সম্প্রতি চাঁদের নিচে উজ্জ্বল এক বিন্দু নিয়ে শুরু হয়েছে নানান জল্পনা কল্পনা। আকাশে বাঁকা চাঁদ, ঠিক তার নিচে শুকতারা। অনেকেই একে আরবি হরফ বা এর মতো দেখতে বলছেন। তবে আসলে এটি কী? শুধু বাংলাদেশেই না, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকেও এমন দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। দৃশ্যটি দেখার পর কৌতূহলী মানুষ এ নিয়ে আলোচনা শুরু করেছে। কেউ কেউ দৃশ্যটি ক্যামেরায় ধারণও করেছেন।
কলকাতার ইনস্টিটিউট অব অ্যাস্ট্রোনমি স্পেস অ্যান্ড আর্থ সায়েন্সের ডিরেক্টর দেবী প্রসাদ দুয়ারী জানিয়েছেন, আসলে চাঁদের নিচে যে উজ্জ্বল বিন্দু দেখা যাচ্ছে, তা হলো শুক্রগ্রহ। পৃথিবীর নিরিখে মনে হচ্ছে যেন শুক্রের কাছে চলে এসেছে চাঁদ।
তবে বিশ্বের মানুষ আরও একটি চমৎকার দৃশ্যের সাক্ষী হতে চলেছেন এ সপ্তাহেই। শুক্র এবং বৃহস্পতির মধ্যে সংযোগের কয়েক সপ্তাহ পরে, স্টারগেজাররা রাতের আকাশে গ্রহগুলো আরেকটি প্যারেডের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে।
২৫-৩০ মার্চের মধ্যে পাঁচটি গ্রহ সারিবদ্ধ হয়ে পৃথিবী বিষুবতে প্রবেশ করে। বৃহস্পতি, বুধ, শুক্র, ইউরেনাস এবং মঙ্গল আকাশে সারিবদ্ধ হবে। এটিকে বিজ্ঞানীরা গ্রহগুলোর একটি বিরল কুচকাওয়াজ বলে অভিহিত করেছেন।
এই পাঁচটি গ্রহ মার্চের শেষ দিনগুলোতে একে অপরের চারপাশে ঘুরতে থাকে, ২৮ মার্চ এগুলোকে সবচেয়ে পরিষ্কার দেখা যাবে আকাশে। সূর্যাস্তের ঠিক পরে, পাঁচটি গ্রহ বিরল প্রান্তিককরণে একত্রিত হবে। তবে তারা একটি সরল রেখায় সারিবদ্ধ হবে না। পাঁচটি গ্রহ সূর্যাস্তের কিছুক্ষণের মধ্যে দিগন্তের ঠিক উপরে একটি চাপ-আকৃতির চেহারা তৈরি করবে।
জেট প্রপালশন ল্যাবরেটরি (জেপিএল) বলেছে যে চাঁদের নিচে এই সময়টাতে শুক্র দেখা যাওয়ার কারণ হচ্ছে ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে শুক্র এবং বৃহস্পতি সংযোগের পরে তাদের নিজস্ব পৃথক পথে চলতে থাকে।
অন্যদিকে বৃহস্পতি এবং বুধ প্রায় এক ঘণ্টার জন্য সূর্যাস্তের শুরুতে দিগন্তের কাছাকাছি উপস্থিত হবে। সূর্যের উজ্জ্বল রশ্মিতে তাদের শনাক্ত করা কঠিন হতে পারে। এদিকে শুক্র, বৃহস্পতির উপরে ইউরেনাসের সঙ্গে অবস্থান করবে। শুক্র গ্রহটি ছেড়ে দেওয়া হবে।
মঙ্গল গ্রহ মার্চের শেষ দিনগুলোতে দীর্ঘ সময়ের জন্য আকাশে ঝুলে থাকবে। উজ্জ্বল লাল গ্রহটি ২৫ থেকে ২৭ মার্চ পর্যন্ত অর্ধচন্দ্রের উপরে এবং সামান্য তার বাম দিকে থাকবে। তবে এটি ২৮ মার্চ চাঁদের নীচে চলে যাবে।
এর আগে সবশেষ গত গ্রীষ্মে বুধ, শুক্র, মঙ্গল, বৃহস্পতি এবং শনি গ্রহ সারিবদ্ধ হয়েছিল। ১৮ বছর পর যা দেখা গিয়েছিল। এরপর এই ঘটনার সাক্ষী হবে বিশ্ববাসীকে অপেক্ষা করতে হবে ২০৪০ সাল পর্যন্ত।