মাত্র ৫৫ বছর বয়সে মারা গেছেন ইংল্যান্ডের সাবেক ক্রিকেটার গ্রাহাম থর্প। ৫ আগস্ট তার মৃত্যুর খবর পাওয়া গেলেও কী কারণে তার মৃত্যু হয়েছে, তা তখন জানা যায়নি। এত দিনে জানা গেছে, স্বাভাবিক মৃত্যু হয়নি থর্পের। আত্মহত্যা করেছেন তিনি। এই কথা জানিয়েছেন থর্পের স্ত্রী আমান্ডা। স্ত্রী ছাড়াও কিট্টি ও এমা নামের দুই কন্যা রয়েছে থর্পের।
দ্য টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আমান্ডা বলেন, ‘থর্প আমাদের খুব ভালোবাসতো। আমরাও তাকে খুব ভালোবাসতাম। তারপরেও মানসিক অবসাদে ধীরে ধীরে শেষ হয়ে যাচ্ছিল ও। থর্পের মনে হতো, ও না থাকলে আমাদের জীবন আরও ভালো হবে। সেটা ভেবে ও নিজেই নিজেকে শেষ করে দিল।’
আমান্ডা বলেছেন যে তার স্বামী দীর্ঘদিন ধরে হতাশা এবং উদ্বেগের সঙ্গে লড়াই করছিলেন। তিনি আরও বলেন, দুই বছর আগেও থর্প নাকি আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন। আমান্ডা বলেন, আমরা গভীরভাবে দুঃখিত যে তিনি এই কাজ করেছেন এবং নিজের জীবন নিয়েছেন। গ্রাহাম গত কয়েক বছর ধরে তীব্র বিষণ্ণতা ও উদ্বেগে ভুগছিলেন। এই কারণে তিনি ২০২২ সালের মে মাসে আত্মহত্যার গুরুতর চেষ্টা করেছিলেন। এরপর তাকে দীর্ঘদিন আইসিইউতে থাকতে হয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, একসময় থর্পের হতাশা তীব্র হয়ে উঠেছিল। আমরা পরিবার হিসেবে তাকে সমর্থন দিয়েছিলাম। তার অনেক চিকিৎসা হয়েছিল কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত সেগুলোর কোনোটা কাজ করেনি। মাঠে সে মানসিকভাবে অনেক শক্তিশালী হিসেবে সুপরিচিত ছিল এবং তার শারীরিক অবস্থাও ভালো ছিল। কিন্তু মানসিক অসুস্থতা বড় অসুখ এবং যে কাউকে কাবু করতে পারে। কিন্তু একজন স্ত্রী ও দুই কন্যাকে পেয়েও, যাদেরকে সে ভালোবাসে এবং যারা তাকে ভালোবাসতো, সুস্থ হয়ে উঠতে পারেনি।’
১৯৯৩ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত ইংলিশদের হয়ে ১০০ টেস্ট খেলা থর্প ইংল্যান্ডের ব্যাটিং কোচ হিসেবে কাজ করেছেন। আফগানিস্তানের হেড কোচ হিসেবে নাম ঘোষণার পর পরই ২০২২ সালে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। থর্প খেলোয়াড়ি জীবনে ৬ হাজার ৭৪৪ রান করেছেন। যেখানে হাফসেঞ্চুরি আছে ১৬টি। ওয়ানডেও খেলেছেন ৮২টি। তাছাড়া সারের হয়ে ১৯৮৮ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত খেলেছেন। যেখানে তার সংগ্রহ ২০ হাজার।
২০১০ সালেই ইংল্যান্ডের শীর্ষ ব্যাটিং কোচ হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন থর্প। তার পর ক্রিসসিলভার উডের অধীনে সহকারী কোচের ভূমিকাও পালন করেছেন। ২০২২ সালের মার্চে আফগান দলের দায়িত্ব নেওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু দুর্ভাগ্য। তার আগেই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি।