ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানে গ্রাহকদের আমানত রক্ষায় আসছে নতুন আইন। ‘ব্যাংক আমানত বীমা (সংশোধন) আইন, ২০২২’ এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। খসড়া আইন অনুযায়ী, লিজিং কোম্পানি বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে মূলধনের একটি অংশ বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা রাখতে হবে।
রোববার (২০ ফেব্রুয়ারি) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল মন্ত্রিসভা বৈঠকে খসড়া আইন অনুমোদন দেওয়া হয়। গণভবন প্রান্ত থেকে প্রধানমন্ত্রী এবং সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠকে যোগ দেন।
বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ব্যাংকে যে টাকা-পয়সা রাখা হতো সেটির একটি সেফটি-সিকিউরিটি ছিল। কিন্তু বিভিন্ন লিজিং কোম্পানি বা ফিন্যান্সিয়াল প্রতিষ্ঠানে যারা ডিপোজিট করতেন তাদের কোনো সিকিউরিটি ছিল না। সেজন্য ‘ব্যাংক আমানত বিমা আইন’ পরিবর্তন করে ‘ব্যাংক আমানত সুরক্ষা আইন’ করা হচ্ছে। ব্যাংক ছাড়াও যত আর্থিক প্রতিষ্ঠান আছে তারা সবাই এই আইনের আওতায় আসবে। ডিপোজিট নিতে হলে ব্যাংকের মতো তাদেরও বাংলাদেশ ব্যাংকে সেফটি হিসেবে টাকা জমা রাখতে হবে।
তিনি বলেন, আগে আইন ছিল ব্যাংক খোলার সময় বাংলাদেশ ব্যাংকে সেফটি হিসেবে ডিপোজিট থাকবে। কিন্তু লিজিং কোম্পানিগুলোর এ ডিপোজিট ছিল না। ‘যুবক’ টাইপের যেসব কোম্পানি আছে, যারা টাকা-পয়সা লেনদেন করতো- তাদের কোনো সেফটি-সিকিউরিটি ছিল না। এই আইন সংশোধন করা হচ্ছে। যারা যে নামেই ফিন্যান্সিয়াল ট্রানজেকশন করবে তাকে অবশ্যই বাংলাদেশ ব্যাংকে নিবন্ধিত হতে হবে। একইসঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির টোটাল পেইড আপ ক্যাপিটাল (পরিশোধিত মূলধন) যেটা থাকবে সেই মূলধনের একটি অংশ বাংলাদেশ ব্যাংকে ডিপোজিট (জমা) থাকবে।
খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, লিজিং কোম্পানি উঠে গেলে গ্রাহকরা সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা পর্যন্ত ওই ডিপোজিট থেকে পাবেন। ব্যাংক ছাড়া অন্য প্রতিষ্ঠানে ডেপোজিট করতে সবাই সাবধানে থাকবেন। আপনারা যে ডিপোজিট করবেন কোনো কারণে সেটা ই-হয়ে (টাকা আটকে বা প্রতিষ্ঠান দেউলিয়া হয়ে) গেলে সরকার আপনার জন্য দুই লাখ টাকার দায়িত্ব নিচ্ছে। বাকিটা ওদের কাছ থেকে রিকভার করা গেলে দেওয়া যাবে।
তবে কত টাকা বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা রাখতে হবে তা বাংলাদেশ ব্যাংক নির্ধারণ করে দেবে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।