আত্মহনন বর্তমান সমাজে একটি ভয়ংকর ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। ইসলাম এমন সব অন্যায় থেকে বেঁচে থাকার নির্দেশ দেয়।
পবিত্র সুরা নূরে আল্লাহ মুমিনদের পবিত্র জীবন অর্জনের বিশেষ কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন। যার কয়েকটি হলো—
১. অশ্লীলতা রোধ : ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা মুমিনদের মধ্যে অশ্লীলতার প্রসার কামনা করে তাদের জন্য আছে দুনিয়া ও আখিরাতের মর্মন্তুদ শাস্তি এবং আল্লাহ জানেন, তোমরা জানো না। ’ (সুরা : নুর, আয়াত : ১৯)
২. পারিবারিক গোপনীয়তা রক্ষা : ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনরা! তোমরা নিজেদের ঘরে ছাড়া অন্য কারো ঘরে ঘরবাসীদের অনুমতি না নিয়ে এবং তাদের সালাম না দিয়ে প্রবেশ কোরো না। এটাই তোমাদের জন্য শ্রেয়, যাতে তোমরা উপদেশ গ্রহণ করো। ’ (সুরা : নূর, আয়াত : ২৭)
৩. ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষা : ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনরা! তোমাদের মালিকানাধীন দাস-দাসীরা এবং তোমাদের মধ্যে যারা সাবালক হয়নি তারা যেন তোমাদের ঘরে প্রবেশ করতে তিন সময় অনুমতি গ্রহণ করে : ফজরের নামাজের আগে, দুপুরে যখন তোমরা তোমাদের পোশাক খুলে রাখো, এশার নামাজের পর; এই তিন সময় তোমাদের গোপনীয়তার সময়। ’ (সুরা : নূর, আয়াত : ৫৮)
৪. অন্তরের পবিত্রতা রক্ষা : ইরশাদ হয়েছে, ‘মুমিনদের বলো, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত করে এবং তাদের লজ্জাস্থান হেফাজত করে। এটাই তাদের জন্য উত্তম। তারা যা করে নিশ্চয়ই আল্লাহ সে বিষয়ে সম্যক অবহিত। ’ (সুরা : নূর, আয়াত : ৩০)
৫. ব্যভিচারের প্রলোভন রোধ : ইরশাদ হয়েছে, ‘আর মুমিন নারীদের বলো, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত করে ও তাদের লজ্জাস্থান সংরক্ষণ করে; তারা যেন যা সাধারণত প্রকাশ থাকে তা ছাড়া তাদের আভরণ প্রদর্শন না করে, তাদের গ্রীবা ও বক্ষদেশ যেন মাথার কাপড় দ্বারা আবৃত করে। ’ (সুরা : নূর, আয়াত : ৩১)
৬. চারিত্রিক দুর্বলতা রোধ : ইরশাদ হয়েছে, ‘তারা যেন তাদের গোপন আভরণ প্রকাশের উদ্দেশ্যে সজোরে পদক্ষেপ না করে। হে মুমিনরা! তোমরা সবাই আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তন করো, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পারো। ’ (সুরা : নূর, আয়াত : ৩১)
এখানে এমন উপাদানের কথা বলা হয়েছে, যার মাধ্যমে মানুষ ব্যভিচারসহ অন্যান্য যৌনাপরাধ থেকে আত্মরক্ষা করতে পারে। তা হলো নারী তার এমন শোভা ও সৌন্দর্য আড়াল করবে, যা দ্বারা পুরুষ প্রলুব্ধ হয়, অপরাধপ্রবণ হয়ে ওঠে।
৭. পবিত্র জীবনের সুযোগ লাভ : ইরশাদ হয়েছে, “তোমাদের মধ্যে যারা ‘আয়্যিম’ (সঙ্গীহীন নারী-পুরুষ) তাদের বিয়ে সম্পাদন করো এবং তোমাদের দাস-দাসীদের মধ্যে যারা সৎ তাদেরও। তারা অভাবগ্রস্ত হলে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদের অভাবমুক্ত করে দেবেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ। ” (সুরা : নূর, আয়াত : ৩২)
আল্লাহ হারাম অবলম্বন পরিহার করার নির্দেশ প্রদানের পাশাপাশি হালাল অবলম্বন গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। কেননা মানবপ্রকৃতি হলো যখন বৈধ রাস্তা বন্ধ হয়ে যায় তখন সে অবৈধ পথে অগ্রসর হয়। সুতরাং আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের উচিত একই সঙ্গে অবৈধ পন্থা রোধ করা এবং বৈধ পন্থা উন্মুক্ত করে দেওয়া।
পি এস / এন আই