গত মার্চে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হন বর্ষীয়ান নির্মাতা ও অভিনেতা কাজী হায়াৎ। ১৩ দিন হাসপাতালে কঠিন সময় পার করার পর করোনা নেগেটিভ হয়ে বাসায় ফেরেন তিনি।
একমাস আগে হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরলেও এখনো পুরোপুরি সুস্থ নন কাজী হায়াৎ। শ্বাসকষ্ট ও দুর্বলতা রয়েছে ‘আম্মাজান’খ্যাত এই নির্মাতার।
মঙ্গলবার (২৭ এপ্রিল) কাজী হায়াৎ বলেন, ‘শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে একটু ভালো। সম্প্রতি বেশকিছু রক্তের পরীক্ষা করেছি, সবকিছু স্বাভাবিক রয়েছে। কয়েকদিনের মধ্যে চেকআপের জন্য হার্টের চিকিৎসকের কাছে যাবো। ’
করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর ভিন্নরকম এক উপলব্ধি হয়েছে বলে জানান এই প্রবীণ নির্মাতা। তার ভাষ্যে, ‘মৃত্যুটাকে খুব কাছ থেকে দেখেছি। জীবন সম্পর্কে নতুন অভিজ্ঞতা হয়েছে আমার। জীবনটা একদিন শেষ হয়ে যাবে। এখন আর কোনো কিছুই ভালো লাগে না। টাকা, পয়সা, সুনাম, খ্যাতি-এসব দিয়ে কী হবে! আমাদের একটা লিমিটেড আয়ু দিয়ে আল্লাহ পাঠিয়েছেন। একদিন মানুষকে চলে যেতে হবে। এই তো জীবন, যেতেই হবে। ফেরার কোনো পথ নেই। ’
আর সিনেমা নির্মাণ কিংবা অভিনয় করবেন না বলে জানান কাজী হায়াৎ। সব কাজ থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে ‘ইতিহাস’খ্যাত এই নির্মাতা বলেন, ‘এই বয়সে আর কী কাজ! অনেক কাজ করেছি। এখন আর কিছুদিন বেঁচে থাকা, এইতো। ৭৫ বয়স হয়ে গেছে, আর কী কত করবো? জীবনের শেষার্ধে এসে আমি এখন ক্লান্ত, পরিশ্রান্ত; একেবারে পাহাড়ের চূড়ায় এসে দাঁড়িয়েছি। এখান থেকে ঝাঁপ দিলেও চলে যাবো অতল গহ্বরে। ’
১৯৭৪ সালে পরিচালক মমতাজ আলীর সঙ্গে সহকারী পরিচালক হিসেবে চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু করেন কাজী হায়াৎ। পরে আলমগীর কবিরের সঙ্গে ‘সীমানা পেরিয়ে’ সিনেমাতেও সহকারী পরিচালক হিসেবে ক্যামেরার পেছনে কাজ করেছেন তিনি।
১৯৭৯ সালে ‘দ্য ফাদার’ সিনেমার মধ্য দিয়ে পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশের পর দীর্ঘ ক্যারিয়ারে দাঙ্গা, ত্রাস, চাঁদাবাজ, আম্মাজান, ইতিহাস, কাবুলিওয়ালাসহ অসংখ্য ব্যবসাসফল সিনেমা উপহার দিয়েছেন তিনি।
তার পরিচালিত শেষ মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি ‘বীর’। শাকিব খান অভিনীত ‘বীর’ তার পরিচালিত পঞ্চাশ তম সিনেমা।