কানাডায় জাস্টিন ট্রুডোর মন্ত্রীসভায় বিভিন্ন কারণে টানাপোড়েন দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যেই দুটি গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে দুজন মন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন। এরমধ্যে রয়েছেন অর্থমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড এবং আবাসনমন্ত্রী শন ফ্রেশার।
কানাডার রাজনীতিতে এ নিয়ে চলছে তোলপাড়। কানাডার স্থানীয় মিডিয়ায় বিষয়টি এখন টক অব দ্য টাউন।
অন্যদিকে জাস্টিন ট্রুডোকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছে টরন্টো স্টার সম্পাদনা পরিষদ। তারা বলছেন, কানাডা যে নেতৃত্ব চায়, সেটি দিতে জাস্টিন ট্রুডো অপারগ। দেশের স্বার্থে তাঁর পদত্যাগ করা উচিত। শুধু তাই নয় জাস্টিন ট্রুডোর নিজের দল ও বিরোধী দলও তাঁর পদত্যাগ চাইছে।
এছাড়াও সাম্প্রতিক সময়ে ট্রুডোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়টি সারা বিশ্বে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে ডোনাল্ড ট্রাম্প গভর্নর হিসেবে ট্রুডোকে আখ্যা দেওয়ার কারণে।
উল্লেখ্য ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি কানাডাকে উল্লেখ করেছেন ‘দ্য গ্রেট স্টেট অব কানাডা’ হিসেবে। আর ট্রুডোকে বলেছেন- গভর্নর জাস্টিন ট্রুডো। আগেরবার তাদের ব্যক্তিগত সাক্ষাতে তিনি ট্রুডোকে আমেরিকার ৫১তম অঙ্গরাজ্য হতে পরামর্শ দিয়েছিলেন। এবার তার সোশ্যাল মিডিয়া ‘সোশ্যাল ট্রুথ’ এ সরাসরি স্টেট এবং গভর্নর হিসেবেই উল্লেখ করেছেন তিনি।
তবে কানাডা এটিকে নিছক রসিকতা হিসেবেই নিতে চায়। কানাডিয়ান মন্ত্রীরা বলছেন- সোশ্যাল মিডিয়ায় তো আর পাবলিক পলিসি হয় না, কূটনীতিও হয় না। কাজেই সোশ্যাল মিডিয়ার বক্তব্যকে সিরিয়াসলি নেওয়ার কিছু নাই।
অন্টারিওর প্রিমিয়ার ডাগফোর্ড বলেছেন- ট্রাম্প কানাডা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় এই পোস্টটি দিয়েছেন মধ্যরাতে। ট্রাম্প যদি মধ্যরাতে ট্রুডোকে ভাবেন- তা হলে বুঝতে হবে- তাদের মধ্যে সম্ভবত ভালো সম্পর্কই আছে।
এতকিছুর পরও কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো সাফ সাফ জানিয়ে দিয়েছেন- তিনি কোথাও যাচ্ছেন না। সামনে অনেক কাজ। ঐক্যবদ্ধ হয়ে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে হবে।
অন্যদিকে অর্থমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করার পর কানাডার স্থানীয় সময় সোমবার বিকেলে দলের সংসদীয় কমিটির সভায় যোগ দেন ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড। কমিটি বৈঠকে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে এমপিরা দাঁড়িয়ে তাকে সম্মান জানান। ক্রিস্টিয়া জানিয়েছেন- তিনি এমপি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন এবং আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হবেন।
উল্লেখ্য কানাডার দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, ব্যাংক ঋণের সুদের হার বৃদ্ধি, বাড়ি ভাড়াসহ জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি পাওয়া, কানাডার সরকারের পদক্ষেপে একের পর এক ক্রমাগত নতুন অভিবাসীর আগমনের ফলে ট্রুডো সরকার ইতোমধ্যেই সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছে।
কানাডার রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, গুরুত্বপূর্ণ দুজন মন্ত্রীর পদত্যাগ ট্রুডো সরকারের মন্ত্রিসভায় টানাপোড়েনের সৃষ্টি করবে।