ইউরোপে করোনা মহামারির চতুর্থ ঢেউ এসে পড়েছে বলে সতর্ক করল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এতে কোভিডের নতুন কেন্দ্রে পরিণত হতে পারে ইউরোপ এমন সতর্কতা জানিয়েছে সংস্থাটি। আশঙ্কা করা হচ্ছে এ ঢেউয়ে ফেব্রুয়ারির মধ্যে প্রায় ৫০ হাজার প্রাণহানি ঘটবে।
এদিকে, করোনা ভাইরাসের নতুন জিনে দক্ষিণ এশিয়ার মানুষের মৃত্যু হার দ্বিগুণ বলে জানিয়েছে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা।
বিশ্বে করোনায় একদিনে মারা গেছে ৭ হাজার ৩৭৮ জন। নতুন শনাক্ত ছাড়াল ৫ লাখ। এ নিয়ে করোনায় মোট প্রাণহানি ৫০ লাখ ৪৪ হাজার ছাড়িয়েছে। শনাক্ত ছাড়িয়েছে ২৪ কোটি ৯৩ লাখ।
এদিকে, বিশ্বে গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ প্রাণহানি হয়েছে রাশিয়ায় ১ হাজার ১৯৫ জনের। শনাক্ত হয়েছে ৪০ হাজার। যুক্তরাষ্ট্রেও হাজার ছাড়িয়েছে মৃতের সংখ্যা, আক্রান্ত ৮১ হাজার।
এদিকে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা নাকের মধ্য দিয়ে নেয়ার ট্রায়াল শুরু করেছে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়।
ইউরোপের বিভিন্ন দেশে লাফিয়ে বাড়ছে কোভিড সংক্রমণের সংখ্যা। ইউরোপ ফের কোভিডের এপিসেন্টার বা কেন্দ্র হতে পারে বলে সতর্ক করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডাব্লিউএইচও) ইউরোপের প্রধান হ্যানস ক্লুগে। বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের সাথে বৈঠক করে এ কথা জানিয়েছেন তিনি।
তার বক্তব্য, ইউরোপের দেশগুলি কোভিডের সঙ্গে লড়াই করার জন্য মাঝে অনেকগুলি দিন সময় পেয়েছিল। কিন্তু তারা সেই সুযোগ নষ্ট করেছে। যেভাবে টিকাকরণ করা উচিত ছিল, তা তারা করতে পারেনি।
ডেটা বলছে, এখনো পর্যন্ত স্পেনে সবচেয়ে বেশি টিকাকরণ করা হয়েছে। ৮০ শতাংশ মানুষ দুইটি টিকার ডোজ পেয়ে গেছে। কিন্তু জার্মানি এবং ফ্রান্সে সংখ্যাটি অনেক কম।
জার্মানিতে দুইটি ডোজ পেয়েছেন ৬৬ শতাংশ মানুষ। ফ্রান্সে ৬৮ শতাংশ মানুষ।
ডাব্লিউএইচওর মতে, গত কয়েকমাসে টিকা দেয়ার গতি মন্থর হওয়াতেই নতুন করে করোনার ঢেউ আছড়ে পড়েছে ইউরোপে।
রাশিয়ায় টিকাদানের পরিস্থিতিও উদ্বেগজনক। মাত্র ৩২ শতাংশ মানুষ সেখানে দুইটি টিকা পেয়েছেন।
ডাব্লিউএইচওর জানায়, একদিকে টিকাকরণের গতি মন্থর, অন্যদিকে দেশগুলি জীবনযাপন কার্যত স্বাভাবিক করে দিয়েছে। দুইয়ের ফল চতুর্থ ঢেউ।
মোট ৫৩টি দেশ নিয়ে ডাব্লিউএইচওর ইউরোপীয় জোন। এর মধ্যে কয়েকটি মধ্য এশিয়ার দেশও আছে। সেখানেও পরিস্থিতি ভয়াবহ বলে জানানো হয়েছে।
ডাব্লিউএইচওর আশঙ্কা করছে পরিস্থিতি এভাবে চলতে থাকলে ফেব্রুয়ারির মধ্যে ৫০ হাজার মানুষের মৃত্যু হতে পারে।
জার্মানিতে গত কয়েকদিনে কোভিড সংক্রমণ চোখে পড়ার মতো বেড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৪ হাজার মানুষ। যুক্তরাজ্যে সংখ্যাটি ৩৭ হাজার।
গত কিছুদিনে রাশিয়ায় আট হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ইউক্রেনে মারা গেছেন প্রায় দেড় হাজার মানুষ। ইউক্রেনে গত ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমিত হয়েছেন ২৭ হাজার ৩৭৭ জন।
ডাব্লিউএইচও জানিয়েছে, গোটা ইউরোপেই সংক্রমণের সংখ্যা ঊর্ধ্বমুখী। গত কয়েক সপ্তাহে সব মিলিয়ে ৫৫ শতাংশ সংক্রমণ বেড়েছে।
এই পরিস্থিতিতে ফের লকডাউন হতে পারে বলেও মনে করছেন কোনো কোনো বিশেষজ্ঞ। ডাব্লিউএইচও অবশ্য টিকাকরণে আরো গতি বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছে।