গুলশানের সুবাস্তু টাওয়ারে নিজ বাসায় সিরিয়াল কিলার এরশাদ শিকদারের মেয়ে জান্নাতুল নওরিন এশা (২২) গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানিয়েছে তার পরিবার। শুক্রবার (৪ মার্চ) সুবাস্তু টাওয়ারের নবম তলা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
পরিবারের অভিযোগ, প্রেমিকের সঙ্গে ঝগড়া করে আত্মহত্যা করেছেন এশা। তবে তিনি আত্মহত্যা করেছে নাকি তার মৃত্যু অন্য কোনো কারণে হয়েছে এ বিষয়ে এখনও নিশ্চিত নয় পুলিশ।
পুলিশ বলছে, এশার মরদেহ তারা ঝুলন্ত অবস্থায় পায়নি। পুলিশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে এশার মরদেহ পেয়েছেন। পরিবারের পক্ষ থেকে আত্মহত্যার যে দাবি করা হচ্ছে, সে বিষয়ে পুলিশ এখনও নিশ্চিত নয়। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন ও তদন্তের মাধ্যমে এশার মৃত্যুর কারণ এবং কীভাবে তার মৃত্যু হয়েছে তা জানার চেষ্টা করবে পুলিশ।
এশা মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া সন্ত্রাসী এরশাদ শিকদারের মেয়ে বলেও নিশ্চিত করেছে পুলিশ।
এ বিষয়ে শুক্রবার (৪ মার্চ) রাতে গুলশান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আমিনুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ আমরা এখনও পাইনি। এশার মৃত্যু কীভাবে হয়েছে তা আমরা এখনও নিশ্চিত না। তার মরদেহ ঝুলন্ত অবস্থায় তার বাসায় পাইনি। আমরা ঢামেক হাসপাতালের মর্গে এশার মরদেহ পেয়েছি। মরদেহের সুরতহাল হয়েছে এবং ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। প্রতিবেদনে নিশ্চিত হওয়া যাবে এশার মৃত্যু কীভাবে হয়েছে। তাই এখনই বলতে পারব না তিনি আত্মহত্যা করেছেন কিনা।
এশার মৃত্যুর কারণ কী হতে পারে- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে এ বিষয়ে কাজ করব। যেহেতু ঘটনাটি ঘটেছে, তদন্ত করে দেখছি তার মৃত্যু কী কারণে হয়েছে।
তবে এশার মৃত্যুর জন্য তারা প্রেমিক প্লাবন ঘোষকে দায়ী করছে তার পরিবার। এ বিষয়ে এরশাদ শিকদারের দ্বিতীয় স্ত্রী ও এশার মা সানজিদা নাহার বলেন, প্লাবন ঘোষ নাম একটি ছেলের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল এশার। গতকাল এশা প্লাবনের সঙ্গে দেখা করতে বের হয়েছিল। পরে রাতে প্লাবন এশাকে বাসার নিচে নামিয়ে দিয়ে যায়। তখন তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়েছিল বলে জানতে পেরেছি।
তিনি বলেন, তারপর বাসায় এসে ফোন ও দরজা বন্ধ করে ফেলে এশা। সকালে এশার সাড়া-শব্দ না পেয়ে বিল্ডিংয়ের নিরাপত্তাকর্মীদের ডেকে ভেতরে প্রবেশ করি। প্রবেশ করে আমরা ফ্যানের সঙ্গে এশার মরদেহ ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পাই।
তিনি বলেন, আমরা ধারণা করছি, এশা তার প্রেমিকের সঙ্গে ফোনে কথা বলা অবস্থায় আত্মহত্যা করেছে।
তবে বিষয়টি কীভাবে নিশ্চিত হয়েছেন জানতে চাইলে সানজিদা নাহার বলেন, আমি এখন ফেরিঘাটে আছি, মেয়ের মরদেহ বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছি। এখন আর কথা বলতে পারব না।
এদিকে এশার প্রেমিক প্লাবন ঘোষের মোবাইল ফোন নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
উল্লেখ্য, শুক্রবার ভোরে অচেতন অবস্থায় এশাকে উদ্ধার করে পরিবারের লোকজন ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পিএসএন/এমঅাই