আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মন্ত্রী ডা. দীপু মনি এবং সাবেক ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়কে আদালতে নেওয়ার পথে হামলার ঘটনা ঘটেছে। বিক্ষুব্ধ আইনজীবীরা তাদের ওপর হামলা করেন।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মুদি দোকানি আবু সায়েদ হত্যা মামলায় মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) দীপু মনি ও আরিফ খান জয়কে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক তোফাজ্জল হোসেন।
শুনানি শেষে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সুলতান সোহাগ উদ্দিন দীপু মনিকে ৪ দিন ও জয়কে ৫ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।
আদালতে নেওয়ার পথে এবং শুনানিকালে দীপু মনি ছিলেন খুব বিমর্ষ। শুনানিকালে কাঁদতে থাকেন তিনি।
মঙ্গলবার বেলা ৩টা ২০ মিনিটের দিকে তাদের আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় সিএমএম আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। শুনানিকালে বেলা পৌনে ৪টার দিকে তাদের এজলাসে তোলা হয়।
তাদের আদালতে হাজির করাকে কেন্দ্র করে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা ও কিছু সাধারণ মানুষ আদালত প্রাঙ্গণে অবস্থান নেন। দীপু মনি ও আরিফ খান জয়কে যখন সিএমএম আদালতের গেইট দিয়ে প্রিজন ভ্যানে করে নিয়ে আসা হচ্ছিল তখন একজন রাস্তায় শুয়ে পড়েন। তিনি দীপু মনির ফাঁসির দাবি জানান। পরে সেখান থেকে উঠে গেলে তাদের নিয়ে গাড়ি চলে যায় সিএমএম আদালতের হাজতখানায়। বেলা পৌনে ৪টার দিকে তাদের হেলমেট পরিয়ে হাজতখানা থেকে এজলাসে তোলা হয়।
আইনজীবীদের বিক্ষোভের মুখে তাদের এজলাসে তুলতে বেগ পেতে হয় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে। আইনজীবীদের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি করে তাদের আদালতের দ্বিতীয় তলায় তোলা হয়। একপর্যায়ে এজলাসে তাকে কাঁদতে দেখা যায়।
শুনানির শুরুতে আসামিকে কেন হাতকড়া পরানো হয়নি, তা নিয়ে ক্ষোভ জানান বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা। তখন তাদের জানানো হয়, জয়ের হাতে হাতকড়া আছে। দীপু মনি মহিলা হওয়ায় তার হাতে হাতকড়া পরানো হয়নি।
এজলাসে আইনজীবীদের হই-হুল্লোড়ের মধ্যেই শুনানি হয়। রাষ্ট্রপক্ষে ইন্সপেক্টর মো. আসাদুজ্জামান আসামিদের ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করেন। বিএনপিপন্থী আইনজীবীরাও ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করেন। এরই মাঝে তাদের পক্ষে একজন আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। বেলা ৩টা ৫০ মিনিটের দিকে জয় আদালতের উদ্দেশ্যে কথা বলতে যান। এ সময় তীব্র বিরোধিতা করেন উপস্থিত আইনজীবীরা। তারা চিৎকার, হই-হুল্লোড় করতে থাকেন।
উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত বলেন, তারা এজাহার নামীয় আসামি নয়, সন্ধিগ্ধ আসামিকে হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মহিলা হওয়ায় দীপু মনির চারদিন এবং আরিফ খান জয়ের পাঁচ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন আদালত।
এতে সন্তুষ্ট হননি বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা। তার ভুয়া, ভুয়া স্লোগান দিতে থাকেন। এরই মাঝে এজলাস ত্যাগ করেন বিচারক।
এরপর দীপু মনি ও আরিফ খান জয়কে নিচে নামানো হয়। এরই মাঝে তাদের ওপর হামলা করেন আইনজীবীরা। এ সময় দীপু মনি চিৎকার করে ওঠেন। আর জয় তাকিয়ে দেখেন। পরে দ্রুত তাদের হাজতখানায় নিয়ে যাওয়া হয়।