খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার খালেকের সাথে খুলনা টিভি রির্পোর্টাস ইউনিটির (কেটিআরইউ) নবনিবার্চিত আহবায়ক কমিটির সদস্যবৃন্দ সৌজন্য সাক্ষাৎ ও মতবিনিময় করেছেন। বুধবার দুপুরে খুলনা সিটি করপোরেশনের জিআইজেড মিলনায়তনে এ সৌজন্য সাক্ষাৎ ও মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় কেটিআরইউ আহবায়ক কমিটিসহ সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ প্রেসক্লাব, সাংবাদিক ইউনিয়ন ও কেটিআরইউ’র সার্বিক বিষয় সিটি মেয়রকে অবহিত করেন এবং সিটি মেয়রকে ফুলের শুভেচ্ছা জানান। সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ বলেন, খুলনার প্রয়াত সাংবাদিক হুমায়ুন কবীল বালু, আবু সাদেক, আইয়ুব হোসেন, আশরাফ উদ্দিন মকবুল, মানিক চন্দ্র সাহা, সাহাবুদ্দিন আহমেদ, রফিকুজ্জামান খোকনসহ সাংবাদিকরা দেশে-বিদেশে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। কিন্তু বর্তমানে সাংবাদিকদের প্রিয় প্রতিষ্টান খুলনা প্রেসক্লাব, খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়ন(কেইউজে) ও খুলনা টিভি রির্পোর্টাস ইউনিটি (কেটিআরইউ)সহ সবগুলো প্রতিষ্টান কতিপয় অসাংবাদিক ও অপেশাদাররা দখলদারিত্ব চালিয়ে ধ্বংস করছে। ইউনিয়নে নতুন ১১৪ জনকে সদস্য পদ দেওয়া হয়েছে। সেখানে ১৫জনও পেশীজীবী সাংবাদিক নন। উল্টো মামলা চলাকালে বিশেষ সাধারণ সভা ডেকে সেখানে ব্যানারে নাম লিখে মালিকদের মঞ্চে রেখে প্রকাশ্যে সাধারণ সদস্যদের হুমকি প্রদান করা হয়েছে। তারা ইউনিয়নের দখলদ্বারিত্ব বজায় রাখার জন্য শ্রম আইন পরিপন্থী সংশোধনী অনুমোদন করে পদ রক্ষার চেষ্টা করছে। স্থানীয় পত্রিকার কোন কোন মালিক সাংবাদিক সংগঠনের দখলদ্বারিত্ব ও অসাংবাদিকদের প্রদান করা সদস্য পদ বাতিলের দাবীতে সোচ্চার সাংবাদিকদের চাকুরিচ্যুতির হুমকিও দিচ্ছে।
এছাড়া ঐতিহ্যবাহি খুলনা প্রেসক্লাবকে অনৈতিক স্থানে পরিণত করেছে বর্তমান কমিটি। যত্রতত্র প্রকাশ্যে চলছে চাঁদাবাজি ও হুমকি। খুলনা প্রেসক্লাবে ১৮৪ সদস্যের মধ্যে ৬০/৭০ জনই অসাংবাদিক। তাঁরা আদৌ পেশার সঙ্গে সম্পৃক্ততো নন। বরং তারা বর্তমান নেতাদের পরিবারের সদস্য। বর্তমান সভাপতি নজরুল ইসলাম সভাপতি স্থানীয় পত্রিকার সম্পাদক হলেও তিনি ক্ষমতায় থাকার জন্য ঢাকার একটি পত্রিকার বিশেষ প্রতিনিধি ও সাধারণ সম্পাদক মামুন রেজা জাতীয় মিডিয়ায় কাজ করলেও স্থানীয় একটি পত্রিকার বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ প্রদর্শন করে ভোটার তালিকায় অণৈতিকভাবে কোটা পরিবর্তন করে পদ দখল করেছেন।
সবশেষ খুলনা টিভি রিপোর্টার্স ইউনিটির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী নির্বাচন আয়োজনে ব্যর্থ ও মেয়াদত্তীণ কমিটি বিলুপ্ত করে সাধারণ সভার মাধ্যমে একটি এডহক কমিটি গঠন করা হয়েছে। এডহক কমিটির সাধারণ সভায় সংগঠনের মোট ২৩ সদস্যের মধ্যে সংগরিষ্ঠ সদস্যদের সম্মতিতে মোহনা টিভির ব্যুরো প্রধান ও নগর আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মো. মুন্সি মাহবুব আলম সোহাগ ও এশিয়ান টিভির প্রতিনিধি বাবুল আখতার সদস্য সচিব করে ৫ সদস্যের এডহক কমিটি গঠন হয়। শুধু তাই নয় সাধারণ সভায় কেটিআরইউ’র বিলুপ্ত ৯ সদস্যের নির্বাহী কমিটির ৬ জন আলোচনায় অংশ নেন এবং আহবায়ক কমিটি গঠনের সম্মতি প্রদান করেন। সবশেষ ২০২২ সালের ১৯ মার্চ কেটিআরইউ’র এক বছরের কমিটি নির্বাচিত হয়। দুই বছরেও ওই কমিটি কোন সভা করতে ও নির্বাচন দিতে ব্যর্থ হন। কিন্তু ক্ষমতা ধরে রাখতে সাধারণ সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে গঠিত এডহক কমিটিকে পাশ কাটিয়ে ও সংগঠনের নাম ব্যবহার করে মল্লিক সুধাংশু ও তরিকুল ইসলাম নানা অপ্রচার চালাচ্ছে। পেশাদার সাংবাদিকদের হয়রানী, হুমকী-ধামকি দিচ্ছে। ফলে অপেশাদার সাংবাদিকদের অনৈতিক দাপট, ক্ষমতার অপব্যবহার ও সমাজে সাংবাদিকদের ভাবমূর্তি ক্ষুন্নের এ অবস্থা থেকে মুক্তি করতে পেশাজীবী সাংবাদিক ও সংবাদকর্মীরা সকলের সগহযোগীতা কামনা করেন।
মতবিনিময় সভায় সিটি মেয়র তালুকদার খুলনা টিভি রির্পোর্টাস ইউনিটির (কেটিআরইউ) আহবায়ক কমিটির সদস্যবৃন্দকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, খুলনার উন্নয়নে সাংবাদিকরা বরাবরই বিশেষ ভুমিকা রেখে আসছে। সাংবাদিকদের বস্তুনিষ্ট ও প্রকৃত সংবাদ সাধারন মানুষ, সরকারী অফিসার ও জনপ্রতিনিধিদেরকে দেশ ও জনগনের সেবায় উদ্বীপ্ত করে থাকে। তিনি টেলিভিশনের সাংবাদিকদের সিটি করপোরেশনসহ দেশের উন্নয়ন কর্মকান্ডের চিত্র তুলে ধরতে আরও বেশী ভুমিকা পালনের আহবান জানান। একই সাথে তিনি সিটি করপোরেশন ও সরকারের বিভিন্ন বিভাগের অনিয়ম-দূর্নীতি এবং খারাপ দিকুগলো তুলে ধরতেও টিভি সাংবাদিকদের অনুরোধ জানান। সাংবাদিকরা এগুলো তুলে ধরলে সবাই তাদের কাজ শুধরে নেয়ার সুযোগ পাবে। সিটি মেয়র সাংবাদিকদের সংগঠন বিশেষ করে প্রেসক্লাব, সাংবাদিক ইউনিয়নসহ বিভিন্ন সংগঠনের বিভিন্ন অনিয়মের কথা তুলে ধরে আরও বলেন, সাংবাদিকদের নিজেদের মধ্যের অনিয়ম সবার আগে দুর করতে হবে। সংগঠনগুলোতে প্রৃকত সাংবাদিকদের অবস্থান নিশ্চিতে সকল অনিয়ম ও অসাংগঠনিক তৎপরতা বন্ধ এবং যারা এটার সাথে জড়িত তাদের বিষয়ে সাংবাদিকদেরকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে সাংবাদিকরা অনুরোধ জানালে জনপ্রতিনিধি হিসেবে সহযোগীতা দেবেন বলেও জানান তিনি।
সিটি মেয়রের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন কেটিআরইউ‘র নবনিবার্চিত আহবায়ক মো: মুন্সি মাহবুব আলম সোহাগ, কেটিআরইউ’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এটিএন বাংলার বিভাগীয় প্রধান এসএম. হাবিব, প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি এসএম. জাহিদ হোসেন, কেটিআরইউ’র সাবেক সভাপতি সুনীল দাস, সাবেক সাধারন সম্পাদক শেখ লিয়াকত হোসেন, আহবায়ক কমিটির সদস্য সচিব বাবুল আকতার, সদস্য ডিবিসি টেলভিশনের ব্যুরো প্রধান মো: আমিরুল ইসলাম, আনন্দ টিভির ব্যুরো প্রধান আমজাদ হোসেন লিটন ও বৈশাখী টিভির প্রতিনিধি শেখ হেদায়েতুল্রাহ, সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারন সম্পাদক মো: শাহ আলম, মোজাম্মেল হক হাওলাদার, মো: সাঈয়েদুজ্জামান সম্রাট, বিএফইউজে সদস্য কৌশিক দে ও হেদায়েত হোসেন মোল্লা, কেটিআরইউ’র সাবেক প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক দানিয়েল সুজিত বোস, যুগ্মসম্পাদক এসএম. মনিরুজ্জামান, সাবেক কোষাধ্যক্ষ এমডি. অসীম, সদস্য তরিকুল ইসলাম ডালিম, টিভি ক্যামেরা জার্নালিষ্ট এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি আবু সাইদ, সাবেক সাধারন সম্পাদক হাসান আল-মামুন, গ্লোবাল টিভির ব্যুরো প্রধান আনিসুর রহমান কবীর, দেশ সংযোগের নির্বাহী সম্পাদক আবু নূরাইন খোন্দকার, এশিয়ান টিভির প্রতিনিধি আব্দুল আজিজ, দেশ সংযোগের মো; শহীদুল হাসান, আমিরুল ইসলাম বাবু, দৈনিক খুলনার আসাফুর রহমান কাজল,প্রবাহের মো: রুহুল আমীন, ফটো সাংবাদিক সাগর সরকার, মো: জিলহাজ্জ্ব হাওরাদার, পারভেজ খান প্রমুখ
প্রেস রিলিজ