চলতি বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে দেশে ৪১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ৮০ হাজার মানুষ। আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা এতই বেশি যে তাদের চিকিৎসা দিতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতালগুলো।গত বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালে ডেঙ্গু কেড়ে নিয়েছিল ১ হাজার ৭০৫ জনের প্রাণ। যা এক বছরে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড। যেখানে ২০২২ সালে ২৮১ জন আর ২০১৯ সালে ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছিল ১৭৯ জনের। এতে বোঝা যাচ্ছে গত কয়েক বছরে ব্যাপক বিস্তারসহ ডেঙ্গু ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে।গবেষণা বলছে জলবায়ু পরিবর্তন এর অন্যতম কারণ। দেখা যাচ্ছে বর্ষাকালের বেশিরভাগ দিন শুষ্ক থাকছে। তবে যখন বৃষ্টি হচ্ছে তখন ব্যাপক ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। এতে করে জমে থাকা পানি দীর্ঘদিন অবস্থান করছে। যা ডেঙ্গুবাহী মশার বিস্তারে ভূমিকা রাখছে। ধারণা করা হচ্ছে, এ বিষয়টি এবারের ডেঙ্গু প্রকট আকার ধারণ করায় ভূমিকা রেখেছে।বাংলাদেশে বর্ষা ঋতুর পরিবর্তন এখন স্পষ্টভাবে পরিলক্ষিত হচ্ছে। আগে বর্ষাকাল থাকত জুন থেকে আগস্ট পর্যন্ত। কিন্তু এখন এটি পরিবর্তন হয়ে বর্ষাকাল জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত থাকছে।এমনকি এক দশক আগেও বর্ষা মৌসুমে হাল্কা বৃষ্টি, ভারী বৃষ্টি এবং নির্দিষ্ট ভারী বৃষ্টিপাত হতো। কিন্তু এখনকার বর্ষার মৌসুমে বৃষ্টির দিনের সংখ্যা কমে গেছে। কিন্তু যখন বৃষ্টি হচ্ছে— তা আগের যে অনেক গুণ বেশি হচ্ছে। আর কম সময়ের মধ্যে অতিরিক্ত বৃষ্টি হওয়ার অর্থ হলো পানি জমে যাচ্ছে।বাজে ড্রেনেজ সিস্টেম এই অবস্থা আরও খারাপ করেছে। বিশেষ করে শহুরে এলাকায় এটি খারাপ প্রভাব ফেলেছে।আগে শুধুমাত্র বর্ষার মৌসুমে বৃষ্টি হওয়ায় ডেঙ্গুর বিস্তার ওই নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকত। কিন্তু এখন যেহেতু বৃষ্টির দিনের সময় বেড়েছে তাই সারাবছরই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। এছাড়া এটি বিশ্বব্যাপী একটি মহামারিতে পরিণত হওয়ার শঙ্কাও বাড়ছে।ডেঙ্গু জ্বরের কোনো নির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। এ কারণে প্রতিরোধই এই রোগ থেকে বাঁচার সবচেয়ে বড় উৎকৃষ্ট উপায়।শুধু বাংলাদেশে নয় বিশ্বব্যাপী বেড়েছে ডেঙ্গু। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে যত মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হচ্ছেন তার ৭০ শতাংশই এশিয়ার। সংস্থাটি আরও জানিয়েছে বিশ্বের মোট জনসংখ্যার অর্ধেকই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে আছেন।
Leave a comment
সর্বশেষ
- Advertisement -