পৃথিবীর খুব কাছ দিয়ে আজ শনিবার উড়ে যাবে ‘সিটি কিলার’ গ্রহাণু ২০২৩ডিজেড২। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন শুক্রবার (২৪ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
যেহেতু গ্রহাণুটির নামের পাশে কিলার বা খুনি শব্দটি রয়েছে, ফলে এটির নাম শুনল যে কেউ আতকে উঠতে পারেন। তবে ভয়ের কিছু নেই, পৃথিবীর কাছ দিয়ে গেলেও আমাদের গ্রহের কোনো ক্ষতি করবে না এটি।
২০২৩ডিজেড২ নামের গ্রহাণুটি শনিবার পৃথিবী ও চাঁদের কক্ষপথের মাঝামাঝি অবস্থানে থাকবে। তখন পৃথিবী থেকে গ্রহাণুটির দূরত্ব থাকবে ৩ লাখ ৮৪ হাজার ৪০০ কিলোমিটার। অপরদিকে চাঁদ থেকে এ গ্রহাণুটির দূরত্ব থাকবে ১ লাখ ৭০ হাজার কিলোমিটার।
গ্রহাণুটির আকার মাত্র ১৩১ থেকে ৩২৮ ফুট। বায়ুমণ্ডলে এ আকারের অসংখ্য গ্রহাণু থাকলেও, এটি নিয়ে আলাদাভাবে আলোচনা হচ্ছে।
কারণ হিসেবে জ্যোতির্বিদ্যা বিশেষজ্ঞ রিচার্ড মইসি সিএনএনকে বলেছেন, ‘এই গহাণুটির বিশেষত্ব হলো এটি অনেক বিরল। এই আকারের একটি বস্তু পৃথিবীর এত কাছ দিয়ে যাওয়ার বিষয়টি স্বাভাবিক ঘটনা নয়। প্রতি দশ বছরে একবার এমনটি হয়।’
পৃথিবীর কাছাকাছি চলে আসার পর এ গ্রহাণুটির ওপর আকার ও বৈশিষ্ট্য নিয়ে আরও গবেষণা করতে পারবেন বিজ্ঞানীরা।
সিটি কিলার নাম কেন দেওয়া হলো?
জ্যোতির্বিদ্যা বিশেষজ্ঞ রিচার্ড মইসি বলেছেন, এ গ্রহাণুটির নামের পাশে সিটি কিলার শব্দটি যুক্ত করা হয়েছে— পৃথিবীতে প্রভাব রাখা দু’টি গ্রহাণুর ওপর ভিত্তি করে।
১৯০৮ সালে তুংসা ইভেন্টের সময় একটি গ্রহাণু পৃথিবীতে একটি শকওয়েভ বা তরঙ্গ পাঠিয়েছিল। যার প্রভাবে সাইবেরিয়া বনের ২ হাজার কিলোমিটার অঞ্চল উজাড় হয়ে গিয়েছিল। এছাড়া প্রায় ৫০ হাজার বছর আগে একটি লোহার গ্রহাণু যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান অ্যারিজোনাতে ১ দশমিক ২ কিলোমিটার বিস্তৃত অঞ্চলজুড়ে ১৮০ কিলোমিটার গভীর খাদের সৃষ্টি করেছিল।
মইসি আরও বলেছেন, যখন মহাকাশের কোনো বস্তু পৃথিবীর কক্ষপথে প্রবেশ করে এবং ভূমিতে সজোরে আঘাত হানে, আর ঘটনাটি ঘটে কোনো জনমানবশূন্যস্থানে, তাহলে চিন্তার কোনো বিষয় নেই। কিন্তু যদি এটি কোনো শহরে আঘাত হানে তাহলে ওই শহরটি ধ্বংস হয়ে যাবে। যার প্রভাবে শহরটি থেকে মানুষকে সরিয়ে নিতে হবে। যেহেতু এ আকারের গ্রহাণুর আঘাতে কোনো শহর ধ্বংস হয়ে যেতে পারে— তাই এগুলোকে সিটি কিলার হিসেবে অভিহিত করা হয়।