করোনার প্রথম থেকেই ফ্রন্টলাইনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন চিকিৎসকরা। সংক্রমণ যতই বাড়ুক ঘরে বসে থাকার সুযোগ নেই তাদের।শত কঠিন বাস্তবতায়ও তাদের চালিয়ে যেতে হয় অপারেশন কিংবা রোগীর সেবা। এক পর্যায়ে তারাও ক্লান্ত হন। তবু চালিয়ে যান কাজ। সেই ক্লান্ত শরীর-মন চাঙ্গা করতে এবার ভিন্ন পন্থা অবলম্বন করলেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের তিন চিকিৎসক।
ক্লান্ত মন-শরীর চাঙা করতে অস্ত্রোপচারের করিডোরে ওটির ড্রেস পরেই গানের তালে নাচলেন তিনজন চিকিৎসক। তাদের সেই নাচের ভিডিও ভাইরাল হয়ে গেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
ভিডিওতে দেখা যায়, একজন পুরুষ চিকিৎসক ও দু’জন নারী চিকিৎসক গানের তালে নাচছেন। গানটি ছিল সিলেটের ভাষায়। গান বাজছে ‘আইলারে নয়া দামান আসমানেরও তেরা…..। ’
এ বিষয়ে কথা হয় ঢামেক হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক শাশ্বত চন্দন ও আনিকা ইবনাত শামার সঙ্গে। ডা. শাশ্বত চন্দন বলেন, আমাদের চিকিৎসকরা করোনারোগীদের চিকিৎসা দিতে দিতে ক্লান্ত। সেই থেকে গত কয়েকদিন ধরে মাথায় একটা আইডিয়া ঘুরছিল। তখন আনিকা ও অনারেবল মেডিক্যাল অফিসার কৃপা বিশ্বাসের সঙ্গে শেয়ার করি।
ডা. শাশ্বত চন্দন বলেন, গত ২৬ এপ্রিল ঢামেক হাসপাতালের অস্ত্রোপচার সার্জারি করিডোরে ডিউটিরত অবস্থায় নাচটি করি। কিন্তু ভাবিনি এটা এতো ভাইরাল হয়ে যাবে। এর আগেও কিন্তু ভারতে ও বিভিন্ন প্রদেশে চিকিৎসকদের এরকম ভিডিও হয়েছে। এই করোনাকালে নিজেরাসহ অন্য চিকিৎসকদের মানসিক অবস্থা চাঙ্গা করার জন্যই এই নাচের আয়োজন করি।
‘ঢামেকে অনেকেই করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। তিনি নিজে করোনা থেকে মুক্তি পেয়েছেন। এছাড়া নাচে অংশগ্রহণকারী এক নারী চিকিৎসক করোনা থেকে মুক্ত হয়েছেন। ’
ডা. আনিক বলেন, আমি আর কৃপা বিশ্বাস দু’জনেই নাচ জানতাম। চন্দন বললো, এই করোনায় চিকিৎসকদের চাঙা রাখতে একটা নাচের ভিডিও করি। আমরাও রাজি হয়ে গেলাম। চৌদ্দ সেকেন্ডের ভিডিও ছিল এটি। আমাদের চিকিৎসরাই বেশি দেখেছেন এবং কমেন্টে আমাদের প্রশংসা করেছে। ভাবতেই পারিনি এতো শেয়ার কমেন্ট রিঅ্যাক্ট হবে। আমরা খুবই আনন্দিত যে আমাদের এই ভিডিও আমাদের চিকিৎসক ও অন্যদের আনন্দ দিতে পেরেছে। চিকিৎসকদের মানসিক অবস্থা আরো চাঙ্গা করতে এই ভিডিওটি করেছি।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক বলেন, ঢামেকে বেস্ট চিকিৎসকরা আছেন। বেস্ট ইন্টার্নরা পড়াশোনা করছে। এই করোনায় চিকিৎসকরা ২৪ ঘণ্টা ডিউটি করে। মন কিছুটা চাঙা করার জন্য এই নাচের ভিডিওটা ব্যক্তিগতভাবে আমারও খুব ভালো লেগেছে। করোনার সময় মানসিকভাবে চিকিৎসকদের আরো চাঙ্গা রাখতে এই ভিডিওটা খুবই ভালো হয়েছে।