বাজারে পানি পানের জন্য নানা ধরনের বোতল পাওয়া। এর মধ্যে অধিকাংশ বোতলই প্লাস্টিকের। কিন্তু প্লাস্টিকের বোতলে যে উপাদানগুলো থাকে তা বিসফেনল এন্ডোক্রাইন সিস্টেম, ইমিউন সিস্টেম, স্নায়ুবিক, প্রজননগত ও বৃদ্ধিগত বিকাশের জন্য ক্ষতিকর। এই উপাদানগুলো শরীরে প্রবেশ করলে ডায়াবেটিস, স্থূলতা ও ক্যানসারের ঝুঁকি সৃষ্টি করে। তাই প্লাস্টিকের পানির বোতলের পরিবর্তে স্টেইনলেস স্টিল বা গ্লাস বা পলিকার্বোনেটেড বা অ্যালুমিনিয়ামের বোতল বা বিপিএমুক্ত প্লাস্টিকের পানির বোতল ব্যবহার করতে পারেন, যাতে কোনো ধরনের রাসায়নিকের প্রলেপ দেওয়া নেই। অধিকাংশ প্লাস্টিকের বোতলের গায়ে নকশা কাটা থাকে। আর ধাতব বা অ্যালুমিনিয়ামের বোতলের গায়ে অনেকে নিজের পছন্দমতো ছবি বা নকশা করে নেন। কিছু বোতলের ভেতরেই ‘স্ট্র’ যুক্ত থাকে। বেশিক্ষণ পানি ঠান্ডা রাখার সুবিধাও মিলবে অনেক বোতলে। তাই পানির বোতল ব্যবহারে হতে হবে যত্নশীল।
নিউ মার্কেটের চন্দ্রিমা সুপার মার্কেটের নিচতলার আসাদ এন্টারপ্রাইজের মালিক আসাদ জানান, বাজারে প্লাস্টিক, কাচ, অ্যালুমিনিয়াম ও ধাতবের পানির বোতল পাবেন অধিকাংশ দোকানে। এর মধ্যে সব সময় বহন করার জন্য আছে প্লাস্টিক ও অ্যালুমিনিয়ামের বোতল। বাড়িতে পানি রাখার জন্য ব্যবহার করতে পারেন কাচ ও ধাতব পানির পাত্রগুলো। নানা রং ও আকৃতির বোতল আছে। বাচ্চাদের জন্য আছে কার্টুনের ছবিসহ বোতল। নানা রকম নকশা আঁকা পানির বোতলও ভালো চলছে।
স্টেইনলেস স্টিল : স্টেইনলেস স্টিলের বোতল কিছুটা ভারী মনে হতে পারে, কিন্তু এগুলোর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। তাই এ ধরনের বোতল গরম আবহাওয়ায় বা এতে গরম তরল নিলেও তা থেকে কোনো রাসায়নিক উপাদান পানিতে মেশে না।
কাচ : কাচের তৈরি পানির বোতলগুলো একটু ভারীই হয়। কিন্তু এটা ব্যবহারের জন্য সম্পূর্ণ নিরাপদ। এ ধরনের বোতলে কোনো ধাতব উপাদান থাকে না বলে এর ভেতর পানি নিলে বিষাক্ত হওয়ার আশঙ্কা নেই। তা ছাড়া এ ধরনের বোতল পরিবেশবান্ধব এবং বারবার ব্যবহার করা যায়। পানির স্বাদও ঠিক থাকে। এই বোতলগুলোর অসুবিধা হচ্ছে ভঙ্গুর হয় এবং খুব গরম বা খুব ঠান্ডা পানি রাখা যায় না।
অ্যালুমিনিয়াম : হালকা ও টেকসই হওয়ায় অ্যালুমিনিয়ামের বোতল হতে পারে চমৎকার পছন্দ। এরা বিপিএমুক্ত, তাই ব্যবহার করা নিরাপদ। এ ধরনের বোতল ব্যবহার করার অসুবিধা হচ্ছে একবার হাত থেকে পড়লে টোল পড়ে। এ ছাড়া কিছু কিছু অ্যালুমিনিয়ামের বোতলে এনামেলের প্রলেপ দেওয়া থাকে, যা নিরাপদ বিবেচনা করা হয় না। কেনার সময় নিশ্চিত হয়ে নিন যে বোতলটি এ ধরনের প্রলেপবিহীন কি না।
পলিকার্বোনেট : পলিকার্বোনেটেড বোতল তাপে ক্ষয় হয় না। তাই এ ধরনের বোতল ব্যবহার করা নিরাপদ। এ ছাড়া মাইক্রোওয়েভ-সেফ প্লাস্টিক এবং এতে থ্যালেট থাকে না বলে এর ব্যবহার নিরাপদ।
দরদাম : প্লাস্টিকের বোতলের দাম পড়বে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা। কাচের বোতলের দাম পড়বে ২০০ থেকে ৪০০ টাকা। ধাতব বোতল কিনতে পারবেন ২৫০ থেকে ৬০০ টাকায়। এখানে নানা ধরনের ব্র্যান্ডের বোতলও পাবেন। সেগুলোর মূল্য নির্ধারণ করাই আছে। ১৫০ থেকে শুরু করে ৭০০ টাকার মধ্যেই কিনে নিতে পারবেন আপনার পছন্দসই বোতল। শিশুদের জন্য নিউ মার্কেটে পানির পট ১০০ টাকাতেও পাবেন। ফুটপাতে পানির বোতল কিনতে পারবেন ৬০ থেকে ১০০ টাকার মধ্যে।
কোথায় পাবেন : পানির বোতল দোকান ও ফুটপাতে দুই জায়গাতেই পাবেন। তবে বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্স, সীমান্ত স্কয়ার, গাউছিয়া, চাঁদনী চক, নিউ মার্কেট, গুলশান ডিসিসি মার্কেট, মীনা বাজার, স্বপ্ন লাইফ, মোস্তফা মার্কেটসহ প্রায় সব শপিং কমপ্লেক্সের ক্রোকারিজের দোকানগুলোতে পানির বোতল খুঁজে পাবেন। এ ছাড়া বিভিন্ন এলাকার রাস্তার পাশে পানির বোতল পাওয়া যাবে।
সাবধানতা
বোতলের মধ্যে পানি দীর্ঘ সময় ধরে রেখে দেবেন না। বোতলের রং যদি পরিবর্তন হয়ে যায় তাহলে বোতল ফেলে দিন। রং নষ্ট হয়ে যাওয়া বোতল ব্যবহার করবেন না। বাজারে যেসব মিনারেল ওয়াটার বোতল পাওয়া যায় সেসব পানি পানের পর আর ব্যবহার না করাই ভালো।
পি এস/এন আই