২০২২ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি— প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নির্দেশেরর পর সীমান্তের বিভিন্ন জায়গা থেকে ইউক্রেনে ঢুকে পড়ে রুশ সেনারা। তাদের লক্ষ্য ছিল তিনদিনের মধ্যে রাজধানী কিয়েভের নিয়ন্ত্রণ নেওয়া। তবে এতে সফল হয়নি তারা। এরপর এই যুদ্ধ দীর্ঘ হওয়া শুরু করে। যা দীর্ঘ হতে হতে তিন বছরে পা দিতে যাচ্ছে। এমন সময়ই রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ বন্ধের উদ্যোগ নিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি হুমকি দিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে আর সহায়তা করবে না।
তবে যদি ইউক্রেন তাদের সহায়তা চায় তাহলে যুক্তরাষ্ট্রকে তাদের প্রাকৃতিক সম্পদের ৫০ শতাংশের মালিকানা দিতে হবে। দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এমন চুক্তি করতে রাজি আছেন। তবে তিনি এর বদলে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে শক্তিশালী নিরাপত্তার নিশ্চয়তা চায়।
ইউক্রেনের প্রাকৃতিক সম্পদ কতটা রয়েছে? ইউক্রেনের প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিক সম্পদ রয়েছে। যেগুলো অস্ত্র, বৈদ্যুতিক গাড়িসহ বিভিন্ন পণ্য উৎপাদনের গুরুত্বপূর্ণ অনুসঙ্গ। এসব সম্পদ বিশ্বের সব জায়গায় পাওয়া যায় না এবং এগুলো আহরণ করাও সহজ নয়। তাই এই সম্পদগুলো বেশ মূল্যবান। ইউক্রেনে যেসব প্রাকৃতিক সম্পদ রয়েছে, সেগুলো চীনেও রয়েছে। তাই যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমারা চীনকে টেক্কা দিতে ইউক্রেনের সম্পদের দিকে নজর দিয়েছে।
প্রাকৃতিক সম্পদের ক্ষেত্রে দুটি বিষয় উল্লেখ করতে হয়। একটি হলো বিরল সম্পদ এবং গুরত্বপূর্ণ সম্পদ। বিশ্বে ১৭ ধরনের বিরল প্রাকৃতিক সম্পদ রয়েছে। আর ইউক্রেনের কাছে যে সম্পদ আছে সেগুলো যুক্তরাষ্ট্রের কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ তাদের এ সম্পদের অপ্রতুলতা রয়েছে। ইউক্রেনের কাছে সবচেয়ে বেশি আছে— গ্রাফাইট, লিথিয়াম, টিটানিয়াম, বেরিলিয়াম এবং ইউরেনিয়াম।
যুক্তরাষ্ট্র কী প্রস্তাব দিয়েছে?
যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে প্রাকৃতিক সম্পদ পেতে কী প্রস্তাব দিয়েছে সেটির বিস্তারিত এখনো জানা যায়নি। তবে ইউক্রেন এ প্রস্তাবটিকে তাদের ভবিষ্যত নিরাপত্তার অংশ হিসেবে দেখছে। অপরদিকে ট্রাম্প বলছেন, ইউক্রেনকে গত তিন বছর তারা যত সহায়তা দিয়েছেন সেগুলোর বদলে এখন ৫০০ বিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ সম্পদ দিতে হবে।
ট্রাম্প কী সহজে ৫০০ বিলিয়ন ডলারের প্রাকৃতিক সম্পদ পাবেন?
এ বিষয়টি সহজ হবে না। কারণ ইউক্রেনের সংবিধানে রয়েছে এসব সম্পদের মালিক ইউক্রেনীয় জনগণ। আরেকটি সমস্যা হলো— ইউক্রেনের প্রাকৃতিক সম্পদের পরিমাণ ঠিক কতটা, সেটি এখনো পুরোপুরি জানা যায়নি। এরমধ্যে নতুন সমস্যা যোগ হয়েছে— ইউক্রেনের বড় একটি অংশ রুশ সেনারা দখল করে রেখেছে। ফলে এসব অঞ্চলের সম্পদ কীভাবে আহরণ করা হবে সেটিও প্রশ্ন।
এদিকে জেলেনস্কি এই প্রাকৃতিক সম্পদের চুক্তি করতে গড়িমসি করছেন। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে তাদের কাছে ৫০০ বিলিয়ন ডলার পাবে। এছাড়া এই চুক্তির বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে তিনি শক্তিশালী নিরাপত্তা গ্যারান্টি চান।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস