খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কেইউ) কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ আধুনিক স্থাপত্যশৈলী ও ইসলামি ঐতিহ্যের এক অনন্য মিশ্রণ। ২০২০ সালের ২৮ আগস্ট উদ্বোধন হওয়া এই মসজিদটি এক একর জমির উপর নির্মিত, যেখানে একসাথে ৩,০০০ মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন। মধ্যপ্রাচ্য ঘরানার বিশাল গম্বুজ এবং প্রাকৃতিক বাতাস চলাচলের সুবিধা থাকায় মসজিদটি দিনভর শীতল থাকে, যা এয়ার কন্ডিশনিংয়ের প্রয়োজনীয়তা দূর করে।
মসজিদটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রে অবস্থিত, যা তিনটি ছাত্র হল, একাডেমিক ভবন ১, ২ ও ৩ এবং কাজী নজরুল ইসলাম কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের নিকটবর্তী। এই অবস্থান মসজিদটিকে শিক্ষার্থী ও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের জন্য সহজলভ্য করেছে।
২০০৩ সালে তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. আব্দুল কাদের ভূঁইয়ার নেতৃত্বে মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। প্রথমে স্থাপত্য বিভাগের শিক্ষক মুহাম্মদ আলী নাকি নকশা প্রণয়ন করেন। তবে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের পর নির্মাণকাজ দীর্ঘদিন বন্ধ থাকে। ২০১৪ সালে অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামানের নেতৃত্বে নির্মাণকাজ পুনরায় শুরু হয় এবং পরবর্তীতে সহযোগী অধ্যাপক শেখ মারুফ হোসেন চূড়ান্ত নকশা সম্পন্ন করেন।
মসজিদের সিনিয়র ইমাম ও খতিব মুফতি আব্দুল কুদ্দুস জানান, বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিমের নেতৃত্বে মসজিদ ও বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মসজিদ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক শরীফ মোহাম্মদ খান জানান, মসজিদকেন্দ্রিক বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের প্রক্রিয়ায় রয়েছে।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম বলেন, “এই মসজিদ শুধু একটি ধর্মীয় স্থাপনা নয়, এটি শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য একটি আধ্যাত্মিক কেন্দ্র। এর স্থাপত্যিক সৌন্দর্য ও আধ্যাত্মিক গুরুত্ব খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে।”
মসজিদের অনন্য নকশা ও আধ্যাত্মিক পরিবেশ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে দর্শনার্থীদের আকৃষ্ট করছে, যারা নামাজ আদায়ের পাশাপাশি এর স্থাপত্যিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসেন।