উপমহাদেশে সংগীতের একটি বিশেষ ধারা হলো কাওয়ালি। আর এই ঘরানার গান গেয়ে বিখ্যাত রাহাত ফতেহ আলী খান। তিনি অন্য অনেকের চেয়ে আলাদা। তবে কাওয়ালিশিল্পী তার নানা ধরনের গান ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। বয়সের হিসাবে ৫০ পার করেছেন তিনি।
১৯৭৪ সালের ৯ ডিসেম্বর পাকিস্তানের পাঞ্জাব শহরে জন্ম। বাবা ওস্তাদ ফররুখ ফতেহ আলী খান। আরেকটি পরিচয়, তিনি ওস্তাদ নুসরাত ফাতেহ আলী খানের ভাতিজা। এছাড়া তিনি পুরাণখ্যাত কাওয়ালি শিল্পী ফাতেহ আলী খানের নাতি।রাহাতকে তৈরি করেন তার চাচা ওস্তাদ নুসরাত ফাতেহ আলী খান। মাত্র তিন বছর বয়স থেকে তিনি তার চাচা ও বাবার সঙ্গে গান গাওয়া শুরু করেন। নুসরাত আলীর ছেলে নেই। উত্তরসূরি হিসেবে রাহাতকে বেছে নিয়েছিলেন তিনি। মাত্র তিন বছর বয়সে প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করেন।
ছয় বছর বয়সে আনুষ্ঠানিক কাওয়ালির প্রশিক্ষণে প্রবেশ করেন রাহাত। নুসরাত তাকে রাগ, ক্লাসিক ভোকাল প্রশিক্ষণ দেন। নয় বছর বয়সে রাহাত তার দাদার মৃত্যুবার্ষিকীতে প্রথমবারের মতো মঞ্চে ওঠেন। হাজার হাজার মানুষের সামনে প্রথম গান করেন। ১৫ বছর বয়সে ইংল্যান্ড সফরে নুসরাতের দ্বিতীয় গায়ক হিসেবে যোগ দেন রাহাত। তারপর থেকে, নুসরাতের প্রায় প্রতিটি বিদেশ সফরে ছিলেন রাহাত। নুসরাতের মৃত্যুর ৪০ দিন পর ঐতিহ্য অনুযায়ী তার স্ত্রী রাহাতকে নুসরাতের উত্তরসূরির স্বীকৃতি দেন।পাকিস্তানে এক ডজন একক অ্যালবাম প্রকাশ করার পর রাহাত তার সংগীতকে বিশ্ব শ্রোতাদের কাছে নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নেন।
১৯৯৮ সালের তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন নির্মাতা পূজা ভাট। জানান, তার পরের সিনেমায় রাহাতের একটি গান ব্যবহার করতে চান। এভাবেই ২০০৩ সালে মুক্তি পাওয়া পূজার সিনেমা ‘পাপ’-এ জায়গা পায় রাহাতের ‘মান কি লাগন’ গানটি। বলিউডে প্লেব্যাক গায়ক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন রাহাত।পরের দেড় দশকে তাঁর কণ্ঠে পাওয়া গেছে ‘জিয়া ধাড়াক ধাড়াক’, ‘ন্যায়না’, ‘বোল না হালকে হালকে’, ‘জাগ সুনা সুনা’, ‘দিল তো বাচ্চা হ্যায় জি’, ‘তেরি মাস্ত মাস্ত দো ন্যায়’, ‘তেরি মেরি’র মতো জনপ্রিয় সব গান।
রাহত ফতেহ আলী খানের অ্যালবাম-গানের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল- ‘ম্যায় নে উসে দেখা হ্যায়’, ‘তাসবির, ‘বুলবুল কো ফুল’, জিনান দে মাহি দুয়ার ভাসদে’, ‘মা অর ধী’ ‘তার মেরি বেরি’, ‘আঁখ সে আঁখ মিলাও’, ‘কাব্বে ওয়ালি গালি ভিচ ইয়ার দা মুকান’, পিলাদে সাকিয়া, ‘আলী মওলা আলী’, ‘সুফিয়ানা কালাম’, রাবা মেরা ইয়ার মর দে’, মেরি তৌবা করো কাবুল’, ‘সাহের কারিব হাই’, ‘পরদেশিয়া’, আখ্যান হিজর তেরে নে লাললিয়ান’, ‘আঁখ সে আঁখ মিলাও’, ‘কোই উমেদ’, বিনা মাহি, ‘খুনি আখিয়ান, ‘চণ্ডীগড় দা চাসকা’ অন্যতম। সূত্র: ওয়ার্ড মিউজিক সেন্টার