শিক্ষার্থীদের অন্যান্য যৌক্তিক দাবি পূরণ করা হবে।
তিনি বলেন, “আমরা আশা করি, শিক্ষার্থীরা জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করার পরিবর্তে তাদের পড়ালেখায় মনোযোগী হবে।”
উল্লেখ্য, গত এক সপ্তাহ ধরে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা তাদের কলেজকে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবি জানিয়ে আন্দোলন চালিয়ে আসছিল। আন্দোলনের মধ্যে সড়ক ও রেলপথ অবরোধের মতো কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করে তারা। সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন দাবির প্রতি সম্মতি জানানো হলেও, স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবি মেনে নেওয়া হয়নি। আন্দোলনকারীরা আশ্বাস পেয়ে তাদের আন্দোলন প্রত্যাহার করেছে, তবে পরবর্তীতে সরকারকে তাদের দাবিগুলোর পূর্ণতা নিশ্চিত করতে হবে।