সুষমা সরকার। মঞ্চ, টেলিভিশন ও সিনেমায় নিয়মিত অভিনয় করছেন তিনি। মঞ্চে দেশ নাটক প্রযোজিত ‘পারো’তে একক অভিনয় দিয়ে দর্শক মনোযোগ কেড়েছেন এই অভিনেত্রী। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মূল মিলনায়তনে আজ হবে এ নাটকের ১০ম মঞ্চায়ন। এই নাটক ও অন্যান্য প্রসঙ্গে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন এমদাদুল হক মিলটন।
দেখতে দেখতে মঞ্চে আপনার অভিনীত ‘পারো’ নাটকের নয়টি শো শেষ হয়ছে। আজ এর ১০ম মঞ্চায়ন। কেমন চাপ অনুভব করছেন?
মঞ্চ নাটকের ক্ষেত্রে সবসময়ই এক ধরনের চাপ থাকে। এটি যদি একক পারফরম্যান্স হয়, তাহলে চাপ দ্বিগুণ হয়ে যায়। প্রতি শোয়ের আগে একদিক থেকে আনন্দ হয়, অন্যদিকে খুব নার্ভাস লাগে। কেমন পারফর্ম করব? দর্শক কতটা গ্রহণ করবেন– এসব ভেবে। বড় মঞ্চে অভিনয়। রিহার্সেল সময় কম মিলেছে। সব মিলিয়ে অন্যবারের তুলনায় এবার চাপটা একটু বেশি।
একক অভিনয়ে কতটা চ্যালেঞ্জিং?
একক নাটকে খুব দ্রুত ক্যারেক্টার শিফট হয়। একই চেহারার একই মানুষ। একই কণ্ঠ। স্ক্রিপ্টের বাইরে, রিহার্সেলের বাইরেও করতে হয় অনেক কাজ। প্রথম দিকে কোথায় ভুল হয়ে যায় তা নিয়ে চিন্তা থাকত। এখন কীভাবে আরও ভালো করা যায়, তার চেষ্টা থাকে। অনেক গুণী শিল্পীরাই একক অভিনয় করেছেন। ওই জায়গা থেকে বলব, এটি চ্যালেঞ্জিং একটি কাজ।
এক ঘণ্টার নাটক, সাতটি চরিত্র। নিজেকে প্রস্তুত করেন কী করে?
প্রথমদিকে একটু বেশি প্রস্তুতির প্রয়োজন হতো। এখন কয়েক দিনের রিহার্সেলেই মঞ্চে উঠি। একক অভিনয়, সাত রকম চরিত্র, কীভাবে বিশ্বাসযোগ্য করে তুলতে হবে, তা নিয়ে আলাদা করে ভাবি। প্রথম দিকে সবকিছু আয়ত্ত করতে একটু সময় লেগেছে। চ্যালেঞ্জিং হলেও অভিনয়ে আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি ছিল না। কারণ, কাজটি কেমন হবে, কীভাবে উপস্থাপন করতে হবে, তার দিকনির্দেশনা পাচ্ছি নির্দেশক মাসুম রেজার কাছে। চরিত্রে কতটা ফুটিয়ে তুলতে পেরেছি, জানি না। তবে চেষ্টা করছি। আর আমি অনেক দিন ধরেই আমি চাইছিলাম সমসাময়িক বিষয় নিয়ে কাজ করতে। যে নাটকটি সমসাময়িক অভিনয়ের প্যাটার্ন। একদম জীবনের কাছাকাছি একটি কাজ। দেখলে যেন মনে হবে এটি আমারই গল্প। ‘পারো’ তে কাজ করে আমার ষোলোকলা পূর্ণ হয়েছে।
মঞ্চের এই সময়কে কীভাবে দেখছেন?
নানা টানাপোড়েনের মধ্য দিয়েই আমরা যাচ্ছি। এটি সবসময়ই ছিল। এই সময়ে এসে একটু বেশি এলোমেলো হয়েছে। মঞ্চ মাধ্যমটি এখন মুখ থুবড়ে পড়ে আছে। এই জায়গায় প্রশাসনের দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন। প্রশাসন যদি একটু নজর দিত তাহলে থিয়েটারের পেশাদারিত্বের জায়গাটা অনেক আগেই তৈরি হতো। মঞ্চ কর্মীর সংখ্যা বাড়ত।
শুধু কী অভিনয়ই করে যাবেন, নির্দেশনা নিয়ে কোনো ভাবনা আছে?
অভিনয় তো এখন আমার নেশা-পেশা, ধ্যান-জ্ঞান সবকিছু। তাই অভিনয়ের বাইরে আর কিছু করার কথা ভাবতেই পারি না। তবে মানুষের ভাবনার পরিবর্তন হয়। যদি হয়, তাহলে নির্দেশনাও দিতে পারি। তবে আপাতত নির্দেশনা নিয়ে ভাবছি না।